‘হুই উইঘুরের হৃদয়ে’ বইটির শেষের কথাঃ - ঘটনাস্রোত আহমদ মুসাকে আবার নিয়ে এল হুই উইঘুরদের । দেশে। মৈত্রী ও সমঝোতার অবস্থা ভেঙে পড়ায় উইঘুররা আবার সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছে । অবিশ্বাস ও হিংসার আগুন পোড়াচ্ছে সরকার ও উইঘুর দু’পক্ষকেই। হাইজ্যাক হওয়া একটা জাহাজে আহমদ মুসা এসে পৌছল চীন উপকূলের এক শহরে । ভয়ংকর সন্ত্রাসীরা বন্দী করল সান ইয়াত ঝুং ও ল ঝি ঝাও নামের চীনা দুই তরুণ-তরুণীকে । তাদের রক্ষা করতে গিয়ে আহমদ মুসাও বন্দী হলো । শীঘ্রই আহমদ মুসা জানল চীন জুড়ে ভয়ংকর শক্তিশালী সন্ত্রাসীরা চীনা এক এ রাজতন্ত্রের উত্তরসূরী এবং বাইরের সমর্থনপুষ্ট । আরও জানল চীনা সরকার ব্যবস্থা এবং হুই উইঘুর সকলেরই এরা শত্রু । এদের লক্ষ্য নৈরাজ্য সৃষ্টি করা। এরা একদিকে উইঘুরদের উস্কানী দিচ্ছে, অন্যদিকে সরকারকে উইঘুরদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করছে। আহমদ মুসা জড়িয়ে পড়ল ঘটনার সাথে । ল চীনা দুই তরুণ-তরুণীকে মৃত্যুর মুখ থেকে বাচিয়ে পালাল বন্দীখানা থেকে। এই তরুণটি চীনা ক্যুনিস্ট পার্টি ও দেশের প্রেসিডেন্টের ছেলে এবং তরুণীটি চীনা সেনাপ্রধানের মেয়ে । ...আহমদ মুসা প্রবেশ করল রাষ্ট্রীয় ঘটনা প্রবাহের মূল স্রোতে । শুরু হলো তার মিশন এই মিশনে লু ঝি ঝাও ও সান ইয়াত ঝুং প্রধান চরিত্র হয়ে দাড়াল কিভাবে? সন্ত্রাসী-ষড়যন্ত্রকারী কারা? বিদেশি শক্তিই বা কারা? কিভাবে হুই উইঘুরদের রক্ষার মিশন নিয়ে এগোচ্ছে আহমদ মুসা? কোন পরিণতির দিকে গড়াচ্ছে তার কঠিন মিশন ? এসব প্রশ্নের জবাব নিয়ে এসেছে ‘সাইমুম ৬০ ‘হুই উইঘুরের হৃদয়ে ।
দেশের অন্যতম জনপ্রিয় উপন্যাস সিরিজ ‘সাইমুম সিরিজ’ হলো লেখক আবুল আসাদ এর বই। এই একটি বাক্যই যথেষ্ট প্রখ্যাত সাংবাদিক, প্রাবন্ধিক, কলামিস্ট এবং সাহিত্যিক আবুল আসাদকে পরিচিত করিয়ে দেবার জন্য। গুণী এই লেখক ও সাংবাদিক ১৯৪২ সালের ৫ই আগস্ট রাজশাহী জেলার অন্তর্গত বাগমারা থানার নরসিংহপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা এ. কে. ছামছালুল হক ভারতের বেনারসের মাদ্রাসা থেকে শিক্ষা লাভকারী একজন আলেম ছিলেন। সে সূত্রে পারিবারিকভাবেই তিনি ইসলামিক শিক্ষা লাভ করেন। মেধাবী ছাত্র আবুল আসাদ মাধ্যমিক শেষ করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন এবং অর্থনীতিতে এম.এ পাস করেন। ছাত্রজীবনেই সাংবাদিকতায় হাতেখড়ি হয় তার। রাজশাহীর একাধিক দৈনিক এবং সাপ্তাহিক পত্রিকায় কাজ করার অভিজ্ঞতা নিয়ে ১৯৭০ সালে দৈনিক সংগ্রামে সহকারী সম্পাদক হিসেবে যোগ দেন তিনি। ১৯৮১ সালে তিনি সংগ্রামের সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন শুরু করেন, যে পদে তিনি আজও কর্মরত আছেন। আবুল আসাদ এর বই সমগ্র পাঠকদের কেবল আনন্দই দেয় না, বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে সচেতনও করে। বিশেষ করে সাইমুম সিরিজের প্রকাশিত ৬১টি বই কেবল থ্রিলারই নয়, এগুলো ইসলামিক ইতিহাস, ভূগোল আর সংস্কৃতির পাঠও। সাইমুম সিরিজ ছাড়াও আবুল আসাদ এর বই সমূহ এর মাঝে আছে ‘কাল পঁচিশের আগে ও পরে’, ‘আমরা সেই সে জাতি’ (৩ খণ্ড) ‘সময়ের সাক্ষী’ এবং প্রবন্ধ সংকলন ‘একুশ শতকের এজেন্ডা’। গুণী এ লেখক তার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের জন্য একাধিকবার গ্রেফতার হয়েছেন।