Close
  • Look inside image 1
  • Look inside image 2
  • Look inside image 3
  • Look inside image 4
  • Look inside image 5
  • Look inside image 6
  • Look inside image 7
  • Look inside image 8
  • Look inside image 9
  • Look inside image 10
  • Look inside image 11
  • Look inside image 12
  • Look inside image 13
  • Look inside image 14
  • Look inside image 15
  • Look inside image 16
  • Look inside image 17
গেরিলা থেকে সম্মুখ যুদ্ধে ১ম ও ২য় খণ্ড image

গেরিলা থেকে সম্মুখ যুদ্ধে ১ম ও ২য় খণ্ড (হার্ডকভার)

মুক্তিযোদ্ধা মাহবুব আলম

TK. 1,650 Total: TK. 1,320
You Saved TK. 330

20

গেরিলা থেকে সম্মুখ যুদ্ধে ১ম ও ২য় খণ্ড

গেরিলা থেকে সম্মুখ যুদ্ধে ১ম ও ২য় খণ্ড (হার্ডকভার)

রকমারি কালেকশন

30 Ratings  |  15 Reviews

”গেরিলা থেকে সম্মুখ যুদ্ধে - প্রথম খন্ড” বইটির সূচিপত্রঃ
যুদ্ধযাত্রা
* প্রম্তুতি-পাহাড় থেকে নেমে আসা
* মুরতি: মুজিব ক্যাম্প
* ভাটপাড়া ক্যাম্প
* প্রথম অপারেশনের য... See more

TK. 1,650 TK. 1,320 You Save TK. 330 (20%)
book-icon

Cash On Delivery

mponey-icon

7 Days Happy Return

Frequently Bought Together

Similar Category eBooks

বইটই

Product Specification & Summary

”গেরিলা থেকে সম্মুখ যুদ্ধে - প্রথম খন্ড” বইটির সূচিপত্রঃ
যুদ্ধযাত্রা
* প্রম্তুতি-পাহাড় থেকে নেমে আসা
* মুরতি: মুজিব ক্যাম্প
* ভাটপাড়া ক্যাম্প
* প্রথম অপারেশনের যাত্রা
* জুনের ২৭ তারিখ
* ফিরে এলো ওরা
* দ্বিতীয় অপারেশন
* সামনে বাংলাদেশ!
* সীমান্ত অতিক্রম
* নিজেদের মানুষ
* গাইড মকতু মিয়া
* যুদ্ধে প্রথম সফলতা
* জীবন ,ছকে বাঁধা
* ঈদে মিলাদুন্নবী
* ইব্রহিমের আর্ত-চিৎকার
* শালমারা ব্রিকেজ বিস্ফোরণ
* গাদা নিয়ে ফেরা
* সোনার বানরে সোনা মিয়া
* হালিম মাস্টারের বদলে ওসমান
* রেকি মিশন-তালমা ব্রিজ
* একজন বিশ্বাসঘাতক সাইকেল মেকার
* মকতু মিয়ার আশ্রয়,বিনষ্ট যোগাযোগ পথ এবং মাটিতে আঁকা ম্যাপ
* অমরখানার বুধন মেম্বার এবং শত্রু পক্ষের বাঙ্কার
* মাঝপথে অভিযান পরিত্যক্ত -মিশন টোকাপাড়া
* ডাকাত! ডাকাত!!
* একটা নিসঙ্গ হেলিকপ্টার
* রাখালদা
* বৃষ্টি!বৃষ্টি!!
* বচ্চা মিয়ার ভূত দেখা
* জয় বাংলার মানুষ
* টার্গেট অমরখানা,পাকবাহিনীর লঙ্গরখানা,প্রমোদ ঘাঁটি
* সফলতা ও স্বীকৃতি
* অপারেশন অমরখানা
* ভাটপাড়া ক্যাম্প গুটিয়ে নেয়া হলো
* চাউলহাটি ইউনিট বেস
* টোকাপাড়া ক্যাম্প
* জব্বারের বদলে গোলাম গউস
* আক্রান্ত টোকাপাড়া ক্যাম্প
* শহিদ গোলাম গউস
* টোকাপাড়ার ক্যাম্প
* রঙরুটদের নিয়ে আবার অভিযান-টার্গেট হবি মেম্বার
* হারিয়ে গেল সোনামিয়া
* মিশন সোনারবান-টার্গেট মাদ্রাস সুপার
* এবার ভেতরে যেতে হবে
* পরিশিষ্ট -চাউলহাটি ইউনিট বেসের মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা (অসম্পূর্ণ)
হাইড আউট (এক)
* হাইড আউট
* নতুন পরিকল্পনা:যুদ্ধের গতিধারা পরিবর্তন
* টাস্ক: মিশন বাংলাদেশ
* প্রথম হাইড আউট
* বদলুপাড়া
* শান্তিবাহিনী
* দ্বিতীয় ‘হাইড আউট’: বারাথানের ধনার বাড়ি
* কালীদেবী সর্বংহরাতর রূপ
* রিপোর্টিং
* ভালোবাসার মুখ
* প্রচণ্ড শক্তির বিস্ফোরক-প্রেসার চার্জ, রেমার চার্জ
* অপারেশন বিসমনি
* ডাবুরডাঙ্গা: তৃতীয় ‘হাইড আউট’
* মজিব: বাদল দিনের আগন্তুক
* ভাবলা মিয়ার বাড়ি
* পাকবাহিনীর আগমন
* নুরুদ্দীন মিয়ার বাড়ী
* বেরুবাড়ি
* শরণার্থী শিবিরর
* ঢাকাই নুরু
* সাকাতি ক্যাম্প
* বাংলাদেশের হৃদয় হতে
* নকশালা পরিচয়ে পরিচিত এক যুবকের কথা
* ওরা আসছে
* মধুপাড়ার যুদ্ধ
* শহিদ আক্কাস
* বেরুবাড়ির বিষণ্ন সন্ধ্যা
* কোথায় যেন গরমিল
* মেজরের গুর্খা মেজাজ
* একজন রাজনীতিবীদের সাথে বৈঠক
* নালাগঞ্জ হাইড আউট
* ধানের ক্ষেতে রৌদ্রছায়া
* ভূইঁয়া খতম,ধৃত সামাদ মাস্টার
* যুদ্ধের বাইরে যুদ্ধ
* বিতাড়িত হায়েনার পাল

