"যুক্তিবাদের চোখে নারীমুক্তি" বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা: যুক্তিবাদের চোখে নারী-মুক্তি’ বইটির নামকরণের মধ্যেই রয়েছে বিষয়বস্তুর নির্দেশ। গত কয়েক বছরে ‘নারী-মুক্তি’ ‘নারী-স্বাধীনতা’, ‘নারীবাদ’ ইত্যাদি শব্দগুলাে বেশি বেশি করে শােনা যাচ্ছে। বস্তুত এই সময়ে ‘নারী-মুক্তির প্রশ্নে প্রচারমাধ্যমগুলাের স্পষ্ট পৃষ্ঠপােষকতায় একটি জনপ্রিয় ধারার সৃষ্টি হয়েছে। এই ধারাকে মূলস্রোত করতে তৎপর বুদ্ধিজীবীরা পুরুষশাসনের বিরােধিতার নামে পুরুষের বিরুদ্ধে নারীর ঘৃণাকে সৃষ্টি ও তীব্র করতে তৎপর। স্পষ্টতই এইসব বুদ্ধিজীবীদের বক্তব্যে বা লেখায় কখনই পুরুষশাসনের মূলােচ্ছেদের দিশা দেখানাে হয়নি। পরিবর্তে মানুষকে ধর্ম-জাতপাত-ভাষা ইত্যাদির পরেও আরও একটি নতুন ভাগে ভাগ করা হয়েছে—‘নারী ও পুরুষ’। এমনই এক প্রয়ােজনীয় মুহূর্তে, মুক্তিকামী মানুষদের চিন্তাকে ঘুলিয়ে দেবার ঐকান্তিক চেষ্টার বিরুদ্ধের ভােরের সূর্য-হয়ে আবির্ভাব ঘটল যুক্তিবাদের চোখে নারী-মুক্তি’র বইটিতে নারী-মুক্তির প্রশ্নটি লেখক বিচার করেছেন । আর্থ-সামাজিক, সমাজ-সাংস্কৃতিক, নৃতাত্ত্বিক, রাজনৈতিক, মনস্তাত্ত্বিক ইত্যাদি বিভিন্ন দিক দিয়ে। যুক্তিবাদের উপর ভিত্তি করে লেখক নতুন এক নারীবাদ’, ‘মানবতাবাদী নারীবাদ’-এর স্পষ্ট রূপরেখা এঁকেছেন; যে ‘নারীবাদ’ সমাজ ও সমাজ-কাঠামাের পরিবর্তনের সঙ্গে তাল রেখে শিখতে শিখতে পাল্টায় ও পাল্টাতে পাল্টাতে শেখে। আর তাই ‘মানবতাবাদী নারীবাদ’ চিরকালের সর্বাধুনিক ‘নারীবাদ’।
প্রবীর ঘোষ ( Prabir Ghosh, জন্ম ১ মার্চ, ১৯৪৫) কলকাতাভিত্তিক ভারতীয় বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতির প্রধান এবং হিউম্যানিস্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি। একদা তিনি প্রচারমাধ্যমে ভারতীয় যুক্তিবাদী সমিতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে উল্লেখিত হতেন। তিনি বেশকিছু জ্যোতিষবিদ ও অলৌকিক শক্তি অধিকারী বলে দাবি কৃত ব্যক্তিদের প্রচারণার অসারতা প্রমাণ করেছেন। যার মধ্যকার কয়েকটি ঘটনা নিয়ে চ্যানেল ফোর 'Guru Busters' নামে একটি তথ্যচিত্র তৈরি করেছে। তিনি যুক্তিবাদ প্রসার সহায়ক ও অলৌকিকতা বিরোধী একাধিক গ্রন্থের লেখক। তার উল্লেখযোগ্য বইগুলোর মধ্যে আছে: অলৌকিক নয় লৌকিক( ৫ খন্ডে সমাপ্ত),জ্যোতিষীর কফিনে শেষ পেরেক,সংস্কৃতিঃ সংঘর্ষ ও বিনির্মাণ,আমি কেন ঈশ্বরে বিশ্বাস করি না,পিংকি ও অলৌকিক বাবা,অলৌকিক রহস্য জালে পিংকি,ধর্ম-সেবা-সম্মোহন,গোলটেবিলে সাফ জবাব ইত্যাদি।