"লালুর মুক্তিযুদ্ধ" বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা: -ইয়ে লাড়কা, মুক্তি কা হাল ক্যায়া হ্যায় রে? লালুর জবাব, আফনেরা আন্ধা নাহি? চক্ষে দেহেন না? আফনের সামনে খাড়ায়া রইছে মুক্তিফৌজ। দেহেন, ভালা কইরা দ্যাহেন? তর্জনী নিজের বুকে ঠেকিয়ে লালু নামের বােকা কিশােরটি এই প্রথম বুদ্ধিমানের মতাে বিশ্বজয়ী হাসি হাসে। সালটি ছিল একাত্তর, ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহের একটি রাত। ‘লালুর মুক্তিযুদ্ধ’ গল্পটি এমনই। ‘হে বক্ষ’ গল্পটিতে আছে ঝপসি বটগাছটির কথা। গাছটি অনুভব করে তার শরীরে হারকিউলিসের মতাে প্রচণ্ড শক্তি। প্রচণ্ড আওয়াজে শিকড় ছিড়ে একদল পাকিস্তানি সেনাদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। মুক্তিযুদ্ধের শরীক হতে পেরেছে বটবৃক্ষটি। আনন্দে-সুখে গাছটি বলে, আজ আমি ধন্য, আমি ধন্য। ‘ফরিদ মাস্টার’ গল্পে বলেন, জীবন তাে একটাই। ছােট্ট এই জীবনকে বৃথা যেতে দিও না। দেশকে স্বাধীন করার মহৎ কাজে তােমরা নেমেছ। জয় তােমাদের হবেই। ‘আকাশটা কী লাল’ গল্পের পলাশ আকাশ-বাতাস-মেঘ-এর কাছে ক্ষমা চায়। অনুভব করে বিজয় দিবসের দিনটি ভিডিও খেলা দিন নয়। টিভিতে কার্টুন ফিল্ম দেখার দিন নয়। দেশের জন্য যারা জীবন দিয়েছে এ দিনটি তাদের স্মরণ করার দিন। রুমন, পৃথু, বাবলু, বাবুনী, টিটো, অভি ওরা এ বইটিতে এসেছে মিছিলের মতাে। মন কেমন করা ওদের সংলাপের মধ্য দিয়ে এগিয় গেছে ঝর্ণা দাশ পুরকায়স্থের ‘লালুর মুক্তিযুদ্ধ' বইটি। নানা স্বাদের গল্প, প্রতিটি গল্পে একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের বিচিত্র কাহিনি ফুলের মৃদু সুগন্ধের মতাে গল্পগুলাে জড়িয়ে রয়েছে। লেখকের পরিণত কলমের কারিকুরিতে সে সময়ের রুদ্ধশ্বাস ঘটনাগুলাে স্ফটিকের মতােই স্বচ্ছ হয়ে উঠেছে। ছােটদের আনন্দ-ভালােবাসা-কষ্ট, দেশের জন্য মমত্ববােধ গল্পগুলােকে বিভাময় করে তুলেছে। কিশাের ভুবনে ‘লালুর মুক্তিযুদ্ধ’ বইটি এক অনন্য সংযােজন।
শিশু সাহিত্যাঙ্গনে ঝর্ণা দাশ পুরকায়স্থ পাঠক নন্দিত একটি নাম। বয়সকে বেমালুম ভুলে লিখতে পারেন শৈশবে-কৈশোরে ফিরেগিয়ে অনায়াসে লিখতে পারেন ছোটদের কথা। জটিল বিষয়ও আকর্ষণীয় হয়ে উঠে তার নিপুণ লেখার গুণে । লেখিকা একুশ ও মুক্তিযুদ্ধের গল্পগুচ্ছ বই-এ সহজ-সরলভাবে বিভিন্ন গল্পের মাধ্যমে ছোটদের উপযোগী করে আমাদের ভাষা আন্দোলন ও মহান মুক্তিযুদ্ধের কথা তুলে ধরেছেন। নবীন প্রজন্ম হাসি-কান্নায় মেলা স্মৃতিময় গৌরবের দিনগুলোর কথা জানতে পারবে এ বইটি পড়ে। শিশু-সাহিত্যকে বিশেষভাবে সমৃদ্ধ করবে একুশ ও মুক্তিযুদ্ধের গল্পগুচ্ছ বইটি ।