”গেরিলা থেকে সম্মুখ যুদ্ধে - ২য় খন্ড” বইটির সূচিপত্রঃ হাইড আউট (দুই)
* হাইড আউটের জীবন
* পরাধীন জীবন
* কালাজোত হাইড আউট
* শাবাশ শামসুদ্দিন
* ঘায়েল তিন রাজাকার
* শত্রুর ফাঁদ
* ক্যাপ্টেন দয়াল সিং
* পাকা সড়ক দখলের লড়াই
* ইন্দিরা গান্ধীকা পাস যায়গা
* গিফট ফ্রম রুমানিয়া
* অপারেশন তালমা
* উড়ে যাওয়া কালভার্ট এ্যাকরোবেটিক
* কাউন্টার অ্যাটাক-অ্যামবুশ
* গণবিচার,পিন্টুদের বেঁচে যাওয়া এবং তনখা প্রাপ্তি
* শত্রুর গাড়ি আটক এবং খতম চার পাকসেনা
* ও আমার দেশের মাটি
* বিষণ্ন বদন সেই মেয়েটি
* আফজালুর রহমান: হাইড আউটের অথিতি
* শহীদ মতিয়ার রহমান
* খান এসেছে
* টু চিটাগাং ভায়া লণ্ডন
* সবার চেতনায় বাংলাদেশ
* মোসলেম মিয়ার বিয়ে
* জগদলহাট আক্রমণ: শালমারা ব্রিজ ধ্বংস
* থুকরিপাড়ার যুদ্ধ
* বিজয় উল্লাস এবং পাকবাহিনীর পাল্টা আক্রমণ
* সোনারবান কতালমা পাড়ের যুদ্ধ
* অন্য কোথাও আবার
* ফিরে আসা সেই প্রিয় নালাগঞ্জে
* এবার টেলিফোন লাইন এবং পাক সড়কের যোগাযোগ বিনষ্ট
* খুঁটির ওপর লটকে থাকা সফিজউদ্দিন
* অমরখানায় সেন্ট্রি সাইলেন্ট
* মুঝে প্রেম করো
* হাবিলদার সুবেদার খতম
* নবাগত এফএফ দল এবং স্বীকৃতির আনন্দ
* বৃদ্ধি মানেই যুদ্ধে যাওয়া
* ভেতরে যেতে হবে, আরো ভেতরে
* পেয়াদাপাড়া হাইড আউট
* আবার আসিব ফিরে
* কমরেড মন্টু
* করতোয়া পাড়ের হাসান মাঝি
* আবার বাচ্চা মিয়ার ভূত দেখা
* হেমকুমারী ইউনিট বেসের এফ.এফ.এল
* কোম্পানি কমান্ডার মালেকের দরবার এবং প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা
* সে এক রাজকন্যা-দিনমজুর গাইডের ভাগ্যে
* খতম রাজাকার কমান্ডার ঘুটু
* মারেয়ার যুদ্ধ
* কমরেড রউফ ও লিজা
* ধরা পড়েছে রাজাকার
* লেলিহান আগুনের শিকার এবং আবার মারেয়ার যুদ্ধ
* জ্বলছে শতবর্ষের বাড়িঘর, সভ্যতা
* কেমন যকরে বাঁচবো আমরা
* স্বর্গ হতে বিধায়
* ভিন্ন ধরনের এক অভিযান
* আমি একজন রাজাকার
* অভূতপূর্ব সেই দৃশ্য
* লড়াইটা সবার
* রেকি মিশন নয়াদিঘি
* মধ্যরাতে বিস্ফোরণ-উড়িয়ে দেয়া হলো পাকিস্তানি বাঙ্কার
* শত্রুমুক্ত দিঘি, ওড়ানো হলো স্বাধীন বাংলা পতাকা
* শবেবরাতের কাকডাকা ভোরে আক্রান্ত মালেক
* অন্ধ জেদ কভার দল নিয়ে এগিয়ে যাওয়া
* নরক যেন গ্রাস করছে সবকিছু
* শহীদ আব্দুল মালেক ও আব্দুল মজিদ
* এবার নিজের ঘাঁটি আক্রমণ
* সবেবরাতের বরাত
* এবার কোথায় যাবো আমরা
* দিনভর শত্রুর অপেক্ষা
* ওগো নদী
* মানিকগঞ্জ বিওপির নাটক
* ছবির মতো গ্রাম-কালিয়াগঞ্জ হাইড আউট
* তরুণ আগন্তুক: সাইফুল
* হামাক খালি জয়বাংলাটা করি দেন
* মণ্ডলের হাট আক্রমণ-খতম রাজাকার কমান্ডার হাতেম আলী
* গলেয়া আক্রমণ , দখল ও খতম দুই রাজাকার
* খালেদ জামান ও মধ্য অক্টোবরের ফ্রন্ট
* আবার নয়াদিঘি অভিযান
* সুশ্রিতার দীপ্তি তার সারা মুখাবয়বে
* লাইলি -মজনু
* রঙরুট
* কালিয়াগঞ্জের যুদ্ধ : যুদ্ধাহত হাসান
* নতুন অ্যাসাইনমেন্ট আবার
এবং অনেক আছে
Title গেরিলা থেকে সম্মুখ যুদ্ধে ১ম ও ২য় খণ্ড
Author
Publisher
ISBN 9847012401125, 9847012403525
Number of Pages 1016
Country বাংলাদেশ
Language বাংলা

