লেখকের কথা “তুমি কি একজন প্রবলেম সলভার?” – এই প্রশ্ন নিয়েই আমাদের বইটি লেখার সূচনা। আর “তুমি কীভাবে একজন প্রবলেম সলভার হয়ে উঠবে?” – পুরো বই জুড়ে আমরা এর উত্তর খোঁজার চেষ্টা করেছি।
তুমি যদি সায়েন্স প্রজেক্ট, অটোমেশন, আরডুইনো, রোবোটিক্স বা আইওটি নিয়ে কাজ করতে চাও, তোমার জন্য এই বইটি অপরিহার্য। তুমি নিশ্চয়ই খেয়াল করেছ, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে প্রযুক্তি খাতে বাংলাদেশের ছেলেমেয়েরা প্রচুর ইনোভেশন (Innovation) দেখাচ্ছে। বাংলাদেশের ইলেক্ট্রনিক্স এবং হার্ডওয়্যার ইন্ডাস্ট্রিতে একটি বড়ো সম্ভাবনা নিয়ে এসেছে অটোমেশন (Automation), আইওটি (Internet of Things – IoT) এবং রোবোটিক্স (Robotics)। তবুও অনেকে আড়ষ্ট ধারণা নিয়ে আছে যে হার্ডওয়্যারের কাজ কঠিন এবং ব্যয়বহুল। আমাদের বিশ্বাস, এই বইটি পড়লে তোমার এই ধারণা বদলে যাবে। আবার তুমি যদি প্রোগ্রামিং নিয়ে টুকটাক কাজ করে থাকো, আরডুইনো তোমার সেই প্রোগ্রামিংয়ের মজাকে কয়েক হাজার গুণ বাড়িয়ে দেবে। কেননা পুরো বইতেই আমরা কাজ করেছি Software-Hardware Integration নিয়ে। বইটি স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় – সব শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের উপযোগী করে লেখা। প্রোগ্রামিং সম্পর্কে সামান্য ধারণা থাকলে বইটি পড়ার সময় বাড়তি সুবিধা পাবে। তুমি যদি স্কুলের হয়ে থাকো, এই বইটি পড়ার পাশাপাশি আরডুইনোতে হাতেখড়ি পড়ে নিলে এই বইটি পড়তে কঠিন মনে হবে না। স্কুল কলেজকে মূল উদ্দেশ্য করে লেখা হলেও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা এই বইটি থেকে সর্বোচ্চ আনন্দ পাবে বলে আমাদের বিশ্বাস। এছাড়াও পলিটেকনিকের শিক্ষার্থীরা, আন্তর্জাতিক রোবটিক্স অলিম্পিয়াডে অংশগ্রহণকারীরা এবং তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের পরিচালিত রোবোটিক্স ও আইওটি কোর্সের শিক্ষার্থীরাও নিজেদের প্রজেক্টের কাজে এই বই থেকে প্রচুর সহায়তা পাবে। এই বইতে আমরা আরডুইনোকে গভীরভাবে বোঝার চেষ্টা করেছি। নতুন নতুন সেন্সর, মডিউল, শিল্ড, মোটর, অ্যাকচুয়েটর, কমিউনিকেশন ডিভাইস নিয়ে কাজ করেছি। তবে এই বইতে আমরা নিছক আরডুইনো, আইওটি বা রোবোটিক্স শেখায় জোর দিইনি। বরং আমরা জোর দিয়েছি সমস্যা সমাধানের দক্ষতা (Problem Solving Skill) বৃদ্ধিতে। আর আরডুইনোকে আমরা নিয়েছি সমস্যা সমাধানের একটি টুল (Problem Solving Tool) হিসেবে। পাশাপাশি আমরা ডিজাইন থিঙ্কিং, ইউজার সেন্ট্রিক ডিজাইন, প্রোটোটাইপিং এবং প্রোডাক্ট ডিজাইনের মতো বিষয়গুলো নিয়েও কথা বলেছি। আমাদের বিশ্বাস, বইটি পড়ার পর পাঠকের চিন্তাজগতে পরিবর্তন আসবে। সমস্যা সমাধানের মানসিকতা সৃষ্টি হবে। যেকোনো বাস্তব-জীবন সমস্যায় পাঠক কম্পিউটার হার্ডওয়্যারভিত্তিক সমাধান সৃষ্টিতে নিজেকে প্রস্তুত মনে করবে। প্রবলেম সলভার তরুণ-তরুণীদের হাতেই গড়ে উঠুক সমৃদ্ধির বাংলাদেশ। - মুনেম শাহরিয়ার - রুহুল আমীন, - জানুয়ারী ২০১৯, - রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।
সূচীপত্র * ভূমিকা * লেখক পরিচিতি * লেখকের কথা * অধ্যায় ১ – সমস্যা এবং তুমি * অধ্যায় ২ – সমস্যা সমাধানের কিছু টুল * অধ্যায় ৩ – আরডুইনোতে বাজনা বাজাই * অধ্যায় ৪ – ডিজিটালে অ্যানালগ ছোঁয়া * অধ্যায় ৫ – গরিবের বন্ধু টিংকারক্যাড * অধ্যায় ৬ – সেন্সরের জগত * অধ্যায় ৭ – যা জানা প্রয়োজন – প্রোটোকল! * অধ্যায় ৮ – ডিসপ্লে! ডিসপ্লে! * অধ্যায় ৯ – ইউজার ইনপুট * অধ্যায় ১০ – ডেটা লগার ও সম্ভাবনা * অধ্যায় ১১ – চলো সময়কে ধরি * অধ্যায় ১২ – ডেটাশিট পড়ার উপায় * অধ্যায় ১৩ – তার ছেঁড়া বেতার * অধ্যায় ১৪ – মোটরের কলকব্জা * অধ্যায় ১৫ – পানির সঙ্গে প্রবলেম সলভিং * অধ্যায় ১৬ – হাই ভোল্টেজ নিয়ে কাজ! * অধ্যায় ১৭ – আইওটিতে হাতেখড়ি * অধ্যায় ১৮ – প্রসেসিংয়ে হাতেখড়ি * অধ্যায় ১৯ – হাতে বানাই আরডুইনো * অধ্যায় ২০ – প্রোডাক্ট ডিজাইনের যত কথা * অধ্যায় ২১ – হ্যাকিং মাইন্ডসেট * অধ্যায় ২২ – শখের রোবটিক্স * অধ্যায় ২৩ – জেগে স্বপ্ন দেখি * অধ্যায় ২৪ – যা বলা হলো না * অধ্যায় ২৫ – আরডুইনো কমিউনিটি বাংলাদেশ * অধ্যায় ২৬ – তথ্যসূত্র * অধ্যায় ২৭ – কেনাকিনি * অধ্যায় ২৮ – শেষ হইয়াও হইলো না শেষ
রুহুল আমীন পড়ছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষে। ছােটবেলা থেকেই ইলেক্ট্রনিকস, হার্ডওয়্যার ভক্ত। বাংলায় রােবটিকস চর্চাকে আরাে কয়েক ধাপ এগিয়ে দিতে লিখলেন এই বই। রােবােটিকস নিয়ে কাজ করেন রােবােটিকস ক্লাব, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে, গত বছর যাদের সফল আয়ােজন ছিল আরডুইনাে ডে-২০১৭। এছাড়াও কাজ করছেন রাজশাহী ইউনিভার্সিটি আইটি সােসাইটির জেনারেল সেক্রেটারি হিসাবে। ক্যারিয়ার হিসেবে একজন সফল উদ্যোক্তা হবার স্বপ্ন দেখেন।