যুদ্ধ বদলে দেয় সময়কে।বদলে দেয় মানুষকে।যাপিত জীবনে ঘটে ছন্দপতন।ক্ষুধার তাড়নায় মায়ের কোলে শিশু।পথে পথে লাশের সারি।ছিড়ে কুড়ে খাচ্ছে শকুন।পাকিস্তানি সেনাদের পৈশাচিক উল্লাসের কাছে হার মানতো মানবতা।খুনেরও রয়েছে ভয়ংকর রূপ।ছেলের রক্তে গোসল করানো হয়েছে মাকে।সন্তানের সামনে হয়েছেন ধর্ষিতা।জীবন বাঁচাতে বোনকে তুলে দিতে হয়েছে জানোয়ারের হাতে।'গণিমতের মাল' হিসেবে তরুণীদের শরীর নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে পাক হায়েনারা।কেউ কেউ শরণার্থী হয়ে ছেড়েছেন দেশ।কেউ ফিরেছেন।কেউ ফিরতে চেয়েও পারেননি।সব নিয়েই শান্তনু চৌধুরীর মুক্তিযুদ্ধ- ভিত্তিক উপন্যাস ;সূর্যোদয়ের আগে'।১৬ ডিসেম্বরকে যদি স্বাধীনতার সূর্যোদয় ধরি তবে এর আগেই হিংস্র উন্মত্ত পাকিস্তানিরা এদেশের দোসর রাজাকার,আল বদরদের সহযোগিতায় ঘটিয়েছে ইতিহাসের জঘন্যতম হত্যাযজ্ঞ।এসবের মধ্যেও কেউ কেউ ঘুরে দাঁড়িয়েছেন।দেশমাতৃকার জন্য জীবন দিতে কুণ্ঠিত হননি এতোটুকু।কিন্তু সময় কি তাদের মনে রেখেছে?যুদ্ধ দিনে যারাই ছিলেন স্বজন,আজ তারা্ই যেন কুজন।বীরদের কীর্তি ভুলতে বসেছে প্রজন্ম।পুরোনো শকুন এখনও লাশের সারি খোঁজে।আর সব হারানোর দল খোঁজে স্বপ্নের মাতৃভূমি।
শান্তনু চৌধুরী, ভালোবাসার নাগরিক মানুষ। নদী, ফুল, পাখি, ডাহুকের বিচিত্র ডাক ওকে বিমোহিত করে। গ্রাম্য মেলায় কিশোরীর খোঁপায় ফুল গুঁজে দেয়ার স্মৃতিকাতরতা, উঠোনে কাঁথা সেলাইয়ে বসা ঠাকুরমার আঁচলে মুখ লুকিয়ে ভূতের গল্প শোনার মতো মধ্যবিত্ত শিশু বিনোদন, আর রাতের নীরবতা ভেদ করে মৃদঙ্গের তালে তালে পুঁথিপাঠের আসর ভালোবাসে শান্তনু। সমান তালে লিখে চলেছেন গল্প, কবিতা, উপন্যাস আর প্রাত্যহিক যাপিত জীবনের সাহিত্য। প্রকাশিত হয়েছে বেশ কয়েকটি বই। এর মধ্যে কথা প্রসঙ্গে-, তারার অন্তরালে, প্রথম চিঠি, ফিরে এসো, নারীসঙ্গ, অন্য সময়ের প্রেম উল্লেখযোগ্য। ১৯৮০ সালের ৭ ডিসেম্বর চট্টগ্রামের সাতকানিয়া থানায় জন্ম নেয়া শান্তনু চৌধুরী নৈসর্গিক প্রাতিষ্ঠানিক পাঠ শেষ করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। এখন চলছে স্বশিক্ষিত হওয়ার চেষ্টা। কাগুজে, অন্তর্জালিক, শ্রুতিনির্ভর ও দৃশ্যমান সংবাদ মাধ্যমে কাজ করেছেন শান্তনু। বর্তমান ব্যস্ততা টেলিভিশনের অন্দরমহলে।