হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাসের কিছু চরিত্র আছে। সে রকম একটি চরিত্রের নাম হিমু। যে ভরা পূর্ণিমার রাতে হলুদ পাঞ্জাবি পরে ঘুরে বেড়ায়। ময়ূরাক্ষী নামের কল্পনার নদীতে পা ডুবিয়ে হাঁটে। নির্জন জঙ্গলে জ্যোৎস্না দেখতে যায়। পার্কের বেঞ্চিতে শুয়ে মনের সুখে শরীরে বৃষ্টি মাখায়। কিন্তু কে এই হিমু? কী তার পরিচয়? হুমায়ূন আহমেদ নিজেই বলেছেন, হিমু হলো ইচ্ছাপূরণ টাইপ চরিত্র। হিমু অনেক কিছু করে, যা অন্যরা করতে চায়, কিন্তু করতে পারে না। সবাই চায় জ্যোৎস্না রাতে বনের ভেতর সারা রাত জ্যোৎস্না দেখতে। সবাই চায় সারা রাত বৃষ্টিতে ভিজতে। কিন্তু বাস্তবে তা সম্ভব নয়। অন্যরা যা পারছে না, হিমু তা পারছে। এই লোকটি সকল চাপ থেকে মুক্ত। ধরা যাক এই হলুদ পাঞ্জাবি পরা হিমুদের মধ্যে একজন হিমু হলো আরও বেশি অন্যরকম। তার জন্মও হলো অস্বাভাবিকভাবে। জন্মের সময় তার মাকে জ্বিনে ধরল। অন্তসত্ত্বা স্ত্রীলোককে জ্বিনে ধরলে পেটের সন্তানকেও ধরে। যাওয়ার সময় দুটোর একটাকে নিয়ে যায়। এবার কাউকে নিতে পারেনি। আবার খালি হাতেও যায়নি। এই হিমু হয়েছে অর্ধেক মানুষ অর্ধেক জিন। অন্য হিমুরা অদৃশ্য হয়ে যেতে পারত না, আকাশেও উড়তে পারত না। এই হিমুর কাছে সে সব ডালভাত।
শাহেদ ইকবাল। কবি, ঔপন্যাসিক ও গীতিকার। জন্ম ১৪ ফেব্রুয়ারি ১৯৬২। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ে পিএইচডি করেছেন। স্বদেশ ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে গবেষণার পাশাপাশি নিয়োজিত আছেন গল্প, উপন্যাস, সায়েন্স ফিকশন ও রম্য সাহিত্যে। তিন যুগ ধরে লেখালেখি করছেন। প্রথম প্রকাশিত উপন্যাস 'দুই নম্বর যাত্রী' (১৯৯৫)। উল্লেখযোগ্য গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে শয়তানের যোগব্যায়াম, নীলকন্ঠের পালক, ইথিকা, নীলপরী, রূপালী জ্যোত্মা, এই ঔরধ আমি কিভাবে পাইলাম, কাশবনের পরী প্রভৃতি। নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ ও মুহম্মদ জাফর ইকবালের সাথে যৌথভাবে প্রকাশিত হয়েছে 'সায়েন্স ফিকশন সমগ্র' ও 'ক্রেমার'। সাংস্কৃতিক জগতে বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারের গীতিকার। ব্যক্তিগত জীবনে স্ত্রী আক্তার জাহান পলি আর দুই কন্যা তুলকা ও ইথিকাকে নিয়ে তাঁর নিজস্ব ভুবন।