"মমতাজের খোয়াব" বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা: চমকে উঠলাে মমতাজ। “কেন? আপনি তাে খুব হ্যান্ডসাম! কনে না পাওয়ার কোনাে কারণ দেখছি না! কাউকে ভালােবেসেছিলেন? পাননি, তাই রাগ করে বিয়ে করেননি, তাই না?” মুচকি হাসে রায়হান। একটু দম নিয়ে আবার খুব সন্তর্পণে নিঃশ্বাস ফেলে সে। “হুম, ঠিক বলেছ। ভালােবেসেছিলাম। তাও প্রথম নজরেই প্রেম যাকে বলে। আরে! ভুল হয়ে গেল! প্রেম না। প্রেম তাে হয় দুজন মিলে। আমারটা ছিল প্রথম নজরেই ভালােবাসা। লাভ অ্যাট ফার্স্ট সাইট! বর সাজতে একবারই ভাল লাগে। বারবার সাজতে ইচ্ছে করে না। নিজেকে আর সঙ সাজাতে ইচ্ছে করেনি।” কথাটা শুনে বুদ্ধিমতী মমতাজ আড়ষ্ট হয়ে গেল। মাথা নিচু করে বসে রইল সে। রায়হান হঠাৎ চাপা কণ্ঠে অদ্ভুত স্বরে প্রশ্ন করে, “আমি যদি এতই হ্যান্ডসাম, তাহলে বিয়ে না করে পালিয়ে গেলে কেন? সুজন কি আমার চেয়ে দেখতে ভালাে? আমার চেয়ে কোয়ালিফাইড? বলাে, কোনদিক দিয়ে তােমার অযােগ্য ছিলাম? কোনাে ধরণের বাজে অভ্যাস নেই। কখনাে প্রেম করিনি। ইচ্ছেও করেনি। উজানতলীতে তােমাকে একনজর দেখেই প্রথমবারের মতাে হৃদয়ের মাঝে অজানা কম্পন টের পেলাম। প্রাণটা জানান দিলাে বসন্ত এসেছে। মনে মনে নিজের কাছে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ছিলাম, মন থেকে যাকে ভালাে লাগবে বিয়ে তাঁকেই করব, যেন উজাড় করে সমস্ত ভালােবাসা শুধু তাকেই দিতে পারি। তােমাকে দেখার পর থেকে নিজের বসন্ত বাগানটা একটু একটু করে ফুলে ফুলে সাজাতে শুরু করলাম। আর ...! সবকিছু তছনছ করে চলে গেলে তুমি!
জন্ম ৪ নভেম্বর, চট্টগ্রামে । পতেঙ্গায় সাগরের প্রাণোচ্ছলতায় বেড়ে ওঠা লেখিকার পিতৃভূমি সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার ভাদেশ্বর । পিতা মরহুম আজিজুর রহমান চৌধুরী ও মাতা মরহুমা রৌশন আরা চৌধুরী । তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী লাভ করেন । শৈশব থেকে সাহিত্যে প্রবল অনুরাগ । ছাত্রজীবনে আবৃত্তি, নাটক, উপস্থাপনায় ছিলেন সাবলীল । খেলার ছলে লিখতে লিখতে কখন যে সাহিত্যের মায়াজালে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে পড়েছেন তা বোধকরি নিজেও টের পাননি ! পাঠকের অফুরন্ত ভালোবাসা ও অনুপ্রেরণা তাঁর লেখার মূলশক্তি । সূক্ষ্ম জীবনদর্শন, পরিবেশ ও প্রকৃতি, আবেগের বিভিন্ন রূপ সহজেই তাঁর কলমের আঁচড়ে জীবন লাভ করে । এ কারণে লেখিকার গল্প, কবিতা, উপন্যাস খুব সহজে পাঠকহৃদয়ে স্থান করে নিতে সক্ষম হয় । দেশে-বিদেশে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় লেখা ছাপা হলে দায়বদ্ধতা এড়াতে নিজেকে সখের লেখিকা হিসেবে পরিচয় দিলেও প্রকাশিত গ্রন্থগুলো ব্যাপক পাঠকপ্রিয়তা অর্জন করায় বর্তমানে পাঠকের কাছে দায়বদ্ধ । ইচ্ছের বিরুদ্ধে কিছু লিখেননা । সুস্থ ধারার সাহিত্যে বিশ্বাসী লেখিকা হৃদয়ের গভীর থেকে লিখতে ভালোবাসেন । তাঁর প্রতিটি লেখা স্বকীয় বৈশিষ্ট্যে স্বতন্ত্র ।