”একাত্তরের দিনগুলি” বইটির ফ্ল্যাপের কথাঃ ১৯৭১ সালে বাঙালির স্বাধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের সঙ্গে জাহানারা ইমাম একাত্মতা ঘোষণা করেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে মৃত্যু, দুঃস্বপ্নভরা বিভীষিকার মধ্যে তার ত্যাগ ও সতর্ক সক্রিয়তা দেশপ্রেমের সর্বোচ্চ উদাহরণ হয়ে আছে। শহীদ রুমীর মা পরিণত হন শহীদ জননীতে। মুক্তিযুদ্ধে সন্তান বিয়োগের বেদনাবিধুর মাতৃহৃদয় এবং যাতনা মূর্ত হয়েছে তাঁকে কেন্দ্র করে। গত শতকের নব্বই দশকে মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত শক্তির উত্থানে জনমনে যে ক্ষোভের সঞ্চার হয় তার পটভূমিতে ১৯ জানুয়ারি ১৯৯২ সালে ‘একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি গঠিত হলে তিনি আহ্বায়ক নির্বাচিত হন। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন ও একাত্তরের ঘাতকদের বিচারের দাবিতে দেশব্যাপী ব্যাপক গণআন্দোলন পরিচালনা করেন। তারই নেতৃত্বে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে লাখ লাখ মানুষের উপস্থিতিতে একাত্তরের ঘাতকদের বিরুদ্ধে পরিচালিত হয় গণআদালত। শহীদ জননী জাহানারা ইমাম সংস্কৃতিক কর্মী হিসেবে বিভিন্ন সংগঠনের মধ্য দিয়ে মানুষের মনোজগতে পৌছে দিয়েছেন তার অধীত জ্ঞান সম্ভার। প্রচ্ছদ ও অঙ্গসজ্জা :: ধ্রুব এষ প্রচ্ছদের আলোকচিত্র : কামরুল হাসান মিথুন
"আত্মকথা- ১৯৭১"বইয়ের কিছু কথাঃ দীর্ঘ ছত্রিশ বছর পর মস্তিষ্কের স্মৃতিকোষে লুকিয়ে রাখা পাক সেনাবাহিনী দ্বারা সংঘটিত একটি নির্মম ও অবিশ্বাস্য গণহত্যার প্রত্যক্ষ বিবরণ লিখতে বসেছি....’ এ কথা নির্মলেন্দু গুণ-এর। এ কাহিনী একাত্তরের। একুশে বইমেলা ২০০৮ এর সেরা বই আত্মকথা ১৯৭১।
"আমি বিজয় দেখেছি" বইটিতে ফ্ল্যাপে লেখা কথাঃ বেপরোয়া ও অপ্রতিরোধ্য, দুঃসাহসী অথচ সংযত ও সহিষ্ণু ৬৩ বছর বর্ষীয় ‘চির যুবা’ এম আর আখতার মুকুল-সেই যে ছোটবেলায় বাঙালি ঘরাণার রেয়াজ মাফিক দু’দুবার বাড়ি থেকে পলায়ন-পর্ব দিয়ে শুরু করেছিলেন জীবনের প্রথম পাঠ-তারপর থেকে আজ অবধি বহু দুস্তর ও বন্ধুর চড়াই-উৎরাই, বহু উথান-পতন ও প্রতিকূলতার ভেতর দিয়ে যেতে হলেও আর কখনও তাকে পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি; রণে ভঙ্গ দিয়ে পিছ পা হননি কোনও পরিস্থিতিতেই। যা আছে কপালে, এমন একটা জেদ নিয়ে রুখে দাঁড়েয়েছেন অকুতোভয়ে। যার ফলে শেষ পর্যন্ত সব ক্ষেত্রেই তার বিজয়ী মুকুটে যুক্ত হয়েছে একের পর এক রঙ্গিন পালক। জীবিকার তাগিদে কখনও তাকে এজি অফিসে, সিভিল