"ইউক্লিড ও এলিমেন্ট" বইটির ভূমিকার অংশ থেকে নেয়া: সৌরজগতের পৃথিবী নামক গ্রহটি নিয়ে মানুষের কৌতূহলের অভাব ছিল না। বুঝে না-বুঝে নানান গােষ্ঠী এই গ্রহটির বৈশিষ্ট্য নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছিল। পৃথিবীর ঘূর্ণন-পদ্ধতি ও পরিমাপ সঠিকভাবে নির্ণয় করতে গিয়ে অনেককে মারাত্মক প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে, অনেককে নির্মম অত্যাচারের শিকার হতে হয়েছে। সত্যপ্রতিষ্ঠায় প্রাণসংহার পর্যন্ত হয়েছে যথেষ্ট পরিমাণে, ইতিহাস তার সাক্ষ্য। এই প্রাণসংহার ও নির্যাতন স্বার্থপর গােষ্ঠী দ্বারা সংঘটিত হয়েছে। সূর্যের চতুর্দিকে আবর্তিত এই গ্রহটির ঘূর্ণন-পদ্ধতি, মৌলিক বৈশিষ্ট্যসমূহ এখন মানুষের জ্ঞানভাণ্ডারে আছে। এই সসীম গ্রহটির পৃষ্ঠসমূহ সসীম হওয়াই স্বাভাবিক। ইউক্লিড তার এলিমেন্টস গ্রন্থমালায় পৃথিবীর পৃষ্ঠদেশের বৈশিষ্ট্যসমূহ নির্ণয়ের যুক্তিগ্রাহ্য মৌলিক পদ্ধতি প্রথম লিপিবদ্ধ করেছিলেন। ইউক্লিডের গ্রন্থমালার সংজ্ঞা, স্বতঃসিদ্ধ এবং সাধারণ ধারণাসমূহ সহজেই উপলব্ধিতে ধারণ করা যায়। আর এর জন্য এলিমেন্টস একটি বিশ্বজ্ঞানভাণ্ডারে পরিণত হয়েছে। বিশ্বাস হল জ্ঞানের ভিত্তি আর অবিশ্বাস বা সন্দেহ হল জ্ঞানের সম্প্রসারণ। আমরা নতুন কোনও ধারণাকে উপলব্ধির মধ্য দিয়ে আত্মস্থ করি বা বিশ্বাসযােগ্য বিশ্বাসে পরিণত করি । আবার অবিশ্বাস বা সন্দেহের মধ্য দিয়ে তার ত্রুটি সংশােধন অথবা আরও বিস্তৃততর ধারণার দিকে নিয়ে যাই যার ফলশ্রুতিতে আমরা লােবচেভস্কীয় বা রিম্যানীয় জ্যামিতির মতাে আধুনিক জ্যামিতিক ধারণাগুলাে পেয়েছি।