ভূ। মি। কা আমাদের জীবনের জন্য সর্বোত্তম বিষয়গুলোর একটি হচ্ছে অন্য মানুষের ভুল, জ্ঞান এবং অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা লাভ করা। আমাদের প্রত্যেকেই জীবনের কিছু সমস্যার সাথে জজর্রিত। যেগুলো বাইরে, পরিবার কিংবা ব্যক্তিগত জীবনে প্রতিনিয়ত সংঘটিত হয়। কিছু সমস্যা অলঙ্ঘনীয় বলে মনে হয়। আবার কিছু সমস্যা আমাদের পক্ষে সামলানো অসম্ভব মনে হয়। জীবনের একটি “কঠিন সময়” বিবেচনা করে অনেক মানুষ জীবনের দৈনন্দিন সমস্যার কাছে পরাজিত হয়। বইটি সংকলন করা হয়েছে সর্বাধিক শ্রুত রেডিও অনুষ্ঠান ” সিকেরট্স ও জীবন গল্প” থেকে। এটা মানুষের সবচেয়ে দুঃখ-কষ্টের উপেক্ষিত গোপন অলিগলির বিভক্ত সংগ্রামের সাথে সম্পর্কিত উপাখ্যান, যা প্রকৃতপক্ষে বাস্তব সত্যের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত। মানুষের দ্বারা বড় ধরনের ভুল, সংঘটিত অপরাধমূলক কাজ ও তাদের জীবনে শাস্তি ভোগ থেকে একটি কার্যকর নৈতিক পাঠ শেখার মাধ্যমে, আপনার সক্ষমতা সম্পর্কে জানতে এবং আপনার জীবনকে সর্বোত্তমভাবে গড়ে তুলতে, সত্যিকার মানব জীবনের কয়েকটি হার্ড কোর এবং মৌলিক সত্য কাহিনী সম্বলিত এই বইটি ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্রতার মনোভাবকে দূর করার বিস্তৃত পরামর্শ উত্থাপিত করে। এটা বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত একটি সত্য যে, এই গ্রহের সমস্ত মানুষের পক্ষ থেকে কিছু ব্যক্তিগত সত্য ঘটনা সংবলিত বিশেষ করে মানুষের জীবনযাত্রার সাথে সম্পর্কিত প্রোগ্রামগুলো, সব বয়সের শ্রোতার হৃদয় জয় করেছে সবসময়ই। সিকরেট্স ও জীবন গল্প তেমনি এই সময়ে নৈতিকতা বা আইনি ভুল স্বীকারোক্তির সঙ্গে যুক্ত জনপ্রিয় একটি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ব্যতিক্রমী রেডিও অনুষ্ঠান। বাংলাদেশের ঢাকা এফএম ৯০.৪ দ্বারা সম্প্রচারিত দুইটি রেডিও শো হল ” সিকরেট্স” ও ”জীবন গল্প”। এই দুইটি সবচেয়ে জনপ্রিয় অনুষ্ঠান যথাযথভাবে নামকরণ। প্রোগ্রামটি সাধারণ মানুষকে তাদের মূল্যবান পাঠ্যগুলো শেখার মাধ্যমে জীবনের অন্ধকার কাহিনী শেয়ার করার জন্য, বিশেষ করে একটি অজ্ঞাতনামা প্লাটফর্মকে উন্মুক্ত করে দিচ্ছে। এই প্রোগ্রাম দুটি একটি স্বীকারোক্তিমূলক প্রোগ্রাম। কিন্তু এই প্রোগ্রাম থেকে প্রত্যাশিত প্রধান ফলাফল হল সামাজিক চেতনা। সত্যি সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি এই কর্মসূচির মূল লক্ষ্য। যেমনটা সত্যিই দৈনন্দিন জীবনে অপরাধ এবং অপরাধমূলক মনকে উপস্থাপন করে নিঃসন্দেহে ভালো একটা কাজ করে। জীবনের সমস্ত ক্ষেত্রের মানুষ প্রকাশ করে, কীভাবে তারা খারাপ কাজ করার অপরাধে দোষী হয়ে ওঠে এবং তাদের দোষের জন্য কি শাস্তি ভোগ করতে হয়েছিলো। “আমি আমার জীবনে যে অপরাধ ও ভুল সংঘটিত করেছি, আমি চাই যে, আপনি আপনার জীবনে এটির পুনরাবৃত্তি যেন না করেন”- সব ব্যথিত স্বীকারকারী যারা রেডিও শো’তে স্বীকার করতে আসেন-এই অনুষ্ঠানের শেষে এই লাইনটি উত্থাপন করেন। এই শো গুলোতে একজন ব্যক্তি তার ভুল ও অপরাধের কারণ এবং এর প্রভাব বর্ণনা করেন, এবং তা থেকে শ্রোতা মহল উপকৃত হন। গল্পকথক প্রোগ্রামের শেষে এটির সামাজিক প্রভাব খুঁজে বের করে তার কাছ থেকে শ্রোতার জন্য কিছু ভালো পরামর্শ দেন। এই প্রোগ্রামগুলোর প্রধান সৌন্দর্য হলো এগুলো শুধু আমাদের ভুল, অপরাধ এবং অপারাধীদের উপস্থাপন করে না বরং আমাদেরকে এও বলে দেয় যে, একজন