জুন মাস। বাতাসে গরমের হলকা বইছে। বাড়ির পিছনে কূয়ার পাড়ে বেল গাছটার নিচে এসে দাঁড়ালেন কপিল। মাঠে ধান ক্ষেতের উপর দিয়ে চিরুনির মত বুলিয়ে বুলিয়ে দূর থেকে আসা বাতাস তার প্রাণে শীতল পরশে ভরিয়ে দেয়। চোখ বন্ধ করে বুক ভরে একটা লম্বা শ্বাস টানেন। ৫৫ বছর আগের স্মৃতিতে ডুবে যান। শৈশব কৈশোরের একটা বড় অংশ কেটেছে বড় ফুপু ছায়রা খাতুন এর কাছে। বড় ফুপুর নামটা সদ্য আবিষ্কার করেছেন। ছোটকালে দেখেছেন বাড়ির সবাই বড় ফুপুকে হুকি নামে ডাকতে। তা দেখে তার কখনও মাথায় আসে নাই ফুপুর একটা আসল নাম থাকতে পারে। ছটফটে মেজাজি ফুপুকে গ্রামের সবাই সমীহ করে চলত। সেই ফুপুর মায়ার জালে জড়িয়ে ছোটকালে ছুতানাতা ধরে গ্রামের বাড়ি চলে আসতেন কপলি। আর একবার আসলে শহরে ফিরে যেতে চাইতেন না। শহর মানে স্কুল, শহর মানে ভোর সকালে মৌলভী সাহেবের কাছে সিপারা পড়তে বসে বেধড়ক মার খাওয়া। নামতা কিংবা অংকের ছুতায় গৃহশিক্ষকের সকাল-সন্ধ্যা বেতের বাড়ি। এই নিদারুণ যন্ত্রণার অন্যপিঠে ফুপু মানে অবাধ স্বাধীনতা। দিগন্তজোড়া মাঠে ছুটোছুটি, মাছ ধরার নামে নালাডোবা পুকুরে অবাধ দাপাদাপি, নাওয়া খাওয়া ভুলে ডাংগুলি আর গোল্লাছুট নয়তো দাঁড়িয়াবান্দা খেলায় উচ্ছৃঙ্খল