Sponsored Products Related To This Item

Reviews and Ratings

5.0

30 Ratings and 15 Reviews

5

2

4

0

3

0

2

0

1

0

sort icon

বাংলাদেশের ঘরে ঘরে সঞ্চয়িতা, গল্পগুচ্ছ, সঞ্চিতা, রূপসীবাংলা, বিষাদসিন্ধুর মতো বইগুলোর পাশাপাশি গেরিলা থেকে সম্মুখযুদ্ধে বইও থাকা জরুরি। এই বইটা মুক্তিযুদ্ধের বই বলে নয়, এই বইটা একজন সাধারণ ছাত্রমুক্তিযোদ্ধা গেরিলা মাহবুব আলমের, যিনি গেরিলা যুদ্ধ থেকে শুরু করে অংশ নিয়েছেন ডিসেম্বরের সম্মুখযুদ্ধে। তাঁর ডায়েরি শুধু এই জন্য নয়, এই বইটায় আমরা পাব উনিশ শ একাত্তর সালের অবরুদ্ধ দিনরাত্রিগুলোয় বিশাল বিস্তারিত বাংলাদেশের জনপদগুলোকে, যেখানে লেখকের বর্ণনার গুণে প্রতিটা চরিত্র জীবন্ত মানুষ হয়ে উঠেছে। সেই চরিত্রের মধ্যে বিএসএফের হিন্দিভাষী কমান্ডার যেমন আছেন, তেমনি আছে গ্রামবাংলার কিশোর রাখাল বালক, গ্রাম্য গৃহবধূ, লাজুক তরুণী। মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মাহবুব আলমের সহযোদ্ধাদের প্রত্যেকের চরিত্র এই বইয়ে ফুটে উঠেছে উপন্যাসের চেয়েও প্রাণবন্ত ভাষায়। মুক্তিযুদ্ধ যে কেবল নেতাদের যুদ্ধ নয়, কেবল সৈনিকদের যুদ্ধ নয়, সাধারণ মানুষের যুদ্ধ, সেই বিবরণ গেরিলা থেকে সম্মুখযুদ্ধে এত জীবন্তভাবে ফুটে উঠেছে যে মনে হয় ফিরে গেছি একাত্তরের দিনাজপুরের বীরগঞ্জে বা সীমান্ত এলাকায়।

একটু উদ্ধৃত করি:
‘সজিম উদ্দিন আজকের রাতের গাইড। … যাত্রার আগে নিজের গ্রামে ছুটে যেতে হবে শুনে ওর চোখমুখ উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে এক অনাবিল আনন্দে। এ অপারেশনে গেলে সে তার বাড়িতে যেতে পারবে, আর সেখানে অপেক্ষা করছে ফুটফুটে এক সুশ্যামলা নারী, সজিম উদ্দিনের স্ত্রী।…

একটা কুপি হাতে সজিম উদ্দিনের বউ পথ দেখিয়ে চললো। সজিম উদ্দিন তার পাশে পাশে। যেতে যেতে অনুচ্চ স্বরে তার বউকে বলছে, খোকার মা, তুই ভালে আছিস গে? মাথার আলগা আঁচল খসে পড়েছে, কুপির কাঁপা নরম আলোয় উদ্ভাসিত এক উচ্ছল মুখ। বাংলার চিরন্তন নারীর এক ভালোবাসার মুখ সেটা। দ্রুতই সিদ্ধান্ত নিই, একজন গ্রামের সামান্য নারীর অনাবিল খুশির আনন্দটুকু কেড়ে নেয়া ঠিক হবে না। যা হবে হোক। সজিম উদ্দিন আজ থাকবে বাড়িতে। আজকে রাতে ওর ছুটি।’ কী আর এমন ঘটে এই বর্ণিত অংশে, যুদ্ধ নয়, গোলাগুলি নয়, সামান্য একটু বর্ণনা। কিন্তু মনটা ছুঁয়ে যায় একেবারে।

আবার আছে সহযোদ্ধা হারানোর কষ্টকর বর্ণনা। ‘আক্কাস গুলি খেলো। আক্কাসের সেকশনের সাথে আমার নিজের অবস্থান। যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকেই আমার পাশে শোয়া অবস্থানে থেকে শত্রুর মোকাবিলা করছিল সে। সুঠাম শরীরের অধিকারী, ঠাণ্ডা মেজাজের মিতভাষী ছেলে, সেকশন কমান্ডার আক্কাস। রংপুর জেলার কালীগঞ্জ এলাকায় তার বাড়ি। ম্যাট্রিক পাস করে কলেজে প্রথম বর্ষে পড়ার সময় প্রাণের টানে চলে এসেছে সরাসরি যুদ্ধের ময়দানে। যুদ্ধের মাস খানেক আগে তার বিয়ে হয়েছে।…আক্কাস দাঁড়িয়ে তার হাত স্টেনগানে ম্যাগাজিন ভরছে। ঠিক এই সময় হঠাৎ করে বাঁ হাতে বুক চেপে ধরে ও হাঁটু গেড়ে বসে পড়ে। তারপরেই আর্তচিৎকার করে ওঠে সে, …গুলি লেগেছে মাহবুব ভাই, আমাকে বাঁচান।’

আহারে, আমার মন কেমন করে। কত বয়স ছিল আক্কাসের? ১৮? কত বয়স ছিল তার সদ্যবিধবা কিশোরী বউটির? বেরুবাড়ি-হাড়িভাসা সড়ক, যার নাম দেওয়া হয়েছিল জয়বাংলা সড়ক, সেখানে সমাহিত করা হয়েছিল আক্কাসকে। এই আক্কাসদের কথা কেউ জানবে না? কোথাও লেখা থাকবে না?

মাহবুব আলম ভূমিকায় লিখেছেন, ‘শহীদুল ইসলাম বাবলু, আমার সে দিনের যুদ্ধ সময়কার সাথী, তার অভিযোগ ছিল, আমাদের কথা তো কেউ লিখল না।… মেরুদণ্ডে গুলি খাওয়া হাসান, রংপুরের গঙ্গাচড়ার ছেলে, তারও অভিযোগ, তার কথা কেউ লিখল না। পঞ্চগড়ের ছেলে জহিরুল, গ্রেনেডের আঘাতে ছিন্নভিন্ন হয়ে গিয়েছিল যার শরীর, কিছুদিন আগে অভিমানাহত হয়ে বলেছিলো, সবকিছু ব্যর্থ হয়ে গেল।’

না, সবকিছু ব্যর্থ হয়নি। এই সব নাম না জানা যোদ্ধা আর শহীদের অনেকের কথা লেখা হয়েছে দুই খণ্ডের বই গেরিলা থেকে সম্মুখযুদ্ধেতে, যে বই ইতিহাসের ইতিহাস, উপন্যাসের উপন্যাস, মহাকাব্যের মহাকাব্য। এটি আমার পড়া শ্রেষ্ঠ গ্রন্থগুলোর একটা। সব বাংলাদেশির অবশ্যপাঠ্য।

