জন্মাবধি এ আলেখ্য নির্মাণ করেছেন লেখক। অগ্নিযুগের উত্তরাধিকার, বিপ্লবদীক্ষা, ঐতিহ্যদর্শন, মুক্তিচেতনা, অর্থনীতি ও রাজনীতির প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার প্রতিফলন এ উপন্যাসের স্তরে স্তরে। অর্গলবদ্ধ সময়ে সভ্যতার গভীর সংক্রান্তির মুখোমুখি হচ্ছে বাঙালিসত্তা। বিকারগ্রস্ত উপনিবেশবাদ বারবার হানা দিয়েছে এ ভূখণ্ডে। বিদেশী বিজাতীয় উপনিবেশবাদী পতাকার নিচে জড়োসড়ো বাঙালি ক্রমশ জেগে উঠেছে। সেই জীবিত ভূগোল আর আততায়ী ইতিহাসের সালতামামি এ কাহিনী। স্বার্থলালিত সমাজব্যাঞ্জনায় শ্রেণী-শোষণের পরিমাপ ক্রমবর্ধমান। সমতায় খটকা। কন্দরে কলুষ। স্থানুস্থবির জগদ্দল রাষ্ট্রকাঠামো পাকিস্তানী জান্তার চোখরাঙানিতে আপন্ন। স্বদেশী আন্দোলনকারী পরিবারের ক্রমোজম বহন করা মেডিক্যাল ছাত্রী নীপা লাহিড়ী। সাথে পিতার অনিকেত জেদ আর মায়ের স্নিগ্ধ প্রজ্ঞা। সত্তরের দশকে তিনি তরুণ। দীক্ষা নিচ্ছেন বিপ্লবের। আর্থসামাজিক প্রেক্ষিতে রাজনীতির পাঠ নিচ্ছেন। যোগ দিচ্ছেন রাজনৈতিক মিটিঙে মিছিলে। রাত জেগে আঁকছেন শ্লোগান-ব্যানার, কাঁধে তুলে নিয়েছেন পোস্টার- ফেস্টুন। গুরুদায়িত্বে বুঝে নিচ্ছেন কা্যুভেজা স্বদেশকে। যুদ্ধের বিউগল বাজছে। একাত্তর। মুক্তিযুদ্ধের নয় মাস। ঢাকা মেডিক্যালে ইমার্জেন্সি আর ক্যাজুয়্যালিটির প্রশিক্ষণ শেষে ভারতে।