স্কুল ফাইনাল পরীক্ষা শেষ হয়ে গেল। চাটুজ্জেদের রোয়াকে আমাদের আড্ডা জমেছে। আমরা তিনজন আছি। সভাপতি টেনিদা, হাবুল সেন আর আমি প্যালারাম বাঁড়ুজ্জে-পটলডাঙ্গায় থাকি আর পটল দিয়ে শিঙিমাছের ঝোল খাই। আমাদের চতুর্থ সদস্য ক্যাবলা এখনো এসে পৌঁছয় নি। চারজনে পরীক্ষা দিয়েছি। লেখাপড়ায় ক্যাবলা সব চেয়ে ভালো-হেডমাস্টার বলেছেন ও নাকি স্কলারশিপ পাবে। ঢাকাই বাঙাল হাবুল সেনটাও পেরিয়ে যাবে ফার্স্ট ডিভিসনে। আমি দু-বার অঙ্কের জন্যে ডিগবাজি খেয়েছি-এবার থার্ড ডিভিসনে পাশ করলেও করতে পারি। আর টেনিদা- তার কথা না বলাই ভালো। সে মেট্রিক দিয়েছে-কে জানে এনট্রান্সও দিয়েছে কি না। এখন স্কুল ফাইন্যাল দিচ্ছে-এর পর হয়তো হায়ার সেকেন্ডারিও দেবে। স্কুলের ক্লাস টেন-এ একবারে মনুমেন্ট হয়ে বসে আছে-তাকে সেখান থেকে টেনে এক ইঞ্চি নড়ায় সাধ্য কার। টেনিদা বলে, হেঁ-হেঁ-বুঝলি নে? ক্লাসে দু-একজন পুরানো লোক থাকা ভালো-মানে, সব জানে-টানে আর কি! নতুন ছোকরাদের একটু ম্যানেজ করা চাই তো! তা নতুন ছেলেরা ম্যানেজ হচ্ছে বৈ কি। এমন কি টেনিদার দুদে বড়দা-যাঁর হাঁক শুনলে আমরা পালাতে পথ পাই না, তিনি সুদ্ধ ম্যানেজ হয়ে এসেছেন বলতে গেলে।
Narayan Gangopadhyay নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় (৪ ফেব্রুয়ারি, ১৯১৮ - ৬ নভেম্বর, ১৯৭০) একজন ভারতীয় বাঙালি লেখক । জন্ম অবিভক্ত বাংলার (অধুনা বাংলাদেশের অন্তর্গত) অবিভক্ত দিনাজপুর জেলার বালিয়াডাঙ্গীতে। সাহিত্যে ছোটগল্প তাঁর একটি উল্লেখযোগ্য প্রবন্ধগ্রন্থ। ছোটদের জন্য তাঁর সৃষ্ট কাল্পনিক চরিত্র টেনিদা খুবই জনপ্রিয় । তাঁর লেখা কিছু উল্লেখযোগ্য ছোটগল্প হল - ইতিহাস, নক্রচরিত, হাড়, বীতংস, রেকর্ড, টোপ, আদাব, প্রভৃতি।নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় দিনাজপুর জেলা স্কুল, ফরিদপুর রাজেন্দ্র কলেজ, বরিশাল ব্রজমোহন কলেজ ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃতি ছাত্র ছিলেন। তার শিক্ষাকাল কাটে দিনাজপুর, ফরিদপুরের রাজেন্দ্র কলেজ, বরিশালের বিএম কলেজ ও কলকাতায়। ১৯৪১ সালে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএ ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হন এবং ডক্টরেট ডিগ্রি নেন ১৯৬০ সালে। এরপর তিনি জলপাইগুড়ি কলেজ, সিটি কলেজ ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেন। নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রকৃত নাম তারকনাথ গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি ছোট গল্প বিষয়ে ডি.লিট ডিগ্রি লাভ করেন।