বাংলাদেশে দিন দিন ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে গেলে ইংরেজি শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। শুধু ইংরেজি ব্যাকরণ কিংবা একাডেমিক পাঠ্য বই পড়েই ইংরেজি রপ্ত করা যায় না। ইংরেজি শিখতে গেলে আরো অনেক পথ অনুসরণ করতে হয়। ইংরেজি ছড়া, কবিতা পাঠের মধ্য দিয়েও ইংরেজি ভাষাকে দ্রুত আয়ত্তে আনা যায়। কিন্তু বাংলাদেশের লেখকদের গল্প, কবিতা কিংবা ছড়া সেই অর্থে অনুবাদ হচ্ছে না। ফলে শিক্ষার্থীদের বিদেশি বইয়ের ওপর ভরসা করতে হয়। এতে আমাদের সাহিত্যে কী সৃষ্টি হচ্ছে তাও অজানা রয়ে যায় একটা শ্রেণির কাছে। ছোটবেলা থেকেই যদি শিশুরা বিদেশি সাহিত্য পড়ে বড় হয় তবে তারা দেশের সংস্কৃতি, ঐতিহ্য সম্পর্কে তেমন কিছুই জানতে পারবে না। ফলে তাদের দেশাত্মবোধ ও দেশপ্রেম তৈরি হবে না! নিশাত সুলতানা ছোটদের জন্য নিরলস লিখে চলছেন। তার লেখার গতি-প্রকৃতি দেখলে বোঝা যায় তিনি একটি মহৎ লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছেন। বাংলা, ইংরেজি উভয় মাধ্যম মাথায় রেখেইে তিনি লিখছেন। তার বাংলায় রচিত গল্পটি ইংরেজিতে অনুবাদ করেছেন ঞযবড় এড়সবং। অনুবাদের গুণে ইংরেজি শিক্ষার্থী ও ইংরেজি ভাষাভাষীদের কাছে গল্পটি আরো বেশি ছড়িয়ে পড়বে। আমাদের দেশের অনেক শিশু-কিশোর রয়েছে, যাদের ইংরেজিভীতি কাজ করে। বিশেষ করে ইংরেজি ব্যাকরণ পাঠ করতে গিয়ে ইংরেজি শিক্ষার প্রতি আরো অনীহা তৈরি হয়। তাদের জন্য এসব গল্প, কবিতা, ছড়া পাঠ অনেক সহায়ক। কেননা এসব পাঠের মধ্য দিয়ে যেমন আনন্দ পাওয়া যায় তেমনি শব্দ, বাক্য শিখতেও পারা যায় খুব সহজেই। মনে রাখতে হবে, ইংরেজি শেখার ক্ষেত্রে আমাদের চিন্তাগুলোকেও ইংরেজি ভাষায় অনুবাদ করে নিতে হবে। তাহলে দ্রুত উচ্চারণ করা যাবে। ১৬ পৃষ্ঠার এ বইটিতে পিকুর নানা ঘটনা বর্ণনা করা হয়েছে। পিপু একটা ছোট পিঁপড়ে হয়েও একটি বড় হাতিকে কীভাবে বসে আনলো তা গল্পে গল্পে বলা হয়েছে। ছোট বলে কেউ যখন তার বন্ধু হতে রাজি নয় তখন তার শক্তি ও বুদ্ধি দিয়ে নিজেকে প্রমাণ করতে হয়েছে, সে নিজেই অনেক বড় কাজ করতে পারে। এ গল্প থেকে আমাদের এ শিক্ষা নেওয়া যাবে যে, ছোট বলে কাউকে অবহেলা করতে নেই।
নিশাত সুলতানা একজন বাংলাদেশী কলামিষ্ট, শিশুসাহিত্যিক ও মানবাধিকার কর্মী। কর্মজীবনে ’নিশাত সুলতানা’ নামে পরিচিত হলেও বাবা-মা, নিকটজন ও বন্ধুবান্ধবরা ’পূরবী’ নামেই ডাকেন। জন্ম উত্তরবঙ্গের নওগাঁ জেলায়। শৈশব ও কৈশোর কেটেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও নওগাঁ জেলা শহরে। পড়েছেন নওগাঁ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, নওগাঁ সরকারি কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে। বাবা এ,কে,এম, নূরুজ্জামান এবং মা সেলিমা বানুর দ্বিতীয় সন্তান তিনি। যদিও কর্মজীবনের শুরু ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক হিসেবে, পরবর্তীতে যুক্ত হন বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার সাথে। তিনি কাজ করেছেন কনসার্ন ইউনিভার্সেল, সেভ দ্য চিলড্রেনের মত আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার গুরুত্বপূর্ণ পদে। বর্তমানে কর্মরত আছেন পৃথিবীর সর্ববৃহৎ উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকে। সাতাশতম বিসিএসে যোগদান করে তিনি সহকারি কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে কিছুদিন দায়িত্বও পালন করেন। শিশুদের জন্য অদ্ভূত সুন্দর একটা পৃথিবী নির্মাণ করতে চান তিনি। তাঁর রচিত শিশুতোষ বইগুলির মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয়তা লাভ করেছে ’নিপুর রঙিন একদিন’ ,’পুটুর বদলে যাওয়া’ ও ’কাক ও বকের একদিন’। পাঠক নন্দিত লেখিকা নিশাত সুলতানা বাংলাদেশ বেতার ও বাংলাদেশ টেলিভিশনের বিভিন্ন অনুষ্ঠানের সাথে জড়িত।