ভূমিকা সকল দেশে, সকল জাতিরই রূপকথা আছে। রূপকথা মানে কেবল ছেলে ভুলানো গল্প নয়। আসলে এইসব গল্পে আছে জীবনের ভালো এবং মন্দ, সুন্দরভাবে পৃথিবীতের বাঁচার উপদেশ এবং নীতিকথা। তাই রূপকথার গল্পগুলো জীবনের পাঠশালা হিসেবে কাজ করে। এই পাঠশালা থেকেই শিশুা পায় ভাগ্য এবং মানুষের আশা আকাঙ্ক্ষা, সংগ্রাম, সুন্দর, অসুন্দর ইত্যাদির ধারণা। রাজা,রাণী,রাজপুত্র,কোটালপুত্র,সওদাগুপুত্র,রাক্ষস রাক্ষসী, দুষ্ট রাণী, হিংসুক রাণী- এসব তো রূপকথায় আছেই। আরো আছে পশু পাকি, ফুল ,দৈত্যদানো। এরা সকলেই মানুষের ভাষায় কথা বলে। রূপকথার এই এক আশ্চর্য যাদু যে, মানুষ ও পশুপাখি , গাছ ও দৈত্যদানো-সবাই আমাদের কাছে বিশ্বাসযোগ্য স্বাভাবিক চরিত্র বলে মনে হয়। বাঙালির রূপকথা হাজার বছর ধরে বাংলার ছেলেমেয়েরা দাদা-দাদী নানা-নানী মা খালার মুখে শুনে এসেছে। বাংলা ভাষার একজন বড় লেখক, দক্ষিণারঞ্জন মিত্র মজুমদার। তিনি এইসব বই রূপকথা বুড়োবুড়িদের মুখে শুনে শুনে লিখে রাখেন। তাঁর লেখা সেইসব রূপকথার বই হিসেবে ছাপা হয়্। তাঁর এই বইগুলো বাংলা সাহিত্যের মূল্যবান সম্পদ। আমরা তাঁর বইগুলো থেকে কয়েকটি গল্প বেছে নিয়েছি। তাঁর ভাষাকে এখনকার চলিত ভাষায় বদলে নিয়েছি। কোনো কোনো ক্ষেত্রে গল্পগুলো সংক্ষেপ করেছি। আমরা চেষ্টা করেছি এই রূপকথাগুলো যেন এ কালের শিশু কিশোরদের কাছে সহজে পড়বার মতো হয়।
Dakshinaranjan Mitra Majumder (১৮৭৭ বাংলা ১২৮৪ বঙ্গাব্দ - ১৯৫৬ বাংলা ১৩৬৩ বঙ্গাব্দ) প্রখ্যাত বাংলা ভাষার রূপকথার রচয়িতা এবং সংগ্রাহক। তার সংগ্রহিত জনপ্রিয় রূপকথার সংকলনটি চারটি খন্ডে প্রকাশিত যথা ঠাকুরমার ঝুলি,ঠাকুরদাদার ঝুলি, ঠানদিদির থলে ,এবং দাদামাশয়ের থলে । দক্ষিণারঞ্জন মিত্র মজুমদার বাংলা ১২৮৪ সালের (১৮৭৭ ইং) ২ রা বৈশাখে ঢাকা জেলার সাভার উপজেলায় উলাইল এলাকার কর্ণপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার মাতার নাম কুসুমময়ী ও পিতার নাম রমদারঞ্জন মিত্র মজুমদার। দক্ষিণারঞ্জনের বাবা রমদারঞ্জন ১৯০২ সালে মারা যান। পিতার মৃত্যুর পর তিনি পিসিমা রাজলক্ষ্মীর কাছে টাঙ্গাইল বসবাস শুরু করেছিলেন। তিনি বাংলা ১৩৬৩ সালের (১৯৫৬ ইং) ১৬ই চৈত্র কলিকাতায় মৃত্যুবরণ করেন।