অনেকদিন আগে একটা পুঁচকে ভূত ছিল। তার নাম আক্কুশ। পুঁচকে হলে কী হয়, ভূত তো! তাই তার ঠ্যাং দুটো যেমন লম্বা-লম্বা, তেমনি নড়া দুটো ল্যাকপ্যাকে। ডিগডিগে ঘাড়ের ওপর মুণ্ডুখানা এমন লটর-পটর করে দুলত যে, মনে হত, একটা ফুটো হাঁড়ি গড়াগড়ি খাচ্ছে! আক্কুশ থাকত একটা মাঠে। মাঠের মধ্যিখানে একটা দেবদারু গাছে। গাছের ডালে চুপটি করে বসে থাকত, আর গা-ছমছম রাত্তিরে যখন কোনো মানুষ সেই গাছের নীচ দিয়ে যেত, তখন তাকে দেখে আঙ্কুশ আনন্দে তুড়তুড়ি কাটত। নয়তো, ডালের ওপর থেকে হেঁট হয়ে ঝুলে তার পেটে অ্যায়সা কাতুকুতু দিয়ে দিত যে, সে 'বাপ রে, মা রে' বলে দে লম্বা! উঃ! তারপর আঙ্কুশের সে কী হাসি! সারা মাঠ কাঁপিয়ে হি-হি-হিঁ করে হেসে গাছের ওপর লাগিয়ে দিত ডিগবাজি! মাঠেই বেশ ছিল আক্কুশ। হয়তো মাঠেই থাকত। কিন্তু একবার হল কী, এমন হাড়-কাঁপানি শীত পড়ল যে, কার সাধ্যি মাঠে থাকে। শীত বলে শীত! তার ওপর ভূতের গায়ে শীত, মানে আরও সাংঘাতিক। ভূতের গায়ে তো চামড়াও নেই, মাংসও নেই। তাই শীতের কামড়ে হি-হি, হু-হু করতে করতে আক্কুশ যায় আর কী! শেষকালে গাছ থেকে লাফিয়ে, মাঠ ডিঙিয়ে পালা, পালা! কিন্তু পালাবে কোথায়? যতই হোক, ভূত বলে কথা। কে আর আদর করে ঘরে ঠাঁই দেবে? অবিশ্যি ভূতের একটা সুবিধে আছে, ইচ্ছে করলেই ফুস! মানে, দেখতে দেখতেই অদৃশ্য।