"ঘুণপোকা" বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা: 'ঘুণপােকা' গল্পগ্রন্থে সর্বমােট ৮টি গল্প সংকলিত হয়েছে। প্রতিটি গল্পই বিন্যস্ত হয়েছে সমসাময়িক সামাজিক প্রেক্ষাপটে। বর্তমান জীবনযাপনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হল ভার্চুয়াল সংস্কৃতি। জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানানাে থেকে শুরু করে মৃত্যুতে শােকপ্রকাশ, সাফল্যে অভিনন্দন জানানাে বা অন্যান্য প্রয়ােজনে—সবকিছুই চলে এসেছে ভার্চুয়াল সংস্কৃতিতে। ফলে সমাজকাঠামাে পরিবর্তনে বিশেষ প্রভাব ফেলছে এই অনলাইন প্রযুক্তি। পারিবারিক, সামাজিক সম্পর্কগুলাের ওপর প্রভাব পড়ছে। সামাজিক ও অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলাের উপর প্রভাব সুস্পষ্ট। নানারকম সামাজিক নৈরাজ্য ও হতাশা বাড়ছে। ‘ঘুণপােকা' গল্পগ্রন্থের চরিত্রগুলাে বর্তমান সমাজের। তাই গল্পবিন্যাসে গল্পগুলােতে উঠে এসেছে সমসাময়িক কিছু রাজনৈতিক, সামাজিক প্রেক্ষাপট। আরও উঠে এসেছে সমাজের নানা অস্থিরতা, মানুষের অন্তরাত্মার হাহাকার, রক্ষণশীলতা ও উদারতার মুখােমুখি সংর্ঘ। এসবের পেছনে যেন রয়েছে অদৃশ্য এক ঘুণপােকা। যা কিনা আমাদের সামাজিক ঐতিহ্যকে কুড়ে কুঁড়ে খাচ্ছে। একজন লেখক কেবল লেখকই নন, একজন সমাজসংস্কারক। এ দায়বদ্ধতা আমাকে তাড়া করে ফেরে অনবরত। আমি ভাবতে ভাবতে অস্থির হয়ে উঠি। ভাবনার লাশকাটা ঘরে বীভৎসতা । মনে মনে সমাজের পিতা হয়ে উঠি। সমাজের অলিতে গলিতে যত আবর্জনা, সব পরিচ্ছন্ন করার স্বপ্ন দেখি। স্বপ্ন দেখি কাব্যের মনিটরে। স্বপ্ন বুনি গদ্যের চরে। কোনাে একদিন, হয়তাে কোনােদিন মনিটরে দেখবাে সামাজিক মানবিক সুপারহিট ফিল্ম । আর গদ্যের চরের সােনালি ফসলের ঘ্রাণ আমাকে আবিষ্ট করবে।
জন্ম ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭৫। বাবা মো. আবদুল লতিফ, মা আফরোজা বেগম। কুর্মিটোলা উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসি, হলিক্রস কলেজ থেকে এইচএসসি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজবিজ্ঞানে অনার্স ও মাস্টার্স। ২০০৫ সালে বিসিএস (শিক্ষা) কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দেন। বর্তমানে গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজের সহকারী অধ্যাপক। তিনি একজন আবৃত্তিশিল্পী। মুক্তধারা সংস্কৃতিচর্চা কেন্দ্রের সদস্য। প্রকাশিত অন্যান্য গ্রন্থ: জলতরঙ্গ (কবিতা, ২০১৭), ঘুণপোকা (গল্প, ২০১৮), এই শহরের রূপকথা (কবিতা, ২০১৯), রোজ গার্ডেন (আধিভৌতিক উপন্যাস, ২০১৯), সুরের আগুন (উপন্যাস, ২০২০) ।