“ডিজিটাল ফরট্রেস" বইটির ফ্ল্যাপ এর লেখাঃ ডিজিটাল ফরট্রেস একটি টেকনােথ্রিলার উপন্যাস। পুস্তকটিতে ইলেকট্রনিক আধারে সঞ্চিত জনসাধারণের ব্যক্তিগত জীবনের তথ্যের ওপর সরকারের খবরদারি, ব্যক্তিস্বাধীনতা লঙ্ঘন এবং এ ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহারের সম্ভাব্য নৈতিক পরিণতির বিষয় নিয়ে গবেষণা করা হয়েছে। ন্যাশনাল সিকিউরিটি এজেন্সি এনএসএ’র অপরাজেয় কোড-ব্রেকিং সুপার কম্পিউটার ট্রান্সলেটার’ যখন একটি রহস্যময় সংকেতলিপির পাঠ উদ্ধার করতে ব্যর্থ হলাে, তখন এজেন্সির প্রধান ক্রিপ্টোগ্রাফার সুন্দরী ও মেধাবী গণিতবিদ সুজান ফ্লেচারকে তলব করা হলাে। সে যে রহস্য উদ্ঘাটন করল, তা ক্ষমতার অলিন্দে একটি প্রচণ্ড ধাক্কা দিল। কামানবন্দুক বা বােমা নয়, এনএসএ-কে জিম্মি করা হলাে এমন একটি জটিল কোড দিয়ে, যা উন্মােচিত হলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গােয়েন্দা জগৎ পঙ্গু হয়ে যেত। গােপনীয়তা আর মিথ্যার বেগবান একটি ঝড়ের মাঝে আটকা পড়ে, সুজান ফ্লেচার এজেন্সিকে বাঁচানাের জন্য লড়াই করে চলল। সবদিক দিয়ে প্রতারিত হয়ে, কেবল দেশের জন্য নয়, নিজের প্রাণ বাঁচাতে এবং শেষ পর্যন্ত তার ভালােবাসার মানুষের জন্যও তাকে লড়াই করতে হচ্ছিল। ক্ষমতার পাতাল কক্ষ থেকে শুরু করে, টোকিও’র গগনচুম্বি অট্টালিকা এবং স্পেনের সুউচ্চ ক্যাথেড্রালের টাওয়ার পর্যন্ত একটি বেপরােয়া দৌড় শুরু হলাে। এটা ছিল প্রাণ বাঁচানাের লড়াই একজন অসামান্য প্রতিভাবানের সৃষ্টি ধ্বংস করার জন্য একটি নিলামের ডাক... একটি অভেদ্য সংকেতলিপির ফরমুলা, যা ঠান্ডা যুদ্ধোত্তর পৃথিবীর ক্ষমতার ভারসাম্য নিশ্চিহ্ন করার জন্য একটি হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে, চিরকালের জন্য।
মার্কিন থ্রিলার লেখক ড্যানিয়েল গেরহার্ড ব্রাউনের জন্ম ১৯৬৪ সালের ২২ জুন। ড্যান ব্রাউন নামেই বিখ্যাত এই লেখকের জন্মস্থান যুক্তরাষ্ট্রের নিউ হ্যাম্পশায়ারের এক্সিটারে। তাঁর বাবা বিখ্যাত গণিত শিক্ষক রিচার্ড জি. ব্রাউন ফিলিপস এক্সিটার একাডেমিতে পড়াতেন। এই সূত্রে ড্যান এই একাডেমি থেকেই গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করেন। এরপর আমহার্স্ট কলেজ থেকে স্নাতক শেষ করেন তিনি। ছোটবেলায় সংগীতের প্রতি ঝোঁক থাকায় ১৯৮৬ সালে পেশাদার সংগীতশিল্পী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। তবে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জনে ব্যর্থ হন। ১৯৯৪ সালে সিডনি শেলডন এর লেখনী থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে ড্যান লেখালেখির জগতে প্রবেশ করেন। উপন্যাস হিসেবে ড্যান ব্রাউন এর বই 'ডিজিটাল ফোরট্রেস' প্রকাশিত হয় ১৯৯৬ সালে, সেটাই ছিল তাঁর প্রথম লেখা। পাঠক বইটি সাদরে গ্রহণ করায় আর পিছে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। ২০০৩ সালে প্রকাশিত 'দ্য ভিঞ্চি কোড' বিশ্বজুড়ে তাঁকে জনপ্রিয়তার শীর্ষে নিয়ে যায়। ক্রিপ্টোগ্রাফি বা সাংকেতিক চিহ্নের রহস্যময়তা, কী, কোড এবং ষড়যন্ত্র তত্ত্বগুলোর সন্নিবেশ তাঁর রচনাগুলোকে করেছে আরো আকর্ষণীয়। রবার্ট ল্যাংডনের চরিত্রটিকে কেন্দ্রে রেখে তিনি দুঃসাহসিক সব অভিযানের রূপায়ণ করেছেন তাঁর লেখায়। ড্যান ব্রাউন এর বই সমূহ বিশ্বজোড়া থ্রিলার পাঠকদের জন্য যেন সোনার খনি। তাঁর রচনায় বুঁদ হয়ে থাকা পাঠকেরা সাংকেতিক রহস্যময়তার জন্য ড্যান এর রচনার সমাদর করেন। পাঠকনন্দিত ড্যান ব্রাউন এর বই সমগ্র হলো 'ডিসেপশন পয়েন্ট', 'এঞ্জেলস এন্ড ডেমনস', 'দ্য লস্ট সিম্বল', ' ইনফার্নো' ও 'অরিজিন'। তাঁর লেখা বই বিশ্বের ৫২টিরও বেশি ভাষায় অনূদিত হয়েছে এবং বিক্রি হয়েছে ২০০ মিলিয়নেরও বেশি কপি। এছাড়াও 'এঞ্জেলস এন্ড ডেমন্স', 'দ্য ভিঞ্চি কোড', এবং 'ইনফার্নো' পেয়েছে চলচ্চিত্র রূপ। যদিও তাঁর রচনা নিয়ে ধর্মতত্ত্ববিদেরা বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন, তবে ড্যান তাঁর রচনাকে ধর্মের রহস্যময়তার নতুন এক দিক হিসেবেই বর্ণনা করেছেন।