বইটা শুরু হয়েছে অবশ্য ১৭ ডিসেম্বর দিয়ে। পরের পৃষ্ঠাতেই ১৬ ডিসেম্বরের ডায়েরির পাতা।
‘১৬ তারিখে বিকেল চারটার দিকে ওয়াকিটকি সেটে ক্যাপ্টেন শাহরিয়ারের গলা ভেসে এসেছিল হঠাৎ করে।
—টু ফোর ওয়ান টু ফোর ওয়ান—ক্যান ইউ হিয়ার মি? ওভার।
—ওয়ান ফোর টু ওয়ান ফোর টু—লাউড এন্ড ক্লিয়ার— ওভার।
—কংগ্রাচুলেশন্স মাহবুব। বিরাট সুখবর। আজ বিকেলে ঢাকা রেসকোর্সে পাকবাহিনী সারেন্ডার করেছে। ওভার।
—কংগ্রাচুলেশন্স স্যার। বিরাট সুখবর। যুদ্ধ তাহলে শেষ। স্বাধীনতা এলো, ওভার। …

‘কথোপকথন শেষে সুবেদার খালেক জড়িয়ে ধরলেন। হাউমাউ করে কেঁদে ফেললেন। পাশে দাঁড়ানো আমার কোম্পানি সেকেন্ড ইন কমান্ড পিন্টু। সেও জাপ্টে জড়িয়ে ধরল আমাকে। তারপর ছেড়ে দিয়ে নাচার ভঙ্গিতে হাত ওপরে তুলে চিৎকার করতে লাগল, ‘স্বাধীনতা স্বাধীনতা— মুক্তি মুক্তি—সারেন্ডার সারেন্ডার’ এবং সবশেষে তার কণ্ঠ থেকে বেরিয়ে এলো সেই চিরায়ত শ্লোগান, জয় বাংলা।’

মাহবুব আলম, আপনার কাছে একজন বাঙালি হিসেবে আমি ক্ষমা চাই, আপনার সরকারি চাকরিজীবনে মুক্তিযোদ্ধা হওয়ার অপরাধে আপনার পদোন্নতি হয়নি, কিন্তু তারও চেয়ে বেশি ক্ষমা চাই যখন লোকে বলে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে এই দেশে ভালো বই লেখা হয়নি। তারা এ কথা বলে, কারণ তারা আপনার বই দুটো পড়েনি। পড়েনি, কারণ আমরা তাদের জানাতে পারিনি এই বইয়ের খবর। আমি আমার পাঠকদের মিনতি করি, বাংলাদেশে ভালো বই লেখা হয়নি, মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ভালো বই নেই, এ কথা বলার আগে যেন তাঁরা মাহবুব আলমের লেখা গেরিলা থেকে সম্মুখযুদ্ধে বইটা মন দিয়ে পড়েন।

Read More

Was this review helpful to you?

মাহবুব আলম যখন লক্ষ্মীপুরের জেলা প্রশাসক হিসেবে পদায়ন ছিলেন তখন আমার বাবা পেয়ারুল ইসলাম তার বডিগার্ড ছিলেন।তখন তিনি এই বইয়ের দুটিখন্ড আমার আব্বুকে উপহার হিসেবে দেন।আমি তখন ছোট।আমার বয়স যখন ১৩ বছর তখন আমি এই বই দুটি পড়া শুরু করি।পড়া শেষ হওয়ার পর মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে না পারার বেদনা আমাকে গ্রাস করেছিল।লেখক মহোদয় অনন্যভাবে তার যুদ্ধের কথা তার সহযোদ্ধা বন্ধুদের কথা এই বইয়ে ফুটিয়ে তুলেছেন।সত্যিই আমি তাকে দেখার জন্যে পাগল হয়ে গিয়েছিলাম,যিনি একজন মহান যোদ্ধা ও সাহসী কমান্ডার ছিলেন।আমি সত্যিই আপনার বীরত্বের প্রশংসা করি।এই বই মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের এক অমূল্য সম্পদ।আপনারা এই বই পড়ে রণাঙ্গনের সেই কষ্টের দিনগুলিকে বাস্তবে উপলব্ধি করার ক্ষমতা অর্জন করবেন।স্যালুট স্যারকে।

Read More

Was this review helpful to you?

