“দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ" বইটির ফ্ল্যাপ এর লেখাঃ পৃথিবীর সমগ্র ইতিহাসে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের মতাে এমন প্রলয়কাণ্ড আর কখনও অনুষ্ঠিত হয়নি। প্রাকৃতিক জগতে যেমন ভূমিকম্প, তেমনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের তুলনা একমাত্র সেই অবিমিশ্র ধ্বংসের সঙ্গেই দেয়া যেতে পারে। প্রকৃতপক্ষে যাকে কেন্দ্র করে সারা পৃথিবী এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ আবর্তিত হয়েছিল-তার নাম অ্যাডলফ হিটলার। যদিও বিজ্ঞানসম্মত দৃষ্টিভঙ্গির বিচারে, এমন কথা বলা উচিত নয়। যে, একটিমাত্র ব্যক্তির জন্যই সমগ্র পৃথিবী এভাবে আলােড়িত হয়েছিল, বরং বলা উচিত যে, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তী সমসাময়িক পৃথিবীর রাজনৈতিক এবং ঔপনিবেশিক ও সামাজিক প্রচণ্ড সংঘাতগুলাের জন্যই বিশ্বযুদ্ধ ঘটেছিল এবং হিটলারের মতাে এক অবিশ্বাস্য অদ্ভুত ব্যক্তিত্বের আবির্ভাব হয়েছিল- যেমন সময় সময় । সমুদ্রের প্রবল তরঙ্গঘাতে রাক্ষুসে ধরনের অতিকায় তিমি মৎস্য পৃথিবীর তটপ্রান্তে ছিটকে পড়ে। তথাপি এই ‘একক’ মানুষটি-স্ত্রী, পুত্র পরিবারহীন ‘নিসঙ্গ’ বিচিত্র এই মানুষটির ইতিহাসের এক অত্যাশ্চর্য এবং হতবুদ্ধিকর ব্যক্তিক্রমের মতাে। আলেকজান্ডার বা সিজার, নেপােলিয়ান বা। স্ট্যালিন- কারুর সঙ্গেই এর তুলনা দেয়া যায় না। কারণ, হিটলারের মধ্যে কোনাে অনন্যসাধারণ মনীষা, কোন গভীর অন্তর্দৃষ্টি, কিংবা মানবিকতা ও মমত্ববােধ ছিল না। যদিও কূটনৈতিক বুদ্ধির তীক্ষ্ণতা ও সামরিক বিষয়ে তার স্বাভাবিক জ্ঞান ও বক্তৃতা দানের অসাধারণ শক্তি ছিল। এই অদ্ভুত লােকটি সমগ্র ইউরােপকে এবং সমসাময়িক পৃথিবীকে যেন পাগল করে দিয়েছিল। এমনকি, অতীতের সকল রণনায়ককে যেন অতিক্রম করে গিয়েছিল । একথা সিঃসন্দেহ যে, তার অসাধারণ প্রতিভা ছিল, সুতরাং এই অদ্ভুত মানুষটির জীবনকথা একটু বিস্তৃত আকারে আমাদের জানা দরকার যে জীবনের সাথে। কোটি-কোটি মানুষের জীবন-মৃত্যু জড়িয়ে পড়েছিল।
আনু মাহমুদ তরুণ অর্থনীতিবিদ, প্ৰবন্ধকার, কলাম লেখক ও গ্রন্থকার হিসেবে ইতোমধ্যে বেশ পরিচিতি অর্জন করে সুধী পাঠক সমাজে একটি স্থান আয়ত্ত করতে সক্ষম হয়েছেন। যদিও তিনি তার কর্মপরিসরে সরকারি কর্মকর্তা ও এ্যাডমিনেস্ট্রেটিভ সার্ভিসের সদস্য হিসেবে মোঃ মাহমুদুর রহমান নামেই সমধিক পরিচিত। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ সরকারের উপসচিব এবং জাতীয় গ্ৰন্থকেন্দ্রের পরিচালক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। আনু মাহমুদ বেশ সময় ধরে লেখা-লেখির সাথে জড়িত রয়েছেন এবং অনেক চড়াই উৎরাই করে দীর্ঘ পথ পরিক্রমার মাধ্যমে পরিস্ফুটিত হয়েছেন গ্রন্থকারের বর্তমান অবস্থানে এবং সংগ্রহের ঝুলিতে অর্জন করেছেন আর্থ-সামাজিক সমস্যা সম্পর্কিতসহ বহু বিষয় ভিত্তিক গ্রন্থের সফলতা, যা ইতোমধ্যে পাঠক সমাজে বেশ সমাদৃতও হয়েছে। তাঁর লেখালেখির শুরু হয়েছে সেই ছাত্র অবস্থা থেকে, আর তা ক্ৰমান্বয়ে শিকড় গেড়ে পত্র পল্লবে শোভিত হয়ে শাখা বিস্তার করে বর্তমানে রূপ নিয়েছে কাণ্ডে, বৃক্ষে। কিন্তু তার প্রত্যাশা রয়েছে একে ব্যাপক প্রসার ঘটিয়ে এক বিরাট বটবৃক্ষের রূপ দেয়ার। লেখালেখির জগতে যেমন জড়িযে আছেন তেমনি আর্থ-সামাজিক সংগঠনের সাথে। তাঁর স্ত্রী আনোয়ারা মাহমুদ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক। তাদের দুই সন্তান চাঁদনি ও ইযু। তিনি বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ এবং সাবেক সংসদ সদস্য, জনাব মজিবর রহমান তালুকদারের দ্বিতীয় সন্তান।