"তুমি আছো তাই" বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা: ডাক্তারের কথা শুনে রাফিদ বলল, “বড় একটা সমস্যা হয়েছে আমার? হ্যাঁ মনে পড়েছে। ব্যাপারটা কাউকে না বলতেও অনুরােধ করেছিলাম আমি। তাই না?” “হা হা, এটাও তাে মনে আছে আপনার! ভুলে যাননি এটা।” হঠাৎ চোখ-মুখ কুঁচকে ফেলল রাফিদ । তারপর দু হাত দিয়ে নিজের মাথাটা চেপে ধরল, “ডক্টর, কী যেন অনুরােধ করেছিলাম আপনাকে!” রােহানের হাত থেকে নিজের হাতটা ছাড়িয়ে নিয়ে কবিরের ঘরের দিকে গেল উর্বি । কিন্তু দরজার নবে হাত দেওয়ার আগেই খুলে গেল দরজাটা। হাসি মুখে দাঁড়িয়ে আছে কবির। না, আপনারা যা ভাবছেন, তা না । ট্রাওজার আর একটা টি-শার্ট পড়ে আছে ও। উর্বি কী একটা বলতে যাচ্ছিল, তার আগেই চমকে উঠে পেছনে তাকাল । চিৎকার করতে করতে এদিকে আসছে রেজা। রাশীকের দিকে তাকিয়ে মিটিমিটি হেসে মিমি বলল, ‘পারব তাে আমরা?’ ছােট্ট করে নিঃশ্বাস ছেড়ে রাশীক বলল, “তাের কী মনে হয়?” ‘সবকিছু স্বপ্নের মতাে মনে হচ্ছে।” ‘এটা তাে স্বপ্নই, কেবল তার বাস্তবায়ন চাচ্ছি আমরা।’ কবিতা তার বান্ধবীকে নিয়ে ঘরে ঢুকল আমার, ‘ও হচ্ছে নিপূণ, আমার বান্ধবী। আপনার সঙ্গে কথা বলবে ও।’ নিপূণের দিকে তাকালাম আমি। কিছুটা রূঢ় গলায় ও বলল, ‘কবিতা আপনার কথা এতবার বলেছে, আমি তাে ভেবেছিলাম আপনি মহাপুরুষের মতাে কেউ একজন।’ ‘না, আমি মহাপুরুষদের মতাে কেউ নই, সাধারণের চেয়েও সাধারণ।’ ‘তাই যদি মনে হয় তাহলে এরকম ভড়ং ধরার মানে কী?’
বর্তমান সময়ের তরুণ বাংলাদেশী লেখকদের তালিকা তৈরি করতে গেলে অনায়েসেই প্রথম সারিতে জায়গা করে নেবেন কথাসাহিত্যিক সুমন্ত আসলাম। তাঁর জন্ম সিরাজগঞ্জ জেলায়, মা রওশনারা পারুল ও বাবা মরহুম সোহরাব আলী তালুকদার। স্ত্রী ফারজানা ঊর্মি আর মেয়ে সুমর্মীকে নিয়ে গড়ে উঠেছে এই লেখকের সংসার। সিরাজগঞ্জে বাড়ির পারিবারিক লাইব্রেরিতেই বই পড়ার হাতেখড়ি তার। সেই সূত্রে ছোটবেলা থেকেই বই পড়ার অভ্যাস গড়ে উঠলেও লেখালেখির শুরু ঢাকায় আসার পরে। ছোটগল্পের বই ‘স্বপ্নবেড়ি’ তাঁর প্রকাশিত প্রথম বই, যা প্রকাশনায় ছিল ‘সময় প্রকাশন’। লেখালেখির পাশাপাশি বর্তমানে তিনি কাজ করছেন সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের শিক্ষিত করে তুলতে, চাইল্ড ড্রিম সোসাইটি নামের একটি সংগঠনে। এছাড়াও জড়িয়ে আছেন সাংবাদিকতা পেশার সাথে। পাঠক জনপ্রিয়তার দিক থেকে বিবেচনা করতে গেলে সুমন্ত আসলামের সেরা বই হিসেবে নাম উঠে আসবে ‘হয়তো কেউ এসেছিল’, ‘জানি না কখন’ বা ‘কে তুমি’ অথবা ‘যদি কখনো’ এর মতো জনপ্রিয় সব বই এর নাম । এছাড়াও ‘নীল এই যে আমি!’, ‘আমি আছি কাছাকাছি’, ‘অ্যালিয়ান’, ‘জানালার ওপাশে’, ‘রোল নাম্বার শূন্য’, ‘বীভৎস’, ‘কেউ একজন আসবে বলে’, ‘জিনিয়াস জিনিয়ান’, ‘কোনো কোনো একলা রাত এমন’, ‘তবুও তোমায় আমি’, ‘অনুভব’, ‘মিস্টার ৪২০’, ‘স্পর্শের বাইরে’, ‘ভালো থেকো ভালোবেসে’, ‘ডাঁটি ভাঙা চশমা রাফিদ’, ‘অযান্ত্রিক’, ‘জ্যোৎস্না নিমন্ত্রণ’, ‘প্রিয়ব্রতর ব্যক্তিগত পাপ’, ‘জ্যোৎস্না বিলাস’, ‘মহাকিপ্পন’, ‘তপুর চালাকি’, ‘আশ্চর্য তুমিও!’, ‘হাফ সার্কেল’, ‘কঞ্জুস’, ‘মাঝরাতে সে যখন একা’, ‘আই এম গুড ডু’, ‘আই সে দ্য সান’, ‘তুমি ছুঁয়ে যাও বৃষ্টি তবু’সহ আরো অনেক বই রয়েছে লেখক সুমন্ত আসলাম এর বই সমগ্র এর তালিকায়। এছাড়াও সিরিজ আকারে লিখেছেন ‘বাউন্ডুলে’ ও ‘পাঁচ গোয়েন্দা’র মতো জনপ্রিয় কিছু বই। বর্তমানে তরুণ প্রজন্মের কাছে, এমনকি একুশে বই মেলাতেও সুমন্ত আসলাম এর বই সমূহ এর ব্যাপক চাহিদা লক্ষ্য করা যায়। ভাষাগত সারল্য ও সাবলীলতা তাঁর জনপ্রিয়তার অন্যতম বড় কারণ। মানুষকে কেন্দ্র করে তাকে আবর্তিত করে যা যা আছে তা-ই মূলত তার লেখার বিষয়বস্তু।