#বুক_রিভিউঃ_গেরিলা_থেকে_সম্মুখ_যুদ্ধে (১ম ও ২য় খন্ড)
লেখকঃ মাহবুব আলম
প্রকাশনীঃ সাহিত্য প্রকাশ
মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ইতোমধ্যে অনেক কলম সৈনিক তাদের নিজ নিজ দৃষ্টিকোণ হতে অনেক গল্প,উপন্যাস কিংবা প্রবন্ধ লিখেছেন।কেউবা মুক্তিযুদ্ধের সময় সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা হবার দরুন ডিপ্লোম্যাটিক দিক নিয়ে লিখেছেন আবার কেউ কেউ নিয়মিত বাহিনীর নেতৃত্ব দেবার অভিজ্ঞতা হতে সম্মুখ সমরের নানা দিক তুলে ধরার প্রয়াস পেয়েছেন। তবে অধিকাংশ বইয়ে রাজধানী কেন্দ্রিক মুক্তিযুদ্ধের চিত্র উঠে এসেছে। রাজধানীর বাহিরে গ্রাম-গঞ্জের বিশেষ করে উওর বঙ্গের মুক্তিযোদ্ধাদের তৎপরতা কিংবা মুক্তিযুদ্ধের চিত্র গুটিকয়েক বইয়ে উঠে এসেছে। "গেরিলা থেকে সম্মুখ যুদ্ধে "র মাধ্যমে লেখক সেই চরম উত্তেজনাকর মুহূর্তগুলোর দুঃসাহসিক অভিযানের বাস্তব চিত্র তুলে ধরেছেন। এখানকার অধিকাংশ বর্ণনা, দিন,তারিখ লেখকের নিজের "ওয়ার ফিল্ড ডায়েরি" হতে নেয়া। এখানকার বর্ণনার ক্ষেত্রে লেখক চেষ্টা করছেন যথাসাধ্য নির্মোহ থাকতে। তাই তো তিনি দু'দশক ধরে লিখেছেন '৭১ এর উত্তাল দিনগুলোতে প্রত্যক্ষ করা সেইসব রক্তিম দিনগুলোর স্মৃতিকথা। "গেরিলা থেকে সম্মুখ যুদ্ধে'র প্রথম খন্ডে যুদ্ধ প্রস্তুতি, যুদ্ধ যাত্রা এবং গেরিলা যুদ্ধের কথা বলা হয়েছে। যুদ্ধ যাত্রা এবং হাইড আউট প্রথম খন্ডে। আগস্ট'৭১ পর্যন্ত মুক্তিযুদ্ধ সংগঠন এবং গেরিলা যুদ্ধের গতিপ্রকৃতির বর্ণনা দেয়া হয়েছে তাতে। দ্বিতীয় খন্ডে রয়েছে হাইড আউট-২, হাইড আউট-৩ এবং সম্মুখ যুদ্ধ পর্ব।
গল্পের শুরুতেই আছে ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষণ শিবির 'মুরতি 'ক্যাম্পের ৩ হাজার ফুট উঁচুতে উওরাঞ্চলের মুক্তিযোদ্ধাদের গেরিলা প্রশিক্ষণ নেবার বর্ণনা.... তারপর 'মুরতি' ক্যাম্পের প্রশিক্ষণ শেষে চাউল হাটি ইউনিট বেসের ভাটপাড়ায় ক্যাম্প স্থাপন।২৭ জুন প্রথম অপারেশন যাত্রার মধ্যদিয়ে শুরু হওয়া গেরিলা যুদ্ধ এগিয়ে চলে ২৭ নভেম্বর পর্যন্ত নানা প্রতিকুল অবস্থার মধ্যদিয়ে। উঠে এসেছে ভারতীয় সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে থেকে এসব অপারেশনের প্রতিদিনকার জীবন্ত চিত্র,সাথে যোগ করেছেন নিজেদের নিয়মিত বাহিনীর কমান্ডিং অফিসারের অধীনে থেকে যুদ্ধ করতে না পারার আফসোস.. ....সাথে অকপটে তুলে ধরেছেন প্রবাসি সরকারের সমন্বয়হীনতার কথা যদিও শেষের দিকে লেখকের এই অপ্রাপ্তিটা আর স্থায়ী হয় নি.....
লেখক তার প্রতিটি অপারেশন সহ প্রত্যাহিক জীবন-যাপনের সীমাহীন কষ্ট কিংবা প্রাপ্তির বর্ণনা এমনভাবে তুলে ধরেছেন যার মাধ্যমে পাঠকেরা নিজের অজান্তেই হয়ে উঠে গেরিলা যুদ্ধের একেকজন সদস্য।
প্রতিটা পাঠক যেন পঞ্চগড়,তালমা,ভেতরগর,সোনারবান,নালাগঞ্জ কিংবা অমরখানা,জগদল হাট অপারেশনে কাধেঁ স্টেনগান উচিয়ে বন জঙ্গল কিংবা পাটক্ষেতের ভেতর দিয়ে যুদ্ধ অবতীর্ণ হয়। ম্যাগাজিন ভরা,ব্রাশ ওপেন করা,সেন্ট্রি মোতায়েন, রেকি করা, পেট্রল ডিউটি, রিট্রিট,ক্যামোফ্লেজ কিংবা হাইড আউটের মাঝে একেকজন পাঠক যেন নিজেদের কে হারিয়ে ফেলে অহিদার, পিন্টু, গোলাম গউস কিংবা কমান্ডার মাহবুবের মাঝে। কিছুক্ষনের জন্য হলেও টাইম মেশিনে করে যেন নিয়ে যায় যুদ্ধ দিনের উত্তাল দিনগুলোতে।
#বাদ_যায়_নি_love_

Read More

Was this review helpful to you?

গেরিলা থেকে সম্মুখ যুদ্ধে (প্রথম খন্ড)
কোন রিভিউ না দেখেই বইটা কিনেছিলাম। তারপর পড়া শুরু করলে একদম এক নিঃশ্বাসে পড়ে শেষ করলাম। লেখক আমাকে মোহবিস্ট করে নিয়ে গিয়েছিলেন একাত্তরের রনাঙ্গনে। পড়তে পড়তে আমিও হয়ে উঠেছিলাম একজন গেরিলা যোদ্ধা। লেখক মাহবুব আলম হয়ে উঠেছিলেন আমার কমান্ডার মাহবুব ভাই। মনে হচ্ছিল আমি তাদের সাথে বিচরন করছি ভেতরগড়, নালাগঞ্জ, সোনারবান সকল যায়গায়। পিন্টু, আহিদার, মুসাদের সহযোদ্ধা আমিও হয়েছিলাম। গোলাম গউস শহীদ হলে চোখের পানির সাথে চোয়ালবদ্ধ প্রতিজ্ঞা করেছি প্রতিশোধ নেয়ার।
ধন্যবাদ লেখখ মাহবুব আলম কে। আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধ দেখিনি তাদের জন্য এই বইটি আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের ত্যাগ, লড়াই, গুরুত্ব অনুভব করার একটি সঠিক উপায়।
বইটি সংগ্রহ রাখলাম আমার পরবর্তী প্রজন্মের জন্য, যেন তারা আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধকে আমার মত করে উপলব্ধি করতে পারে।

Read More

Was this review helpful to you?

সুনিপুণ বর্ণনা। মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযোদ্ধাদের জানতে হলে অবশ্যই বইটি পড়তে হবে৷ ১ম খন্ডটি পড়লে, ২ টি পড়তে বাধ্য হবেন

Read More

Was this review helpful to you?

খুবই ভাল একটা বই।মুক্তিযুদ্ধাদের সংগ্রাম সম্পর্কে জানতে হলে এই বইটি আপনাকে পড়তেই হবে ।

Read More

Was this review helpful to you?

Nice

Read More

Was this review helpful to you?