সাপ্লাই একাউন্টস, দুর্নীতি দমন বিভাগ, বীমা কোম্পানিতে চাকুরি করতে হয়েছে। কখনও আবার সেজেছেন অভিনেতা, হয়েছেন গৃহশিক্ষক, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার, বিজ্ঞাপন সংস্থার ব্যবস্থাপনা পরিচালক, সুদূর লন্ডনে গার্মেন্টস ফ্যাক্টরির কাটার। প্রতিটি ভূমিকাতেই অনন্য সাফল্যের স্বাক্ষর। কখনও হাত দিয়েছেন ছাপাখানা, আটা, চাল, কেরোসিন, সিগারেট পুরোনো গাড়ি বাস -ট্রাকের ব্যবসায়। করেছেন ছাত্র রাজনীতি। ১৯৪৮-৪৯ সালে জেল খেটেছেন। জেল থেকেই স্নাতক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। অংশগ্রহণ করেছেন ভাষা-আন্দোলনে, হাসিমুখে বরণ করেছেন বিদেশের মাটিতে সাড়ে তি ন বছরের নির্বাসিত জীবন; যখনই যা-কিছু করেছেন, সেটাকেই স্বকীয় মহিমায় সমুজ্জ্বল করে তুলেছেন। সাবাংদিকতা পেশায় নিয়োজিত ছিলেন প্রায় দুই যুগের মতো। কাজ করেছেন বেশ কিছু দেশী-বিদেশী পত্র-পত্রিকা ও বার্তা সংস্থায়-বিভিন্ন পদ ও মর্যাদায়। বেশিরভাগ সময় কেটেছে দুর্ধর্ষ রিপোর্টার হিসেবে। সফরসঙ্গী হয়েছেন শেরে বাংলা, সোহরাওয়ার্দী, মওলানা ভাসানী, ইস্কান্দার মীর্জা, আইয়ূব খান, বঙ্গবন্ধু, তাজউদ্দিন, ভুট্টোর মতো বড় নেতাদের। সাংবাদিক হিসেবে ঘুরেছেন দুই গোলার্ধে্বর অসংখ্যা দেশে। দেখেছেন বিচিত্র মানুষ, প্রথ্যক্ষদর্শী হয়েছেন বহু রুদ্ধশ্বাস চাঞ্চল্যকার ঘটনা প্রবাহের, সাক্ষী ছিলেন বহু ঐতিহাসিক মুহূর্তের। বহুমাত্রিক অভিজ্ঞতা সমৃদ্ধ জীবন। বঙ্গবন্ধুর উষ্ণ সান্নিধ্যে ও ভালবাসা তার জীবনের এক অভিস্মরণীয় স্মৃতি। জীবনের সবচেয়ে গৌরবোজ্জ্ব মুহূর্তে ১৯৭১-এর ৯ ডিসেম্বর সদ্য মুক্ত স্বাধীন যশোরের মাটিতে পদার্পণ এবং ১৯ তারিখে সরাসরি মুজিবনগর থেকে।
সাম্প্রতিক বাংলা সাহিত্যের গৌরবময় একটি নাম হাসান আজিজুল হক। ১৯৩৯ সালের ২ ফেব্রুয়ারি বর্ধমান জেলার যবগ্রামে তার জন্ম । নিজের গ্রাম থেকে স্কুলের পড়া সাঙ্গ করে ওপার-বাংলায় চলে যান। তিনি, দর্শনশাস্ত্রের পড়াশোনার পর অধ্যাপনা করেন সেখানকার কয়েকটি কলেজে। ১৯৭৩ সাল থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে দর্শনের অধ্যাপক, এখন অবসরপ্রাপ্ত। অধ্যাপনার সঙ্গে সঙ্গে দীর্ঘকাল অনেক গল্পের স্ৰষ্টা তিনি। গল্প অনেক লিখেছেন, কিন্তু, রহস্যময় কোনো কারণে, উপন্যাস-লেখায় বিশেষ আগ্ৰহ দেখান নি প্ৰতিভাবান এই কথাসাহিত্যিক । এ-বইটি প্ৰকাশিত হবার সঙ্গে সঙ্গে পাঠকসমাজের উৎসুক প্রতীক্ষার যেন অবসান হলো, আমাদের হাতে এসে পৌঁছল হাসান আজিজুল হকের হৃদয়স্পশী এই উপন্যাস : ’আগুনপাখি’ ।