বইয়ের ফ্ল্যাপ ............. সৌখিন ফটোগ্রাফার শুভ্র। তার পৃথিবী মমতাহীন শূন্যতায় ভরা। একে একে কাছের মানুষদের প্রস্থান তার জীবনকে ক্যামেরার ক্লিকের সাথে বন্দি করে ফেলে। এক সময় তার নিঃসঙ্গ জীবনে আসে দুঃখ ভাগ করে নেয়ায় আগ্রহী মানুষেরা। হয়তো তারা একই মানুষ। ভিন্ন তাদের নাম। তারা সেতু-ঋতু-রূপা অথবা স্বাতী। যারা শুভ্র’র মনস্তাত্ত্বিক ভাবনা-যৌন বিশ্বাস-উড়ন্ত নেশা ও বিপন্ন ক্ষতের সাথে ইচ্ছায় অনিচ্ছায় জড়িয়ে যায়। অথবা তারা কেউ না। শুধু শুভ্র। শুধু নিঃসঙ্গ একজন মানুষ। নিজস্বতায় নিমগ্ন। যে ক্রমশ ঢুকে যায় অচেনা এক জগতে! নিষিদ্ধ ভাষা ও চিঠির ভাঁজে... ‘গুহা’ যৌন বিশ্বাস, ব্যক্তি চিন্তার স্বাধীনতা, সমকালীন পীড়া ও নারীবাদ-নারী সামাজ চিন্তা ভিত্তিক একটি রোমান্টিক পত্রোপন্যাস... ভূমিকা একুশ শতকের এই সময়ে চিঠি ? না এই সময়ে কেউ চিঠি লিখে না! ব্যস্ত সময় মানুষকে নিজস্বতা থেকে ক্রমশই দূরে সরিয়ে দিচ্ছে। নিজের সাথে নিজের সম্পর্কও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। সময়ের দৌড়ে আবেগহীন সবাই—কেবল ছুটছে। এই ছোটাছুটির মাঝেও কেউ কেউ নিজস্বতায় ডুবে থাকতে পছন্দ করেন। ডুবে থেকে নিজেকে আবিষ্কারের চেষ্টা করেন। ‘গুহা’ আমার লেখা তৃতীয় উপন্যাস। চিঠির ঘোরে ডুবে থেকে নিজেকে আবিষ্কারের চেষ্টা মাত্র। আমি মূলত কবিতার মানুষ। কবিতার সাথেই ঘর গৃহস্থলী আমার। পরিকল্পিত জীবন-যাপন আমি করি না। লেখার ক্ষেত্রেও বিষয় ভিত্তিক পরিকল্পনা করে কোনো কিছু লিখতে বসি না। কিন্তু অনেক দিন ধরেই কথাসাহিত্যে কাজ করার একটা প্রস্তুতি চলছিলো। যদিও এরকম অতি-পরিকল্পিত বিষয় লেখা তৈরি করা সম্ভব কিনা সে বিষয় আমার যথেষ্ট সন্দেহ আছে। তারপরও প্রায় তিন বছর আগে যখন ‘গুহা’ লেখা শুরু করেছিলাম তখন অনেক বছর ধরে মাথায় চেপে বসা গল্পটাই কেবল মূখ্য ছিলো। অবয়ব নিয়ে কোনো পরিকল্পনা ছাড়াই আমি গল্পটাকে বমি করার চেষ্টা শুরু করি। এবং মাধ্যম হিসেবে চিঠিকে বেছে নিই। লেখা চলতে থাকে। আমিও সময়-অসময় চরিত্রের মধ্যে ডুবে থাকি। এমনও হয়েছে কোনো চরিত্র আমাকে এতোই প্রভাবিত করেছে যে লেখা থামিয়ে আমি দিনের পর দিন তার কথা ভেবেছি। তার সাথে সাক্ষাতের চেষ্টা করেছি। তার কান্নাকে নিজের মধ্যে ধরতে চেষ্টা করেছি। আবার গতি নিয়ে ফিরে এসেছি লেখার কাছে। প্রকাশের আগেই অশ্লীল- ধর্মীয় বিতর্ক- সমাজ নিষিদ্ধ ভাবনার জন্য সমালোচিত হওয়া এ উপন্যাস সাহস করে প্রকাশের জন্য কৃতজ্ঞতা অনুপ্রাণন প্রকাশন’র স্বত্ত্বাধিকারী আবু মোহাম্মদ ইউসুফকে। তার এই সাহসিকতা বাংলাভাষাভাষী নারী-পুরুষদের স্বাধীন চিন্তায় নতুন কিছু যোগ করবে বলে আশা করি। -সানাউল্লাহ সাগর
সানাউল্লাহ সাগর মূলত কবি। এক যুগেরও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশ ও ভারতের প্রতিনিধিত্বশীল দৈনিক পত্রিকার সাহিত্য বিভাগ, সাহিত্য পত্রিকাসহ বিভিন্ন বাংলা ভাষাভাষী অঞ্চল থেকে প্রকাশিত লিটলম্যাগে লিখছেন। কবিতা লেখার পাশাপাশি গল্প, উপন্যাসও লিখছেন নিয়মিত। তিনি ১৯৮৬ সালের ৪ আগস্ট, দক্ষিণ ভূতের দিয়া, বাবুগঞ্জ, বরিশালে জন্মগ্রহন করেন । শিক্ষা জীবনে বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিষয়ে স্নাতকোত্তর সাগর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে ‘বাংলাদেশের ব্যঙ্গ সাহিত্য’ বিষয়ে পিএইচডি গবেষণা করছেন।