বাংলাদেশের ঘরে ঘরে সঞ্চয়িতা, গল্পগুচ্ছ, সঞ্চিতা, রূপসীবাংলা, বিষাদসিন্ধুর মতো বইগুলোর পাশাপাশি গেরিলা থেকে সম্মুখযুদ্ধে বইও থাকা জরুরি। এই বইটা মুক্তিযুদ্ধের বই বলে নয়, এই বইটা একজন সাধারণ ছাত্রমুক্তিযোদ্ধা গেরিলা মাহবুব আলমের, যিনি গেরিলা যুদ্ধ থেকে শুরু করে অংশ নিয়েছেন ডিসেম্বরের সম্মুখযুদ্ধে। তাঁর ডায়েরি শুধু এই জন্য নয়, এই বইটায় আমরা পাব উনিশ শ একাত্তর সালের অবরুদ্ধ দিনরাত্রিগুলোয় বিশাল বিস্তারিত বাংলাদেশের জনপদগুলোকে, যেখানে লেখকের বর্ণনার গুণে প্রতিটা চরিত্র জীবন্ত মানুষ হয়ে উঠেছে। সেই চরিত্রের মধ্যে বিএসএফের হিন্দিভাষী কমান্ডার যেমন আছেন, তেমনি আছে গ্রামবাংলার কিশোর রাখাল বালক, গ্রাম্য গৃহবধূ, লাজুক তরুণী। মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মাহবুব আলমের সহযোদ্ধাদের প্রত্যেকের চরিত্র এই বইয়ে ফুটে উঠেছে উপন্যাসের চেয়েও প্রাণবন্ত ভাষায়। মুক্তিযুদ্ধ যে কেবল নেতাদের যুদ্ধ নয়, কেবল সৈনিকদের যুদ্ধ নয়, সাধারণ মানুষের যুদ্ধ, সেই বিবরণ গেরিলা থেকে সম্মুখযুদ্ধে এত জীবন্তভাবে ফুটে উঠেছে যে মনে হয় ফিরে গেছি একাত্তরের দিনাজপুরের বীরগঞ্জে বা সীমান্ত এলাকায়। একটু উদ্ধৃত করি:
‘সজিম উদ্দিন আজকের রাতের গাইড। … যাত্রার আগে নিজের গ্রামে ছুটে যেতে হবে শুনে ওর চোখমুখ উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে এক অনাবিল আনন্দে। এ অপারেশনে গেলে সে তার বাড়িতে যেতে পারবে, আর সেখানে অপেক্ষা করছে ফুটফুটে এক সুশ্যামলা নারী, সজিম উদ্দিনের স্ত্রী।…
একটা কুপি হাতে সজিম উদ্দিনের বউ পথ দেখিয়ে চললো। সজিম উদ্দিন তার পাশে পাশে। যেতে যেতে অনুচ্চ স্বরে তার বউকে বলছে, খোকার মা, তুই ভালে আছিস গে? মাথার আলগা আঁচল খসে পড়েছে, কুপির কাঁপা নরম আলোয় উদ্ভাসিত এক উচ্ছল মুখ। বাংলার চিরন্তন নারীর এক ভালোবাসার মুখ সেটা। দ্রুতই সিদ্ধান্ত নিই, একজন গ্রামের সামান্য নারীর অনাবিল খুশির আনন্দটুকু কেড়ে নেয়া ঠিক হবে না। যা হবে হোক। সজিম উদ্দিন আজ থাকবে বাড়িতে। আজকে রাতে ওর ছুটি।’ কী আর এমন ঘটে এই বর্ণিত অংশে, যুদ্ধ নয়, গোলাগুলি নয়, সামান্য একটু বর্ণনা। কিন্তু মনটা ছুঁয়ে যায় একেবারে।
আবার আছে সহযোদ্ধা হারানোর কষ্টকর বর্ণনা। ‘আক্কাস গুলি খেলো। আক্কাসের সেকশনের সাথে আমার নিজের অবস্থান। যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকেই আমার পাশে শোয়া অবস্থানে থেকে শত্রুর মোকাবিলা করছিল সে। সুঠাম শরীরের অধিকারী, ঠাণ্ডা মেজাজের মিতভাষী ছেলে, সেকশন কমান্ডার আক্কাস। রংপুর জেলার কালীগঞ্জ এলাকায় তার বাড়ি। ম্যাট্রিক পাস করে কলেজে প্রথম বর্ষে পড়ার সময় প্রাণের টানে চলে এসেছে সরাসরি যুদ্ধের ময়দানে। যুদ্ধের মাস খানেক আগে তার বিয়ে হয়েছে।…আক্কাস দাঁড়িয়ে তার হাত স্টেনগানে ম্যাগাজিন ভরছে। ঠিক এই সময় হঠাৎ করে বাঁ হাতে বুক চেপে ধরে ও হাঁটু গেড়ে বসে পড়ে। তারপরেই আর্তচিৎকার করে ওঠে সে, …গুলি লেগেছে মাহবুব ভাই, আমাকে বাঁচান।’
আহারে, আমার মন কেমন করে। কত বয়স ছিল আক্কাসের? ১৮? কত বয়স ছিল তার সদ্যবিধবা কিশোরী বউটির? বেরুবাড়ি-হাড়িভাসা সড়ক, যার নাম দেওয়া হয়েছিল জয়বাংলা সড়ক, সেখানে সমাহিত করা হয়েছিল আক্কাসকে। এই আক্কাসদের কথা কেউ জানবে না? কোথাও লেখা থাকবে না?
মাহবুব আলম ভূমিকায় লিখেছেন, ‘শহীদুল ইসলাম বাবলু, আমার সে দিনের যুদ্ধ সময়কার সাথী, তার অভিযোগ ছিল, আমাদের কথা তো কেউ লিখল না।… মেরুদণ্ডে গুলি খাওয়া হাসান, রংপুরের গঙ্গাচড়ার ছেলে, তারও অভিযোগ, তার কথা কেউ লিখল না। পঞ্চগড়ের ছেলে জহিরুল, গ্রেনেডের আঘাতে ছিন্নভিন্ন হয়ে গিয়েছিল যার শরীর, কিছুদিন আগে অভিমানাহত হয়ে বলেছিলো, সবকিছু ব্যর্থ হয়ে গেল।’
না, সবকিছু ব্যর্থ হয়নি। এই সব নাম না জানা যোদ্ধা আর শহীদের অনেকের কথা লেখা হয়েছে দুই খণ্ডের বই গেরিলা থেকে সম্মুখযুদ্ধেতে, যে বই ইতিহাসের ইতিহাস, উপন্যাসের উপন্যাস, মহাকাব্যের মহাকাব্য। এটি আমার পড়া শ্রেষ্ঠ গ্রন্থগুলোর একটা। সব বাংলাদেশির অবশ্যপাঠ্য।
বইটা শুরু হয়েছে অবশ্য ১৭ ডিসেম্বর দিয়ে। পরের পৃষ্ঠাতেই ১৬ ডিসেম্বরের ডায়েরির পাতা।
‘১৬ তারিখে বিকেল চারটার দিকে ওয়াকিটকি সেটে ক্যাপ্টেন শাহরিয়ারের গলা ভেসে এসেছিল হঠাৎ করে।
—টু ফোর ওয়ান টু ফোর ওয়ান—ক্যান ইউ হিয়ার মি? ওভার।
—ওয়ান ফোর টু ওয়ান ফোর টু—লাউড এন্ড ক্লিয়ার— ওভার।
—কংগ্রাচুলেশন্স মাহবুব। বিরাট সুখবর। আজ বিকেলে ঢাকা রেসকোর্সে পাকবাহিনী সারেন্ডার করেছে। ওভার।
—কংগ্রাচুলেশন্স স্যার। বিরাট সুখবর। যুদ্ধ তাহলে শেষ। স্বাধীনতা এলো, ওভার। …
‘কথোপকথন শেষে সুবেদার খালেক জড়িয়ে ধরলেন। হাউমাউ করে কেঁদে ফেললেন। পাশে দাঁড়ানো আমার কোম্পানি সেকেন্ড ইন কমান্ড পিন্টু। সেও জাপ্টে জড়িয়ে ধরল আমাকে। তারপর ছেড়ে দিয়ে নাচার ভঙ্গিতে হাত ওপরে তুলে চিৎকার করতে লাগল, ‘স্বাধীনতা স্বাধীনতা— মুক্তি মুক্তি—সারেন্ডার সারেন্ডার’ এবং সবশেষে তার কণ্ঠ থেকে বেরিয়ে এলো সেই চিরায়ত শ্লোগান, জয় বাংলা।’
মাহবুব আলম, আপনার কাছে একজন বাঙালি হিসেবে আমি ক্ষমা চাই, আপনার সরকারি চাকরিজীবনে মুক্তিযোদ্ধা হওয়ার অপরাধে আপনার পদোন্নতি হয়নি, কিন্তু তারও চেয়ে বেশি ক্ষমা চাই যখন লোকে বলে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে এই দেশে ভালো বই লেখা হয়নি। তারা এ কথা বলে, কারণ তারা আপনার বই দুটো পড়েনি। পড়েনি, কারণ আমরা তাদের জানাতে পারিনি এই বইয়ের খবর। আমি আমার পাঠকদের মিনতি করি, বাংলাদেশে ভালো বই লেখা হয়নি, মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ভালো বই নেই, এ কথা বলার আগে যেন তাঁরা মাহবুব আলমের লেখা গেরিলা থেকে সম্মুখযুদ্ধে বইটা মন দিয়ে পড়েন।

