ইসলাম ও পরধর্ম’ কোনও মৌলিক রচনা নয়, সে কথাটা প্রথমেই বলে নিচ্ছি। কোরান ইসলাম ধর্মের একমাত্র ধর্মগ্রন্থ। পবিত্রতম। ইসলামে বিশ্বাসী মানুষের জন্যে প্রতিদিন কোরান তেলওয়াত করা মহাপূণ্যের। মুসলমানরা মূল আরবি ভাষায় কোরান পাঠ করেন। কোরানের এত বাংলা অনুবাদ। কিন্তু অনুবাদপাঠে পূণ্যলাভ হয় না। তাই বাংলা অনুবাদে যে কোরান পাওয়া যায় তা হাতেগােনা মুসলমানেরাই শুধু পড়েন। কারণ বাংলা কোরান পড়া যায়-তেলওয়াত করা যায় না। তারা পূণ্যলাভে বঞ্চিত হতে চান না। অনুবাদে ধর্মগ্রন্থ পাঠ করার বিধান নেই ইসলামে। আমি কোরান পড়েছি অনুবাদে-একবার নয়, বারবার। মূল আরবিভাষায় কোরান পড়ার ক্ষমতা নেই আমার। আমি আরবিভাষা জানি না। তাই বাংলা অনুবাদেই আমি কোরানের বক্তব্য ধরতে চেয়েছি। অনেকে মনে করতে পারেন, তাতে করে আমার কোরানের মর্মবাণী উপলব্ধি করার মধ্যে ঘাটতি রয়েছে। অনুবাদে মূলের কাছে কতটুকু পৌঁছানাে যায় তা নিয়ে বিতর্ক কম নয়। কিন্তু স্বীকৃত অনুবাদ থেকে মর্ম উপলব্ধি করা যায় না, তা মেনে নিলে পৃথিবীর সব অনুবাদ সাহিত্য, যার মধ্যে ধর্মগ্রন্থও পড়ে, অপাঠ্যযােগ্য হয়ে উঠত। এক ভাষা থেকে অন্য ভাষায় ভাষান্তরিত হত না যা কিছু মহৎ ও ধ্রুপদী সৃষ্টি।
জন্ম ২৫ জুলাই, ১৯৩৮, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং-এ স্নাতক। কলম ধরেছেন শেষ জীবনে। ধর্ম, সমাজ, রাজনীতি নিয়ে তার ভাবনা অন্যদের থেকে একেবারেই আলাদা। প্রথাগত ধারায় গবেষণা না। করলেও তার রচনায় বস্তুনিষ্ঠ গবেষণা ও আলােচনার ছাপ সুস্পষ্ট। তিনি লিখেছেন বাংলাদেশের নির্যাতিত, মাতৃভূমি থেকে বিতাড়িত ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের কথা। লিখেছেন ব্রাত্য, অন্ত্যজ আর শূদ্রদের কথা। তার কলমে উঠে এসেছে ধর্মশাস্ত্রে নারীর অমর্যাদাকর অবস্থানের কথা। বিভিন্ন ধর্মের ধর্ম ও শাস্ত্রগ্রন্থ নিয়ে তার পর্যবেক্ষণ, আলােচনা এবং উপস্থাপনায় যে শৈল্পিক বৈশিষ্ট রয়েছে তা একান্তই তার নিজস্ব। তাঁর প্রতিটি গ্রন্থই বহুল আলােচিত।