সাধারণ মানুষ কীভাবে ভুল করে, কীভাবে অপরাধী হয়ে ওঠে এবং কী সেই উদ্দীপকগুলো; যা তাদেরকে এই অন্ধকার পথে ঢেলে দেয় এবং অবশেষে তারা কীভাবে এবং কখন বুঝতে পারে যে তারা ভুল পথে রয়েছে। অপরাধী স্টুডিওতে উপস্থিত থেকে স্বীকারোক্তি দেয়, তারা কীভাবে ভুল করেছে, তারা কীভাবে তাদের শিকারকে ফাঁদে ফেলে এবং কীভাবে তারা তাদের অবৈধ ক্রিয়াকলাপ নিষ্পত্তি করে। এমন একটি বৃহৎ পরিসরে শ্রোতারা আরও সচেতন হওয়ার সুযোগ পান। এই বইটি আপনাকে ভবিষ্যতের মুখোমুখি হওয়ার আশা ও বাস্তব কৌশল দেবে। এই বই আপনাকে দেখাবে কীভাবে চ্যালেঞ্জ হিসেবে সমস্যাগুলো চিনতে হয় এবং কীভাবে আপনার ভেতরের সমস্ত সম্পদগুলো সম্পূর্ণভাবে ব্যবহার করে পরিপূর্ণভাবে বাঁচতে হয়। এই বইটি জীবনের কিছু বাস্তব অভিজ্ঞতা ভাগ করার জন্য আমার প্রচেষ্টার ফসল। এটি যখন আমাকে সাহায্য করে, আপনাকেও সাহায্য করতে পারে বলে আমার বিশ্বাস।
রেডিও শ্রোতামহলে আর জে কিবরিয়া নামে ব্যাপক জনপ্রিয় রেডিও সঞ্চালক মো: গোলাম কিবরিয়া সরকার আত্মপ্রকাশ করেছেন লেখালেখির জগতেও। এগারো বছরের দীর্ঘ রেডিও ক্যারিয়ারে তিনি উপহার দিয়েছেন অনেক শ্রোতাপ্রিয় অনুষ্ঠান। সেই অনুষ্ঠানগুলোর নানারকম হৃদয়স্পর্শী, মুখরোচক গল্প আর অভিজ্ঞতার বর্ণনাই প্রকাশ পেয়েছে আর জে কিবরিয়া এর বই সমূহ-তে। আর জে কিবরিয়ার উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত শিক্ষাজীবন কেটেছে বগুড়া ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড স্কুল এবং বগুড়া ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগ থেকে ১ম শ্রেণী নিয়ে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই তিনি পরবর্তীতে এমফিল সম্পন্ন করেন। ২০০৬ সালে রেডিও টুডে-তে কথাবন্ধু হিসেবে যোগ দিয়ে শুরু করেন রেডিও ক্যারিয়ার। বর্তমানে এবিসি রেডিও এফএম ৮৯.২ এ ডেপুটি এক্সিকিউটিভ প্রডিউসার হিসেবে কর্মরত আছেন। তার নিজস্ব পরিকল্পনা এবং উপস্থাপনায় এবিসি রেডিওতে ‘হ্যালো ৮৯২০’, ‘যাহা বলিব সত্য বলিব’ এবং ‘ডর’ নামে একাধারে তিনটি অনুষ্ঠান প্রচারিত হচ্ছে বর্তমানে। এবিসি রেডিওতে কাজের পাশাপাশি মাছরাঙা টেলিভিশন ও ইউল্যাব-এও কাজ করছেন আর জে কিবরিয়া। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে কাজ করেছেন বিবিসি জানালা ও অনলাইন রেডিও লেমন টুয়েন্টি ফোর বাংলাদেশে। ই ভোটিং এর উপর একমাত্র বই ‘ই ভোটিং ও ডিজিটাল প্রসঙ্গের সহলেখক তিনি। অমর একুশে গ্ৰন্থ মেলা ২০১৬-তে প্রকাশিত হয় আর জে কিবরিয়া এর বই ‘জীবনের গল্প পার্ট-১’, যেখানে সম্পাদনার কাজটি করেছেন তিনিই। পাঠকমহলের ব্যাপক সাড়া পেয়ে এরপরের প্রতিটি বই মেলাতেই বের করতে হয়েছে বইটির সিরিজ। রেডিওতে ‘হ্যালো ৮৯২০’ অনুষ্ঠানটির শ্রোতাপ্রিয় গল্পগুলো নিয়েই সিরিজ আকারে সাজানো আর জে কিবরিয়া এর বই সমগ্র ‘জীবনের গল্প পর্ব ১-৪’। তাঁর উপস্থাপনায় তুমুল জনপ্রিয় আরেকটি রেডিও অনুষ্ঠান ‘যাহা বলিব সত্য বলিব’ থেকে অতিথিদের জীবনের গল্পগুলো ও তাদের ইংরেজি অনুবাদসহ সাজিয়েছেন বই ‘যাহা বলিব সত্য বলিব পার্ট-১’। ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমে বিশেষ অবদানের জন্য তিনি ম্যানহাটন অ্যাওয়ার্ড (দক্ষিণ এশিয়া) ওয়ার্ল্ড সামিট ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড এবং পরপর তিনবার ইউনিসেফ কর্তৃক মীনা অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন।