ফ্ল্যাপে লিখা কথা বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধীর অবস্থান ও অস্তিত্ব বাস্তব সত্য। ক্ষমতার রাজনীতির দুর্বতলতার সুযোগ এবং ধর্মকে পুঁজি করে যুদ্ধাপরাধীরা আজও বাংলাদেশের রাজনীতিতে সক্রিয় রয়েছে। বৃহৎ রাজনৈতিক দলের পৃষ্টপোষকতায় তারা পবিত্র সংসদে বসছে। শুধু তাই নয়, শহীদের রক্তে ভেজা মাটিতে কেউ কেউ মন্ত্রী হয়ে লাল-সবুজ পতাকা উড়িয়ে চলেছে। তাদের অপরাধ যে-কোনো দৃষ্টিতে ক্ষমতার অযোগ্যও বটে। যুদ্ধাপরাধরিা প্রত্যক্ষভাবে উগ্র এবং জঙ্গি পন্থায় দেশের শান্তি ও প্রগতিকে বিঘ্নিত করতে প্রয়াস পাচ্ছে। উপরন্ত, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলাদেশকে একটি সন্ত্রাসী রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিপন্ন করছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবি ২০০৮ সালে সেক্টর কমান্ডারস্ ফোরামের আন্দোলনের ফলে জনপ্রিয় দাবিতে পরিণত হয়েছে। ২০০৮ এর সাধঅরণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে গঠিত মহাজোট এ দাবিকে তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে অন্তর্ভুক্ত করে।
বিগত জামায়াত-বিএনপি সরকারের নানাবিধ অপকর্মের সঙ্গে যুদ্ধপরাধীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় ও জঙ্গিদের পৃষ্ঠপোষকতা দেবার কারণে নির্বাচনে জোটের ভরাডুবি ঘটে। এ গোষ্ঠীটি জাতির জন্য একটি বিপদজনক।
নির্বাচনোত্তর সময়ে মহাজোট সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ দাবিকে জাতীয় দাবি হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করেন। সম্প্রতি দাবিটি জাতীয় সংসদে সর্বসম্মতভাবে অনুমোদিত হয়েছে। বিশেষ ট্রাইবুন্যাল গঠন করে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক আইনের মাধ্যমে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সম্পন্ন করা হোক; এটি আজ জাতির একান্ত প্রত্যাশা। এ বিষয়ে পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত লেখক-সাংবাদিক ও বুদ্ধিজীবীদের প্রবন্ধসমূহ থেকে বাছাই করে বর্তমান পুস্তকটি সংকলন করা হযেছে। পুস্তকটি একদিকে যেমন গবেষক, অ্যাকাডেমিকগণের কাজে লাগবে, তেমনি আশা করা যায়, এটি গণসচেতনতাবৃদ্ধিপূর্বক যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিকে যৌক্তিক ও প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে নিয়ে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের মহাকলঙ্কমোচনে ও সাম্প্রতিক জঙ্গি অপতৎপরতার অপঘাত থেকে দেশকে মুক্ত করতে সহায়ক হবে।
Title
বাংলাদেশের রাজনীতি : যুদ্ধাপরাধী জামায়াত এবং জঙ্গি প্রসঙ্গ -৪র্থ খণ্ড