"সন্ধ্যা হয়" বইয়ের ফ্ল্যাপের কথা: পত্রিকায় পার্টটাইম কাজ আর বেশিরভাগ সময় এলােমেলাে ঘুরে বেড়িয়ে পারিবারিক বন্ধনহীন মঞ্জুর দিন খারাপ কাটছিল না। বিশ্ববিদ্যালয়ে তিন বছরের জুনিয়র মুনাকে খুব ভালাে লাগে তার। মুনার দিক থেকে যথেষ্ট ভালােলাগা থাকলেও মঞ্জুর বেখেয়ালি জীবন নিয়ে শঙ্কিত মুনা। শঙ্কিত মুনাকে আস্বস্ত করতেই যেন জীবনের দিকে সিরিয়াস’ হতে চায় মঞ্জু। ব্যবসায়ী ইশতিয়াক রেজা খান বা আইআর খানের কাছে চাকরির খোঁজে যায় সে। তার ‘আনন্দ আশ্রম' নামের নির্মিতব্য পার্ককে কি করে জনপ্রিয় করে তােলা যায়- তারই নতুন নতুন আইডিয়া বের করার চাকরি পায় মঞ্জু । কাজ শুরুর পরপরই মঞ্জু নিজেকে আবিষ্কার করে ভিন্ন এক জগতে। এই জগতের পুরাে নিয়ন্ত্রক আইআর খান। মঞ্জু একসময় নিজেকে সামন্তীয় ঘেরাটোপে বন্দি দেখতে পায়, লিজ সাবলীলতাই সে কেবল। হারাতে বসে না, একপর্যায়ে হুকুম-মেনে--চলা’ পুতুলেও পরিণত হা। বুদ্ধিমান মঞ্জু বুদ্ধি বিক্রি করতে এসে নিজেকে হারিয়ে ফেলে আইআর খানের চাকচিক্যময় বর্ণাঢ্য ভুবনে। ঢাকা নগরীর বেড়ে ওঠা উচ্চাভিলাষী শ্রেণিটির ব্যক্তি চাহিদা ও খেয়ালিপনার সামনে মঞ্জু নিজেকে একসময় সামান্য অনুচর’ হিসেবে আবিষ্কার করে। অন্যদিকে মুনা চেনা সামাজিকতা ও বাস্তবতার সামনে দ্বিধাগ্রস্ত তরুণী; একদিকে জীবনের সরল কলহাস্য, আরেকদিকে বাস্তবতার অনিবার্য আহ্বান- একদিকে আবেগ ও ভালােবাসা, আরেকদিকে যুক্তি- মুনার জন্যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ কষ্টকর হয়। পুতুলবাজি সমকালীন তারুণ্যের আকরভাবনাহৃদয়, মনন ও ধীশক্তি- সব নিয়েও কেবল অর্থ ও বিত্তের সামনে মেধাবী তারুণ্যের অসহায় আত্মসমর্পণের মানবিক আখ্যান পতলবাজি। কথাশিল্পী মাহবুব আজীজ হাস্যময় ও নৈর্ব্যক্তিকএকইসঙ্গে আন্তরিক ও সংবেদী; তার অনবদ্য কলমে উঠে এসেছে একুশ শতকের তারুণ্যের প্রেম, বেদনা, হাহাকার ও অসহায়ত্বের নিবিড় অনুভূতিমালা ।