"জরথুস্ত্র" বইয়ের সংক্ষিপ্ত কথা: জগতে মানবজীবন রাজনীতি, অর্থনীতি ও ভাবাদর্শের ত্রিমাত্রিক মাত্রায় গতিশীল। মানবজীবনকে সুন্দর, প্রগতিশীল ও শান্তিপূর্ণ করার জন্য যুগে যুগে মহামানবদের আগমন হয়। তাঁদেরকে আমরা বলি সিদ্ধপুরুষ। সেমেটিক ইতিহাসে তাঁরা নবী, মোঙ্গলীয় ইতিহাসে তাঁরা দার্শনিক বা মহাপুরুষ, ভারতীয় ঐকিহ্যে তাঁরা নররূপী নারায়ণ। সুদূর প্রাচীনকালে পারসিকরা পারস্যে উন্নত সভ্যতা গড়ে তুলেছিল। সে সভ্যতায় ধর্মীয় চেতনা বা আদর্শের বাণী প্রচার করেছিলেন জরথুস্ত্র। তিনি পারসিকদের একটি উন্নত জাতিতে পরিণত করার জন্য নতুন আদর্শ জরথুস্ত্রবাদ প্রচার করেছিলেন। মানুষ স্বাধীন চিন্তা ও ইচ্ছার অধিকারী। সমাজ ও রাষ্ট্রে যে মন্দশক্তি সক্রিয় থাকে, সেটিকে জরথুস্ত্র বলেছেন ‘আহরিমান’। জগতের সৃষ্টিকর্তা একজন রয়েছেন জরথুস্ত্র তাঁকে বলেছেন আহুরা মাজদা। তিনি জ্ঞান ও মঙ্গলের দেবতা। মানুষ ইচ্ছা করলে শুভ ও অশুভের যে কোনো শক্তিকে উপাসনা করতে পারে। আহুরা মাজদার উপাসক হলে তাঁকে জ্ঞানী ও মহৎকর্মশীল এবং সমাজ ও রাষ্ট্রে মঙ্গল প্রতিষ্ঠার জন্য সচেষ্ট হতে হবে। জ্ঞানচর্চা ও সৎজীবনের মধ্যে রয়েছে জীবনের সফলতা। অন্যদিকে মন্দশক্তির প্রলোভনে লোভ ও লালসার অনুসারী হলে এ পৃথিবীতে পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্র হবে অশান্তিময়। মানুষের উচিত কল্যাণ ও মঙ্গলের জন্য সচেষ্ট হওয়া এবং এটিই মানুষের ধর্ম। জরথুস্ত্রবাদ এই শিক্ষা দিয়েছিল প্রাচীন পারসিকদের। এই গ্রন্থ অধ্যয়নে পাঠক জরথুস্ত্রবাদ সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা লাভ করবেন।