Read More

Was this review helpful to you?


রেটিং: ৫/৫
প্রথমে একটু ভূমিকা করে নিই। ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হওয়ার পর ১ম বছর আমি কাটিয়েছি পাবলিক লাইব্রেরিতে। সেসময় আমার আগ্রহ ছিল মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক বই প্রধানত সৃতিকথায়। এবং আমি পাবলিক লাইব্রেরির মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক প্রতেকটা বই একবার হলেও উল্টেপাল্টে দেখেছি।কিন্তু আমার কাছে শ্রেষ্ঠ বই মনে হয়েছে কলেজ জীবনে পড়া "গেরিলা থেকে সম্মুখ যুদ্ধে"।

বইয়ের ভূমিকাতে লেখক লিখেছেন, "ভাবতাম আমাদের নিয়ে লেখা হবে গল্প, কবিতা, নাটক। গোলাম গউস, সেই ছেলেটা যে সঙ্গিদের বাঁচাতে নিজে শহীদ হয়েছিল, আক্কাস, পিন্টু, অহিদার সহ আমাদের নিয়ে লেখা হবে গান।কিন্তু কেউ আমাদের কথা বলেনি।....... এতদিন পরে (৮০'র দশক) লিখতে বসার কারন, সময়ের ব্যবধানে আবেগ কমে আসে, নির্মোহভাবে সবকিছু বিচার করা যায়।"

লেখক বইটি লিখেছেন তার ব্যক্তিগত ডায়েরিকে অবলম্বন করে স্মৃতির সাহায্য নিয়ে।

বইয়ের শুরুতে আছে ভারতে প্রশিক্ষণ নেয়ার বিবরন। প্রশিক্ষনকালীন অসহ্য পরিশ্রমের বর্ননা।

তারপর যুদ্ধে যাওয়ার বিবরন। প্রথম প্রথম ভারতীয় সেনা কর্মকর্তাগন ফ্রিডম ফাইটার বা এফ.এফ. দের বিশ্বাস করতেন না।কিভাবে মাত্র একটি গ্রেনেড, একটি এস.এল.আর. দিয়ে বাংলাদেশের ভিতরে প্রেরণ করতেন।

তারপর লেখকের কোম্পানি কমান্ডার হওয়া, প্রিয় বন্ধু পিন্টুর কাছ আলাদা হয়ে যাওয়া, বাংলাদেশের ভিতরে হাইডআউটে থেকে যুদ্ধ করা, পাকিস্তানি সেনাদের আক্রমন সবকিছু ছবির মত বর্ণনা করেছেন লেখক।

প্রতিটা ঘটনা মনে হবে আপনার সামনে ঘটছে। পাঠকের মনে হবে তিনিও ঘুরে বেড়াচ্ছেন পঞ্চগড়ের বনে, জঙ্গলে ধানক্ষেতে।

রাজাকার ধরা, বিভিন্ন ব্রিজ / কালভার্ট ধ্বংস করা, পাকিস্তানি সেনা ঘাটিতে আক্রমন, হাটের ভিতর দিনদুপুরে মাত্র তিনজনে অভিযান প্রত্যকটা জীবন্ত ঘটনা মনে হবে।

আমি প্রথম খন্ড পড়ে ২য় খন্ড পাগলের মত খুজেছি এবং পাওয়ার পরে বহুবার পুরো বইটি পড়েছি। বিশেষ করে অভিযানগুলোর বর্ণনা।

২য় খন্ডের শেষদিকে আছে যৌথ কমান্ডের অধীনে সম্মুখ যুদ্ধের বিবরন, পরাজিত পাকিস্তানি ক্যাম্প থেকে নারীদের উদ্ধার করা, হেলমেটে তরকারী ঢেলে খাওয়া সহ একজন সাধারন মুক্তিযোদ্ধার চোখে সম্পূর্ণ যুদ্ধটা।

এছাড়া লেখকের প্রিয় মেয়েটি, যে রিক্সা নিয়ে রাজকন্যার মত কলেজে যেত, যাকে লেখক খুজে বের করেন শরনার্থী শিবিরে, তার জন্য লেখকের তৃষ্ণা, লেখকের সহকারী পিন্টুর রবীন্দ্র সঙ্গীত, এবং হিউমার বইটিকে দিয়েছে অন্য মাত্রা।

যারা জানতে চান মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে , কিভাবে কত প্রতিকূলতার মধ্যে মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধ করেছেন, কেন তারা স্বাধীনতা চেয়েছেন, তাদের জন্য অবশ্যপাঠ্য বই। থ্রিলারপ্রেমিদের জন্য আদর্শ বই, কারন এটা বাস্তব জীবনের থ্রিলার।

বইটা প্রথম দেখায় বড় মনে হতে পারে। কিন্তু শুরু করার পর মনে হবে যেন দ্রুতই শেষ হয়ে গেল।

আমার পড়া মুক্তিযুদ্ধের শ্রেষ্ঠ বই।

Read More

Was this review helpful to you?

