নয়াডাংগী গ্রামের সেরা গাছি কাজেম শেখ। তার হাতের তৈরী পাটালী গুড়ের চাহিদাও বেশি, দামও একটু বেশি। হাটে গুড় নিয়ে গেলে তার বিক্রি করতে তেমন কষ্ট হয় না। এলাকার বড়লোকেরা তার গুড়ের ভক্ত। কাজেম সেকের গুড় ছাড়া শীতের রসের পিঠা কল্পনা করতে পারে না তারা। কাজেমের গুড় তাদের চাই-ই চাই। তার মতো এমন সুস্বাদু গুড় অন্য কেউ বানাতে পারে না। আসল কৌশলটি সে কাউকেই শেখায় না। তার বউ আস্তে আস্তে জ্বাল দেয়। গুড়ের ফোঁটাগুলো বড় হয়ে এলে জ্বাল কমিয়ে দিতে হয়। কাজেম শেখ একটি তালপাতার পাখা নিয়ে ফুটন্ত ঘন রসের উপর বাতাস করে, আস্তে আবার কখনো জোরে, হাত দিয়ে ইশারা করলে বউ জ্বাল কমিয়ে দেয়। তার আগের বউ নিজেই ভাল গুড় বানাতে পারতো। এভাবেই গুড় জ্বাল দিতে গিয়ে কি একটা কাজে একটু সময়ের জন্য বাঁশঝাড়ে গিয়েছিলো; এসে দেখে গুড় পুড়ে শেষ। বদরাগী কাজেম শেখ বাড়িতে ফিরে এসে বউকে এমন পেটালেন যে বেচারি আলুর ভর্তা হয়ে গেলো। তারপর কয়েকদিন বিছানায় পড়ে থেকে শেষে জলবসন্ত রোগে পরপারে চলে গেলো। এদিকে দুই ছেলে আর রসের ভরা মৌসুম, তার গুড় বানানোর লোক নেই। সেবার ঝোলাগুড় বানিয়েই তাকে মাটির হাড়িতে রেখে পরে বিক্রি করতে হয়েছিলো কমদামে।