বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা স্বাধীনতা-উত্তরকালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সত্যিকার বস্তুনিষ্ঠ বয়ান ধরে রাখবার চেষ্টা খুব বেশি হয়নি। সেই সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করবে মুক্তিযুদ্ধ ও ক্ষুদ্র নৃগােষ্ঠী বিষয়ক গবেষক সালেক খােকন-কৃত ১৯৭১ : রক্তমাখা যুদ্ধকথা’ গ্রন্থটি। অভিনব এই গ্রন্থে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী যুদ্ধাহত বীরের যুদ্ধস্মৃতি, জাতিরাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের জন্ম, শ্রেণিহীন সমাজ গঠনের প্রত্যয় ও অন্যান্য ভাবনাপুঞ্জ সুচারুভাবে বর্ণিত হয়েছে। রচনাগুলাে আকর্ষণীয়, সুখপাঠ্য কিন্তু বেদনাবহ। গ্রন্থভুক্ত মুক্তিযােদ্ধারা পৌরাণিক কোনাে চরিত্র নয়, বরং বাঙালি বীর। তাদের রক্ত, ঘাম, ত্যাগে সৃষ্ট বাংলাদেশ আজ বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। গ্রন্থটিতে কথপােকথন, সরল গদ্য ঢংয়ে লেখা রচনাগুলাে থেকে একজন সত্যসন্ধানী স্কলারের মননচর্চার পরিচয় পাওয়া যাবে। লেখকের ভাবনা নিরপেক্ষ, ভাষা প্রাঞ্জল এবং কৃত্রিম বৈদগ্ধ্যের বাতাবরণমুক্ত। ফিল্ডওয়ার্কধর্মী রচনাগুলােতে প্রজ্ঞার স্বাক্ষর সহজেই বহুস্থানে চোখে পড়বে। আর এজন্য বর্তমান ও ভবিষ্যৎ পাঠকের কাছে এটি মুক্তিযুদ্ধের আকরগ্রন্থ হিসেবে বিবেচিত হবে।
লেখক ও গবেষক। জন্ম ঢাকায়। পৈতৃক ভিটা বাড্ডা থানাধীন বড় বেরাইদে। কিন্তু শৈশব ও কৈশোর কেটেছে ঢাকার কাফরুলে। ব্যবস্থাপনায় স্নাতকোত্তর। ছোটবেলা থেকেই ঝোঁক সংস্কৃতির প্রতি। নানা সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে জড়িত। যুক্ত ছিলেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র ও থিয়েটারের সঙ্গেও। মুক্তিযুদ্ধ, আদিবাসী ও ভ্রমণবিষয়ক লেখায় আগ্রহ বেশি। তাঁর রচিত যুদ্ধদিনের গদ্য ও প্রামাণ্য গ্রন্থটি ২০১৫ সালে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক মৌলিক গবেষণাগ্রন্থ হিসেবে ‘তরুণ কবি ও লেখক কালি ও কলম’ পুরস্কার লাভ করে। নিয়মিত লিখছেন দেশের প্রথম সারির দৈনিক, সাপ্তাহিক, ব্লগ এবং অনলাইন পত্রিকায়। স্বপ্ন দেখেন মুক্তিযুদ্ধ, আদিবাসী এবং দেশের কৃষ্টি নিয়ে ভিন্ন ধরনের তথ্য ও গবেষণামূলক কাজ করার। সহধর্মিণী তানিয়া আক্তার মিমি এবং দুই মেয়ে পৃথা প্রণোদনা ও আদিবা।