ফ্ল্যাপে লিখা কথা ১৯৩০-এর দশকের আমেরিকায় বেড়ে ওঠা তরুণ সিডনি শেলডন হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছিলেন জীবনসংগ্রাম কাকে বলে। ওই সময় লাখ লাখ মানুষ বেকার, শেলডনের পরিবার কাজের খোঁজে দিশেহারার মতো ঘুরে বেড়িয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন রাজ্য। যে কাজ পেয়েছেন তা-ই আঁড়ে ধরেছেন শেলডন। বাস-বয়, ক্লার্ক, সিনেমাহলের টিকেট-চেকার- হেন কাজ নেই যা তিনি করেননি। তবে সবসময়ই বড় কিছু একটা হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন তিনি।
সিডনি শেলডনের স্বপ্ন ছিল লেখক হবেন। ভাগ্যক্রমে হলিউডে আসার সুযোগ হয়ে যায় তাঁর। প্রখ্যাত চিত্র-প্রযোজক ডেভিড সেলজনিকের রিডার হিসেবে কাজ শুরু করেন এবং তাঁর স্বপ্নের বাস্তবায়ন ঘটতে থাকে ধীরে ধীরে।
শেলডন সারারাত জেগে সিনেমা এবং মঞ্চনাটকের জন্য কাহিনী লিখতেন। আস্তে আস্তে খ্যাতি অর্জন শুরু করেন তিনি এবং একসময় আবিষ্কার করেন হলিউডের সেরা তারকা এবং প্রয়োজকরা তাঁর দ্বারে হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন।
ওই সময় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলছিল। সিডনি শেলডন ইউএস আর্মি এয়ার কর্পসে পাইলট হিসেবে যোগ দেন। কিছুদিন পরে আবার ফিরে আসেন হলিউডে। আবার একটি নতুন অধ্যায় শুরু হয়ে যায় তাঁর জীবনে। শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্যকার হিসেবে অস্কার পুরস্কার জেতার পরেও হঠাৎ তাঁর জীবনে নেমে এসেছিল দুর্দশা, নতুন করে সইতে হয়েছে বেকারত্বের জ্বালা। কিন্তু এ মানুষটি কীভাবে সমস্ত বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করে একসময় হয়ে ওঠেন পৃথিবীসেরা থ্রিলার রাইটার, এ তারই রোমাঞ্চকর কাহিনী, গল্পের চেয়েও রোমাঞ্চকর এক আত্মজীবনী।
পাঠকনন্দিত অনুবাদক অনীশ দাস অপু ১৯৬৯ সালের ৫ ডিসেম্বর বরিশাল জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা প্রয়াত লক্ষ্মী কান্ত দাস। ১৯৯৫ সালে এই কৃতি লেখক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ থেকে সম্মানসহ স্নাতকোত্তর পাস করেন। ছাত্রাবস্থায়ই তিনি দেশের জনপ্রিয় ও শীর্ষস্থানীয় সাপ্তাহিক, পাক্ষিক ও মাসিক পত্রিকাগুলোতে অনুবাদক হিসেবে কাজ করতে শুরু করেন, এবং ফিচার, গল্প ও উপন্যাস অনুবাদ করতে থাকেন। অনীশ দাস অপু এর বইগুলো সাধারণত থ্রিলার ও হরর ধাঁচেরই হয়ে থাকে। তবে ক্লাসিক ও সায়েন্স ফিকশনেও অনুবাদেও পিছিয়ে নেই তিনি। অনীশ দাস অপু এর বই সমূহ এর মাঝে উল্লেখযোগ্য হলো থিংক অ্যান্ড গ্রো রিচ, আ স্ট্রেঞ্জার ইন দ্য মিরর (সিডনি শেলডন), দ্য স্কাই ইজ ফলিং (সিডনি শেলডন), সিলেক্টেড মিস্ট্রি স্টোরিজ (আলফ্রেড হিচকক), শ্যাডো অফ দ্য ওয়্যারউলফ (গাই এন স্মিথ), ইলেভেন মিনিটস (পাওলো কোয়েলহো), প্রেত, শাঁখিনী, কিংবদন্তীর প্রেত, আয়নাপিশাচ, পিশাচবাড়ি ইত্যাদি। এ পর্যন্ত তাঁর অনূদিত গ্রন্থের সংখ্যা প্রায় চার শতাধিক। অনীশ দাস অপু এর বই সমগ্র বাংলাদেশের থ্রিলার ও হরর পাঠকদের কাছে তুমুল জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। বাংলাদেশে পাশ্চাত্য ধারার হরর গল্প ও উপন্যাস লেখার ক্ষেত্রে তিনি যোগ করেছেন এক নতুন মাত্রা, পেয়েছেন তুমুল পাঠকপ্রিয়তা। নিজের মূল পেশা হিসেবে লেখালেখি বেছে নিলেও অনীশ দাস অপু যুক্ত আছেন সাংবাদিকতার সাথেও। ‘দৈনিক যুগান্তর’ পত্রিকার সিনিয়র সাব-এডিটর হিসেবে কাজ করেছেন এই কৃতি অনুবাদক ও লেখক।