বই এর সাথে আমার সম্পর্ক অনেক পুরাতন। বাড়ির না পড়া বই গুলো আমাকে সবসময় যেন ভেঙ্গায়, এখনো আমাদের পড়তে পারলা না! কারোটা কি তুমি? যাই হোক, আমি যখন ক্লাস সেভেনে উঠলাম, সিদ্ধান্ত নিলাম, বড় হয়ে গেছি, এবার মোটা বই পড়া শুরু করবো। প্রথমেই চোখ বন্ধ করে হাতে নিলাম আমার সমসাময়িক চিরচেনা সেই বইটা। বইটা হাতে নিয়েই বদলে গেলাম আমি। স্থান কাল পাত্র ভুলে বাস করা শুরু করলাম সেই বইটার পাতায় পাতায়। রংপুরের আমাদের ঝোলানো বারান্দাটাকে হাইড আউট বানালাম। কালো Shirtটা পরে ,কাঁধে স্টেনগান টা ঝুলিয়ে পিন্টু, মূসা, আহিদারদের brief করতে লাগলাম। আমি গ্রামের রাস্তায় হেটে হেটে ক্লান্ত হলাম। গভীর রাতে পাকিস্তানী ক্যাম্পে দলবল নিয়ে হামলা করতাম ,ফিরে এসেই আবার ডায়েরীটা নিয়ে বসে পরতাম ...গোলাম গোউসকে কবর দিতে গিয়ে আমি কত্ত কেঁদেছি !গল্পের নায়কের প্রেমে পরা প্রতিটা পাঠিকার একটা ছেলেমানুষি স্বভাব। সেই সুন্দরী মেয়েটা হয়ে আমিও যখন কালো শার্ট আলা ছেলেটার প্রেমে পরতেই যাবো,মেয়েটার মত বিরহে চোখের পানি ফেলবো, অমনি মা আমাকে টেনে বাস্তবে নিয়ে আসলো। ভাত খাওয়ার একটা timetable আছে, না খেলে বলে দিবা তোমার জন্য চাল দিবোনা।
আমার চোখের পানি থতমত খেয়ে স্থান কাল পাত্রে আমাকে ফিরিয়ে আনলো। ধুৎ আমি তো সেই মেয়েটারই মেয়ে।পড়তে পড়তে আমি আবার ভুলে যেতাম আমি কে! খুব ইচ্ছা করতো একবার যদি দেখতে পারতাম ঐ সব জায়গা গুলো,ঐ সব নায়কদের। পারবো কি?
পেরেছি, কালো শার্ট আলা ছেলেটার হাত ধরেই ওসব জায়গায় গিয়েছি।নায়ক চাচুদের সামনে বসে চোখ বড়াবড় করে কত যুদ্ধের গল্প শুনেছি, এখনও শুনি।যেসব জায়গায় মিল পাই, খুশিতে লাফিয়ে উঠি, বলতে ইচ্ছা করে,আরে, আমিও তো ছিলাম ওখানে, ভুলে গেলেন এত তাড়াতাড়ি ?বলা হয় না।সব কিছু বলতে হয়না....

Read More

Was this review helpful to you?

মাহবুব আলম যখন লক্ষ্মীপুরের জেলা প্রশাসক হিসেবে পদায়ন ছিলেন তখন আমার বাবা পেয়ারুল ইসলাম তার বডিগার্ড ছিলেন।তখন তিনি এই বইয়ের দুটিখন্ড আমার আব্বুকে উপহার হিসেবে দেন।আমি তখন ছোট।আমার বয়স যখন ১৩ বছর তখন আমি এই বই দুটি পড়া শুরু করি।পড়া শেষ হওয়ার পর মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে না পারার বেদনা আমাকে গ্রাস করেছিল।লেখক মহোদয় অনন্যভাবে তার যুদ্ধের কথা তার সহযোদ্ধা বন্ধুদের কথা এই বইয়ে ফুটিয়ে তুলেছেন।সত্যিই আমি তাকে দেখার জন্যে পাগল হয়ে গিয়েছিলাম,যিনি একজন মহান যোদ্ধা ও সাহসী কমান্ডার ছিলেন।আমি সত্যিই আপনার বীরত্বের প্রশংসা করি।এই বই মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের এক অমূল্য সম্পদ।আপনারা এই বই পড়ে রণাঙ্গনের সেই কষ্টের দিনগুলিকে বাস্তবে উপলব্ধি করার ক্ষমতা অর্জন করবেন।স্যালুট স্যারকে।

Read More

Was this review helpful to you?

আমার পড়া সবচেয়ে ভালো বই মুক্তিযুদ্ধের উপরে। এত প্রানবন্ত লেখা যে পড়ার সময় মনে হচ্ছিল যে আমিই যেন যুদ্ধ করছি ধান খেতের মধ্যে লুকিয়ে থেকে। এই বই কেউ না পড়লে আমার মতে, বিশাল মিস।

Read More

Was this review helpful to you?

সুনিপুন বর্ণনা। জীবন্ত একটা বই। বইটি পড়লে মনে হবে, নিজেই যুদ্ধক্ষেত্রে আছি।

Read More

Was this review helpful to you?

Excellnet

Read More

Was this review helpful to you?

Nice one

Read More

Was this review helpful to you?

Product Q/A

Have a question regarding the product? Ask Us

Customers Also Bought

loading

Similar Category Best Selling Books

prize book-reading point
Superstore
Up To 65% Off
Recently Viewed
cash

Cash on delivery

Pay cash at your doorstep

service

Delivery

All over Bangladesh

return

Happy return

7 days return facility

0 Item(s)

Subtotal:

Customers Also Bought

Are you sure to remove this from bookshelf?

Write a Review

গেরিলা থেকে সম্মুখ যুদ্ধে ১ম ও ২য় খণ্ড

মুক্তিযোদ্ধা মাহবুব আলম

৳ 1,320 ৳1650.0

Please rate this product