"লেনিনের 'রাষ্ট্র ও বিপ্লব' শত বছর পরের পাঠ, প্রশ্ন ও পর্যালোচনা" বইটির ভূমিকা থেকে নেয়াঃ এই গ্রন্থের বিষয়বস্তু এবং লেখার ধরন ও রুশ বিপ্লবের ইতিহাসকে পাশাপাশি রাখলে এটা অনেকখানি স্পষ্ট হয় যে, বিশেষভাবে স্বদেশের বিপ্লবী পরিস্থিতির মুখে দাঁড়িয়ে রাশিয়ার তখনকার মার্কসের অনুসারীদের রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল ও করণীয় বিষয়ে দিকনির্দেশনা দেয়ার অভিপ্রায়ই লেনিনকে এই রচনায় আগ্রহী করে থাকবে। আবার সাধারণভাবে ইয়ােরােপের পরিসরও তাঁর চিন্তার পরিগঠনে প্রভাব রাখছিল। তবে স্পষ্টত তিনি লিখছেন রাজনীতি সচেতন এবং একইসঙ্গে রাজনীতিতে নিবেদিত পাঠকদের জন্য। যদিও তিনি রাশিয়া ও ইয়ােরােপের ইতিহাসের একটা বিশেষ সময়ে লিখছিলেন, কিন্তু তাঁর লেখা যে সময় উত্তীর্ণ হয়ে গেছে তা বলাই বাহুল্য। কারণ সফল বিপ্লব শেষে লেনিনের চিন্তা ‘লেনিনবাদ’ আকারে হাজির হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিবিদ Peter Boettke-এর ভাষায়, এই রচনাটি ('রাষ্ট্র ও বিপ্লব’) সম্ভবত বিংশ শতাব্দীতে লিখিত স্বল্প সংখ্যক সেই সব প্রভাবশালী রাজনৈতিক পুস্তিকাগুলাের একটি- যেগুলাে মানুষের অবস্থার ভাগ্য নির্ধারক হয়ে দাঁড়িয়েছিল। দৃষ্টিভঙ্গির স্পষ্টতা এবং লেখার প্রাঞ্জলতার কারণে গ্রন্থটি পাঠে সহজেই মনে হয়- রাষ্ট্রের প্রকৃতি শনাক্ত করার ক্ষেত্রে লেনিন নিজেকে দ্বিধাহীনভাবে তুলে ধরছেন। রাষ্ট্র ‘দখল এবং তার সম্ভাব্য 'ব্যবহার’ ও ‘বিলােপ’ প্রশ্নে ইতিহাসে ‘প্যারি কমিউন ব্যতীত মার্কসীয় চিন্তায় প্রভাবিত কোনাে পূর্ব-প্রচেষ্টা না থাকার পরও এ সংক্রান্ত আলােচনায় তাঁকে দ্বিধান্বিত মনে হয়নি।
Title
লেনিনের 'রাষ্ট্র ও বিপ্লব' শত বছর পরের পাঠ, প্রশ্ন ও পর্যালোচনা - হার্ডকভার
আলতাফ পারভেজ সাংবাদিক ও গবেষক হিসেবে পরিচিত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দর্শনশাস্ত্রে প্রথম স্থান অধিকার করেছিলেন এবং সামরিক জান্তা বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সক্রিয়তার কারণে ডাকসুতে সদস্য নির্বাচিত হন। সাংবাদিকতা জীবনে প্রথম থেকে ‘কাউন্টার রিপোর্ট’ ধারণার চর্চা শুরু করেন এবং ১৯৯০ পরবর্তী শাসনামলে আনসার বিদ্রোহ ও কারা বিদ্রোহ নিয়ে সাড়া জাগানো কাজ করেছেন। প্রকাশিত গ্রন্থ সংখ্যা ১০- এর অধিক । ২০১৫ সালে তাঁর সর্বশেষ প্রকাশিত গ্রন্থ ‘মুজিব বাহিনী থেকে গণবাহিনী’ ইতিহাসের পুনর্পাঠ বাংলাদেশের রাজনৈতিক সাহিত্যে সবচেয়ে আলোচিত একটি গবেষণা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। বর্তমানে প্রধানত দক্ষিণ এশিয়ার ইতিহাস ও রাজনীতি তাঁর আগ্রহের বিষয়।