বসার ঘরে মানিকের সামনেই জামাপ্যান্ট পরতে পরতে বুড়ো বলল—ডি টি টি ও মানে জানিস? একটু অবাক হয়ে মানিক বলল—ওটা একটা শব্দ? না অ্যাব্রিভিয়েশন ? –ন্যাচারালি অ্যাব্রিভিয়েশন। চারটে অক্ষর রয়েছে, চারটে আলাদা শব্দের জন্য। মাথা নেড়ে মানিক বলল—না, জানি না। আর জানার আগ্রহও নেই। এলাম তোর কাছে এক কাজে, সেটাকে তুই পাত্তা দিচ্ছিস না। –কে বলল পাত্তা দিচ্ছি না। বেল্ট আটকাতে আটকাতে বুড়ো বলল—তোরা সাংবাদিকরা বড্ড রেস্টলেস। সামান্য হাসল মানিক—কোন প্রোফেশনের লোকেরা তোর কাছে রেস্টলেস নয় বলত? —এই তো আমাকেই দ্যাখ না। আমি তোর মতন ছটফট করছি? –তুই? তোর আবার প্রোফেশন কোথায়? চলিস তো মর্জি মতো। তা নয়তো ডাক্তার মানুষ, সকাল থেকে কাজকর্ম মাথায় তুলে চললি কোনও ফোরেনসিক সেমিনার অ্যাটেন্ড করতে। ওটা তোর প্রোফেশন? —আহা, প্রোফেশন না হলেও ফোরেনসিক সায়ান্সটা আমার ইন্টারেস্ট-এর সাবজেক্ট। তা বলে আমার কি প্রোফেশন নেই? —নামে হয়তো আছে। কিন্তু সেটাকে তুই কতখানি নিয়ে চলিস আমার জানা আছে। —আসলে আমি মাল্টিপ্রোফেশনাল লোক, বুঝলি! অ্যানেসথেসিয়া থেকে শুরু করে তবলা বাজানো কিংবা সত্যানুসন্ধান কিংবা পদ্য লেখা কিংবা বনসাই চর্চা...যেটাই করি, আমি কিন্তু প্রোফেশনালিই করি। তোরা ভাবিস, বুড়োটা শালা বাউন্ডুলে, ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে—। —সেটা যে খানিকটা সত্যি, তা তো অস্বীকার করতে পারিস না । বুড়ো হেসে বলল—আমি আসলে তোদের থেকে অনেক বেশি স্বাধীন। তোদের কাছে স্বাধীন লোক মানেই হচ্ছে বাউন্ডুলে।...যাক, ডি টি টি ও মানে হচ্ছে—ড্রাগ ট্রিটমেন্ট অ্যান্ড টেস্টিং অর্ডার। গভর্নমেন্ট-এর ফোরেনসিক
Nabokumar Bosu (১০ ডিসেম্বর, ১৯৪৯) একজন বাঙালি সাহিত্যিক এবং ডাক্তার। তিনি বিখ্যাত সাহিত্যিক সমরেশ বসুর পুত্র। অভাবের মধ্যে তাঁর বাল্যকাল কাটে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি এমএস উত্তীর্ণ হওয়ার পর শল্যচিকিৎসক হিসাবে পেশা শুরু করেন। ১৯৯৩ সালে তিনি ইংল্যান্ডে প্রবাসী হন। ১৯৭৭ খ্রিষ্টাব্দে তাঁর লেখা ছোটগল্প দেশ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। তাঁর পিতা সমরেশ বসু এবং মাতা গৌরী বসুর জীবনের উপর ভিত্তি করে তাঁর 'চিরসখা' উপন্যাসটি দেশ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল।