"দ্য লাস্ট গার্ল" বইটি সম্পর্কে কিছু কথা: ২০১৪ সালে ইরাকে নাদিয়াদের গ্রামে হানা দেয় আইএস (ISIS-Islamic State of Iraq and Syria (Levant)), এবং একুশ বছরের শিক্ষার্থী হিসেবে তার জীবন নিক্ষিপ্ত হয়। নরকে। মা ও ভাইদের মৃত্যুর দিকে হাঁটতে বাধ্য করার দৃশ্য প্রত্যক্ষ করেছে সে; আইএস জঙ্গিদের একাংশ অন্য অংশের কাছে বিক্রি করে দেয় তাকে। তাদের হুকুম মানতে, ধর্ষণের আগে তাদের পরামর্শ অনুযায়ী কাপড় পড়তে ও সাজসজ্জা নিতে বাধ্য করা হয় তাকে। একরাতে জ্ঞান হারানাের আগপর্যন্ত গণধর্ষণ করে একদল হানাদার। গায়ের বিভিন্নস্থানে জলন্ত সিগারেট দিয়ে পােড়ানাের এবং পিটুনির চিহ্ন দেখিয়েছে সে আমাকে। আইএস জঙ্গিরা তাকে “অস্পৃশ্য অবিশ্বাসী” বলে সম্বােধনের পাশাপাশি প্রায়ই বড়াই করে বলতাে ইয়াজিদি নারীদের জয় করে তাদের ধর্মকে ধরণীর বুক থেকে নিশ্চিহ্ন করে দেয়া হবে। হাজার হাজার ইয়াজিদির অন্যতম ছিলাে নাদিয়া, যাদেরকে উন্মুক্ত বাজার অথবা ফেসবুকের মাধ্যমে নিলামে বিক্রির জন্যে নিয়ে যায় আইএস, কখনাে কখনাে মাত্র কুড়ি ডলারের বিনিময়ে। আশিজন বয়ােজ্যেষ্ঠ নারীর একজন ছিলেন নাদিয়ার মা, যাদের হত্যা করে নামহীন গণকবরে চাপা দেয়া হয়েছিলাে। ছয় ভাই ছিলাে কয়েকশাে লােকের অন্যতম, যাদের একদিনে হত্যা করে জঙ্গিরা। | নাদিয়া আমাকে যা বলছিলাে, তা গণহত্যা সম্পর্কিত। এবং গণহত্যা দুর্ঘটনাবশত ঘটেনা। এর জন্যে পরিকল্পনা করতে হয়; হত্যাকান্ডটি শুরুর প্রাক্কালে আইএসের “গবেষণা ও ফতােয়া বিভাগ” ইয়াজিদিদের সম্পর্কে গবেষণা চালায় এবং এই উপসংহারে আসে যে, একটি কুর্দিভাষী গােষ্ঠী হিসেবে তাদের কোনাে পবিত্র/আসমানী গ্রন্থ নেই, ফলে ইয়াজিদিরা অবিশ্বাসী, যাদের দাসত্ব গ্রহনে বাধ্য করা “শরিয়ার দ্বারা নিচ্ছিদ্র বিষয়।” আইএসের বিকৃত নৈতিকতা অনুসারে, খ্রিস্টান, শিয়া কিংবা অন্যান্যদের সাথে বৈসাদৃশ্যপূর্ণরূপে ইয়াজিদিদের পদ্ধতিগত ধর্ষণের উপযুক্ত কারণও এটি। বস্তুত, এটা ছিলাে তাদেরকে ধ্বংসের সবচে কার্যকর একটি পন্থা।