"রমনীদ্বয়" বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা: জীবন চলার পথে প্রতিনিয়ত দেখা দেয়, অভিজ্ঞতার তারতম্যের ভিত্তিতে বুদ্ধির তীক্ষ্মতা; অপরের মনােজগৎকে জয় করার সক্ষমতা কিংবা অক্ষমতা; সহজাতভাবে এক নারী আরেক নারীর প্রতি ঈর্ষাপরায়ণ কেন, সেই চিরায়ত সত্য; প্রেম-বিরহ, বিশ্বাস-অবিশ্বাস, লােভ-নির্লোভ, শ্রেণি বৈষম্যবােধসহ ইত্যাকার অসংখ্য দিককে উপলব্ধির রংয়ে রাঙিয়ে দেওয়াই রমণীদ্বয় উপন্যাসের মূল উপজীব্য বিষয়। আবার প্রেম, বিয়ে, সংসার জীবন ও কর্ম জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্র যে স্বতন্ত্র, তাও দিক-নির্দেশ করা হয়েছে এখানে। একইসাথে এ উপন্যাসে আছে উপমা ও উৎপ্রেক্ষার লক্ষ্যভেদী দিকটিও। এছাড়া এটি রম্যরসে ভরপুর। কাজেই এ গ্রন্থটি পাঠ শেষে পাঠককুলের মনে সুদীর্ঘকাল দাগ কাটবেই, এটা নিশ্চিতভাবে বলা যায়। উপন্যাসটির কেন্দ্রীয় দুটি চরিত্র- ইকবাল ও সালমা। দুজনেই দুই মেরুর হওয়া সত্ত্বেও উভয়েই প্রেম, বিয়ে ও সংসার জীবনে যারপরনাই সূখী হয়। কিন্তু সময়ের প্রয়ােজনে প্রতিটি মানুষ যেভাবে বিন্দু বিন্দু করে তার প্রকৃত সহজাত হিংস্র রূপ ধারণ করে, ঠিক তেমনিভাবে ইকবাল ও সালমার জীবনেও তা দেখা দেয়। আর এর পরিণতি হলাে, উভয়ের মধ্যে চিরতরে বিচ্ছিন্নতাবােধ। অতঃপর এ বিচ্ছিন্নতাবােধকে ব্ল্যাকমেইল করে স্বার্থ হাসিল করতে চায় ধুরন্ধর নারী কোহিনূর। কিন্তু বিধিবাম! ইকবালের কঠোর অবস্থানে তা ভেস্তে যায়। এখানেও আসে বিচ্ছিন্নতাবােধ। এভাবে উপন্যাসের কাহিনি এগােতে থাকে দুই নারীর হিংস্রতাকে অতিক্রম করে। অতঃপর ন্যায় ও সত্যের বিজয় নিশ্চিত করে ইকবাল নামের মূখ্য চরিত্রটি। এটাই হলাে প্রকৃতির প্রতিশােধ।
Saadat Al Mahmud- ভিন্নধারার কথাসাহিত্যিক। তিনি এক নভেম্বর ১৯৭৬ সালে টাঙ্গাইল জেলার গোপালপুরের ডুবাইল গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মু. আব্দুর রাজ্জাক প্রথমে স্কুল শিক্ষক পরবর্তীতে জেলা শিক্ষা অফিসার হয়ে অবসরে যান। মাতা গৃহিণী। ছয় ভাই-বোন এর মধ্যে তিনি দ্বিতীয়। তিনি এক কন্যা সন্তানের জনক। তার লেখা গল্প-উপন্যাস-শিশুতোষ পড়লে তাকে একজন লেখার জাদুকর বললে বেশি বলা হবে না। কথাসাহিত্যিকের পাশাপাশি তিনি নাট্যকার, প্রবন্ধকার ও সাংবাদিক। তিনি দৈনিক মুক্তকন্ঠ, নয়া দিগন্ত, ইনকিলাব, সমকাল, ঢাকা ট্রিবিউন, সকালের খবর, বর্তমান, প্রতিদিনের সংবাদ, বাংলাদেশের খবর ও দেশ রূপান্তর পত্রিকায় বিভিন্ন সম্মানজনক পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে তিনি বহুল প্রচারিত দৈনিক খোলা কাগজ ও পরিবর্তন ডটকমে মহাব্যবস্থাপক পদে দায়িত্ব পালন করছেন। ‘চিতার আগুনে’ উপন্যাসটি সাদত আল মাহমুদের প্রকাশিত প্রথম গ্রন্থ। তার একাধিক প্রকাশিত জনপ্রিয় উপন্যাসগুলোর মধ্যে ইতিহাস ভিত্তিক ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপন্যাস যথাক্রমে এক আনা মন ও রাজাকারকন্যা, প্রসব বেদনা, রমনীদ্বয় অন্যতম। তার প্রতিটি উপন্যাসের নামকরণ অদ্বিতীয় ও আকর্ষণীয়। তিনি শিশুদের জন্য লিখেছেন ভৌতিক গল্প ‘ভূত ধরার অভিযান’ ও শিশুতোষ ‘গগেনদার গল্পের ঝুড়ি’ বইটি।