‘দুর্ভাবনা ও ভাবনা রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে’ বইয়ের ফ্ল্যাপের কথাঃ রবীন্দ্রপ্রতিভার মূল্যায়ন নিয়ে নানা রকম মতবিরোধ আছে। একদল বাঙালি মনে করেন রবীন্দ্রনাথ বিংশ শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ বাঙালি। এই মতের প্রতিপক্ষ দল মনে করেন রবীন্দ্রনাথকে অতিমূল্যায়ন করা হয়েছে। রবীন্দ্রনাথ সম্পর্কে যেসব ধারণা বা অপধারণা প্রচলিত আছে, এই বইয়ে সেগুলো যাচাই ও সে সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। বিশ্লেষণ থেকে দেখা যায়, রবীন্দ্রনাথকে যেসব প্রশ্নে হেয় করার চেষ্টা করা হয়েছে, সেসব প্রশ্নের বেশির ভাগই অসার। অন্যদিকে যেসব প্রশ্নে রবীন্দ্রনাথকে অতি উচ্চ মর্যাদা দেওয়া হয়েছে, সেসব প্রশ্নে রবীন্দ্রনাথের যেসব দুর্বলতা ছিল, সেগুলো চাপা দেওয়া হয়েছে। সামগ্রিক বিশ্লেষণে রবীন্দ্রনাথ একজন পরিপূর্ণ ব্যক্তি ছিলেন না, পরিপূর্ণ ব্যক্তি কেউই হন না। সবাই দোষে-গুণে মানুষ, রবীন্দ্রনাথও এর ব্যতিক্রম নন। এই বইয়ে রবীন্দ্রনাথ সম্বন্ধে সাতটি ভুল ধারণা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে, অন্যদিকে ছয়টি প্রবন্ধে দেখানো হয়েছে যে রবীন্দ্রনাথের শুভানুধ্যায়ীরা রবীন্দ্রনাথের অবদানকে অতিরঞ্জন করেছেন। রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে মুসলমানদের যেসব দুর্ভাবনা রয়েছে, সেগুলো সম্পর্কেও চারটি অধ্যায় রয়েছে এই বইয়ে। রবীন্দ্রনাথ সম্পর্কে নতুন আলোকপাত পাঠককে আলোড়িত করবে।
‘৭১ পূর্ববর্তী সময়ে তিনি সর্বদাই অন্যায়ের বিরুদ্ধে উচ্চকণ্ঠ ছিলেন, ছিলেন বঙ্গবন্ধুর অসহযোগের সমর্থক। ২৫ মার্চের কালরাতের পর যখন অস্থায়ী সরকার গঠিত হয়নি, তখনই নিজ এলাকা হবিগঞ্জে পুলিশের অস্ত্র সাধারণ মানুষের মধ্যে বিলিয়ে দিয়ে যুদ্ধ করতে অনুপ্রাণিত করেন তিনি, নিজ হাতে তৈরি করেন অস্ত্র উন্মুক্তকরণের সরকারি লিখিত অনুমতি। অস্থায়ী সরকারের জন্য তহবিল গড়তে তিনি বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে তিন কোটি টাকা ট্রাকে করে আগরতলা পৌঁছে দেন। বাঙালির চেতনা ও অহংকারের মুক্তিযুদ্ধে অসম সাহসিকতার সাথে কর্তব্য পালন করা এই মানুষটির নাম আকবর আলি খান। আকবর আলি খানের জন্ম ১৯৪৪ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে। নিজ গ্রামেই স্কুলজীবন শেষ করে ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা গ্রহণ করেন। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করে চাকরিজীবনে প্রবেশ করেন। মাঝে এক বছরের জন্য লাহোরের সিভিল সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। এরপর এস.ডি.ও হিসেবে তার কর্মস্থল হয় হবিগঞ্জে। মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী বিভিন্ন সময়ে তিনি শিক্ষা মন্ত্রণালয় সহ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ সরকারী কর্মকমিশন সচিবালয়ে কাজ করেন। মাঝে কানাডার কুইন্স বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে মাস্টার্স এবং পি.এইচ.ডি করে আসেন। আকবর আলি খান এর বই সমূহ বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও ঐতিহাসিক উত্থান নিয়ে প্রামাণ্য দলিল। এছাড়াও, আকবর আলি খানের বই বাংলাদেশের সামাজিক পরিবর্তন এবং এদেশে ইসলামের বিকাশ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ গবেষণালব্ধ দলিল। এশিয়াটিক সোসাইটি থেকে প্রকাশিত তার বই ‘হিস্ট্রি অব বাংলাদেশ’ তার সেরা রচনা। আকবর আলি খান এর বই সমগ্রতে আরো আছে ‘পরার্থপরতার অর্থনীতি’, ‘বাংলায় ইসলাম প্রচারে সাফল্য’, ‘বাংলাদেশের সত্তার অন্বেষা’, ‘ডিসকভারি অব বাংলাদেশ’ ইত্যাদি বই।