“সাউথ সুদান : সোনালী দিনের প্রত্যাশায়” বইয়ের প্রথম ফ্ল্যাপ এর লেখা : সাউথ সুদানে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীতে যােগ দিতে প্রথমে ঢাকা থেকে উগান্ডাতে যেতে হয়েছিল। সেখানে এক সপ্তাহ প্রাক মিশন প্রশিক্ষণ শেষে জাতিসংঘের বিমানে করে নতুন এই স্বাধীন দেশের রাজধানী জুবাতে পৌছাই। একেবারে অনুন্নত দেশ, অতি সাধারণ বিমান বন্দর। জাতিসংঘের কর্মীদেরই আনাগােনা বেশি সেখানে। তা ছাড়া বেশ কিছু এনজিও এবং সাহায্য সংস্থার কর্মীরা সেখানকার নিয়মিত যাত্রী। দেশটা পর্যটকদের জন্য তখনাে নিরাপদ হয়নি। হােয়াইট নীল নদ এদেশের বুক চিরে এঁকেবেঁকে বয়ে গেছে পাশের দেশ সুদানের দিকে। একসময় তারা একত্রেই ছিল। দেশের অবস্থা বেশ নাজুক, হাটবাজার অল্প অল্প জমে উঠছে, ক্রেতা বাড়ছে আস্তে আস্তে। পাশের দেশ উগান্ডা, ইথিওপিয়া থেকে মানুষ এসে হােটেল আর ব্যবসা বাণিজ্য শুরু করছে। চীনারা এই দুর্গম দেশে বড় বড় নির্মাণ কাজে বিনিয়ােগের জন্য তাদের সরঞ্জাম নিয়ে হাজির ।। কাজের সুবাদে দেশের দশটা প্রদেশের সব কটিতেই গিয়েছিলাম। সেই সব কথা নিয়েই এই বইয়ের উপাখ্যান। দেশটা বেশ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছিল, তবে বেশ বােঝা যাচ্ছিল কিছু একটা সমস্যা সামনে আসছে । ঠিক তাই, ২০১৩ সালের ডিসেম্বর মাসে প্রধান দুই গােত্র ডিংকা আর নুয়ের যুদ্ধে জড়িয়ে যায়। এর পর শুধুই হতাশা আর দুর্ভাগ্য। শুরু হয় রক্তক্ষয়, সারা দেশের মানুষ নিজেদের ভিটেমাটি ছেড়ে উদ্বাস্তু শিবিরে আশ্রয় নেয়। স্বাধীনতার সুফল পাওয়ার আগেই তারা আবার অন্ধকার ভবিষ্যতের কবলে পড়ে। একটা নতুন দেশ, দেখার অনেক কিছুই আছে, সেসব কথামালা দিয়ে সাজানাে এই প্রচেষ্টা। একটু অন্য রকম হলেও আশা করি ভালাে লাগবে ।