দিল্লি শহর। এখন থেকে বেশ কয়েক বছর আগে এই শহরে কলেরা রোগ এত প্রকট আকার ধারণ করল যে ডাক্তারখানা থেকে রোজ রোজ ত্রিশ-চল্লিশ জন মানুষ মরতে লাগল। মৃত্যুর বাজার খুব গরম ছিল। এ শহর মৃত্যুপুরীতে রূপ নিল। যেদিকে যাও নির্জনতা, পেরেশানি। এরকম বিরান ছায়া পড়ল যে দিনের আলো থাকতেই মানুষ ভয় পায়, দোকানদারদের হাঁকডাক বন্ধ হয়ে যায়, সুদখোরের চিৎকার থাকে না, মেলামেশা, দেখা-সাক্ষাৎ, রোগীর সেবাযত্ন, যিয়ারত, আতিথেয়তা, সব রকমের প্রথা থেকে মানুষ নিজেদেরকে গুটিয়ে নিল। প্রত্যেকে নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত, বিপদে জর্জরিত, সংসার জীবনে হতাশ, বলতে গেলে মৃত্যুর চেয়ে জীবন বিষাদ, জীবনের চেয়ে মৃত্যু শ্রেয়। ঘরে ঘরে অসুস্থ মানুষ, কতক লোকে আবার তাদের বন্ধু প্রিয়জনের মৃত্যুর কথা স্মরণ করে কাঁদতে থাকে। এই সময়ে আকস্মিক মৃত্যু ছাড়া স্বাভাবিক কোনো মৃত্যু ছিল না, আল্লাহর ইচ্ছা ছাড়া কেউ বাঁচত না, অসুখে ধরলেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ত, অসিয়ত করার সুযোগ পেত না। এক মুহূর্তে অসুস্থতা, চিকিৎসা, মরে যাওয়ার অবস্থা এবং মৃত্যু ঘটতে পারে। একরকম জগৎজুড়ে মহামারি দেখা দিল যে ঘরে ঘরে ছড়িয়ে পড়ল, দুই মাস করে এই মহামারি শহরে লেগে থাকে,