আধুনিক ছোটগল্পের বয়স দুশো বছরের বেশি নয়। এর মধ্যে দেশি ও বৈশ্বিক সাহিত্যে নানা বৈচিত্র্য ও বর্ণের ছোটগল্প লেখা হয়েছে। তবুও ছোটগল্পের সম্ভাবনা ও উপযোগিতা এতটুকু কমেনি। বরং বেড়েছে বিশ্বের উন্মুক্ত সংযুক্তি ও শিক্ষিত জনগোষ্ঠী সৃষ্টির ভেতর দিয়ে। ফলে ছোটগল্পের সমৃদ্ধ এক পরম্পরার অংশ হয়ে মঈনুল হাসানের মতো নতুন কণ্ঠস্বরকে আমরা বের হয়ে আসতে দেখছি। এটি তাঁর দ্বিতীয় গল্পগ্রন্থ। তাঁর গল্প একইসঙ্গে হৃদয়নিঃসৃত ও মস্তিষ্কসৃজিত। নির্মাণের দিক দিয়ে তাঁর গল্পে যেমন কৌতূহলোদ্দীপক আরম্ভ আছে, তেমনি আছে চমকপ্রদ একটা অন্তর। গদ্যে তিনি আমাদের প্রাত্যহিক ব্যবহৃত শব্দগুলোকেই নতুন বিন্যাসে সুখপাঠ্য করে তুলেছেন। তাঁর গল্পের কাহিনিতে ঘটনা আছে বটে-- কখনো সেটা জাতিগত ইতিহাস থেকে ব্যক্তিক পরিণতি-- কিন্তু সেটা নিছক কাহিনিতে সীমাবদ্ধ থাকেনি। গল্পের ভেতরের অন্তর্বয়ান দিয়ে তিনি তুলে ধরেছেন সমাজ-মানুষের নানা কৌণিক পর্যবেক্ষণ। সরল কাঠামো, সাবলীল বর্ণনা, স্বভাবসিদ্ধ রসবোধ ইত্যাদির সহযোগে গল্পগুলো কেবল সিরিয়াস পাঠকের জন্য অবধারিত না থেকে সব ধরনের পাঠকের জন্য উন্মুক্ত হয়ে পড়েছে। মোজাফ্ফর হোসেন কথাসাহিত্যিক
মঈনুল হাসান ছড়াকার ও কথাসাহিত্যিক। জন্ম ৪ঠা আগস্ট (বাংলা ২০ শ্রাবণ), ঢাকায়। তবে পৈতৃক নিবাস ফেনী জেলায়। বাবা মরহুম মাে. আব্দুল আউয়াল এবং মা বেগম শামসুন নাহার। নব্বই দশকের শুরুর দিকে কৈশাের পেরােনাে সময়ে বিচ্ছিন্নভাবে লেখালেখির সূচনা। তারপর দীর্ঘ বিরতি। বর্তমানে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হিসেবে চাদপুরে কর্মরত। বাংলাদেশ শিশু একাডেমি থেকে প্রকাশিত মাসিক ‘শিশু’ পত্রিকাসহ বিভিন্ন সাহিত্য পত্রিকা ও ম্যাগাজিনে নিয়মিতভাবে ছড়া ও গল্প প্রকাশিত হয়েছে। প্রথম কাব্যগ্রন্থ: ফুলকুড়ানি মেয়ে (অমর একুশে বইমেলা ২০১৬-তে অনন্যা থেকে প্রকাশিত)।