১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নিহত হন; যে হত্যাকাণ্ডের নির্মমতা থেকে শিশুপুত্র রাসেলও রেহায় পায়নি, রেহাই পায়নি অন্তঃসত্ত্বা পুত্রবধূ এবং নিরাপত্তায় নিয়োজিত কর্মকর্তা ও অন্যসব আত্মীয়জনও। এই নিদারুণ, হৃদয়বিদারক ও মারাত্মক হত্যাকাণ্ডকে আমরা কি বলবো? মর্মন্তুদ মৃত্যুযন্ত্রণা ছাড়া! নাকি এটি বাঙালি জাতীয় চেতনার এক ভয়ানক-বীভৎস ধ্বংসমুহূর্ত, যে-মৃত্যুযন্ত্রণা থেকে এখনো আমরা মুক্ত নই, মুক্ত নই স্বদেশচিন্তার সম্পূর্ণ স্বাধীনতাচর্চা থেকেও, যে-কোনো মুহূর্তে না ঘাতক দালাল-আলবদর-আলসামসরা সংগঠিত হয়ে আক্রমণ চালায় জঙ্গিবাদের উদরপূর্তির জন্যে। তা ছাড়া আমরা নিরাপদ নই সামরিক জান্তার আগ্রাসী ও লোভাতুর দৃষ্টি থেকেও এবং তা প্রতিনিয়তই আমাদের আতঙ্কিত করে তোলে-ঘুম ভেঙে জাগিয়ে দেয় নতুন এক মৃত্যুভাবনায়-ব্যক্তিমানুষের, রাষ্ট্রের, কখনো-বা আজন্ম যত্নে লালিত স্বপ্নযাত্রার। বঙ্গবন্ধুর সরলতা, সাধারণ বিশ্বাস এবং মানুষকে ভালোবাসার অগাধ আস্থাই হয়তো এ-ঘটনাকে অনেকাংশে প্রস্তুত হতে সাহায্য করেছিল, নাকি সাহায্য করেছিল যারা তাজউদ্দিন-কে ক্ষমতার উচ্চাসন থেকে সরিয়ে দিয়ে খন্দকার মোস্তাক-কে বিশ্বাসযোগ্য করে তুলেছিল? কিন্তু তাঁর মতো অতো বড় মনের, অতো বড় রাজনীতিবিদ এবং অতো বড় মানুষ কি আমরা এ-অঞ্চলের বাঙালি-বাংলাদেশী জনগণ আর কখনো পাবো?
কবিতা রচনা দিয়ে সাহিত্যযাত্রা, গান-গল্প-প্রবন্ধ-ছড়া-চিত্রনাট্য-কলাম প্রভৃতি লিখে চলেছেন। আধুনিক বিশ্বে ভয়ঙ্কর দুটি শক্তি : রাজনীতিক ও যাজক, তাদের ভণ্ডামির বিরুদ্ধে তুলে ধরেছেন কলম-সম্ভাবনা গদ্য-পদ্য, লিখছেন খোলামত ও মতাদর্শ।