"প্রচলিত পাশ্চাত্য যুক্তিবিদ্যা" বইয়ের সংক্ষিপ্ত কথা: পাশ্চাত্যের শিক্ষা পদ্ধতির সাথে সঙ্গতি প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে সম্প্রতি বাংলাদেশের সবকটি প্রচলিত বিশ্ববিদ্যালয়ে চতুর্বার্ষিক সমন্বিত ডিগ্রি অনার্স কোর্স চালু হয়েছে। এর ফলে পূর্ববর্তী ত্রিবার্ষিক ডিগ্রি অনার্স কোর্সের পাঠক্রমকে যুগোপযোগী করে নতুন আঙ্গিকে সাজানোর প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। অন্যান্য বিষয়ের মতো দর্শনের পাঠক্রমেও ব্যাপক পরিবর্তন ও পরিবর্ধন করা হয়েছে। এই পরিমার্জিত পাঠক্রমে দর্শনের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পৃক্ত কিছু গুরুত্বপূর্ণ কোর্সকে-যেমন অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, তেমনি ন্যায়শাস্ত্র বা যুক্তিবিদ্যার মতো অতি অত্যাবশ্যকীয় বিষয়ে দুই বা তারও অধিক কোর্স চালু হয়েছে দেশের সব কটি প্রচলিত বিশ্ববিদ্যালয়ে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই পরিমার্জিত ও পরিবর্ধিত পাঠক্রমের আলোকে ন্যায়শাস্ত্র বা যুক্তিবিদ্যার ওপর মাতৃভাষায় লিখিত গ্রন্থের প্রয়োজনীয়তা বেড়ে গেছে বহুগুণে। এদিকে দেশের সবকটি প্রচলিত বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শনের চতুর্বার্ষিক সমন্বিত ডিগ্রি অনার্স কোর্সের পাঠক্রমে ন্যায়শাস্ত্র বা যুক্তিবিদ্যা বিষয়ক কোর্সসমূহে প্রধানত আধুনিক নৈয়ায়িক আরভিং এম. কপি লিখিত Introduction to logic এবং symbolic logic গ্রন্থদ্বয়কে অবশ্য পাঠ্য হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। যতদূর জানি আমাদের প্রতিবেশী বন্ধুরাষ্ট্র ভারতের প্রায় সবগুলো বিশ্ববিদ্যালয় এবং প্রতীচ্যের বিভিন্ন দেশে আরভিং এম. কপি প্রণীত উল্লিখিত গ্রন্থ দুটি ন্যায়শাস্ত্র বা যুক্তিবিদ্যার বাইবেল রূপে সমাদৃত। কিন্তু দুঃখজনক হলেও একথা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই যে, তাঁর মডেলের আলোকে আমাদের বাংলাদেশে প্রতীকী ন্যায়শাস্ত্রের ওপর দু’একটা গ্রন্থ রচিত হলেও প্রচলিত বা এরিস্টটলীয় ন্যায়শাস্ত্রের ওপর একটি পূর্ণাঙ্গ গ্রন্থও এ পর্যন্ত আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়নি। প্রচলিত পাশ্চাত্য যুক্তিবিদ্যা এ অভাব পূরণের লক্ষ্যেই আমাদের এক বিনীত প্রয়াসমাত্র।