মহাকাব্যের পরিধি অনেক বিশাল ও বিস্তৃত হয়, মহাকাব্যিক ব্যঞ্জনার উপন্যাসও সেরকম। ব্যক্তিজীবন, সামষ্টিক জীবন ও তার রাজনৈতিক উত্থান-পতন, সংগ্রাম, মুক্তিযুদ্ধ ও তার অর্জন নিয়ে একা দুর্গম পথে চড়াই-উত্রাই, সফলতা, ব্যর্থতা, বঞ্চনা ও তার ফলে জন্মানো জনউত্থান-এসব কিছুই দিগন্তবিস্তারী ব্যঞ্জনার মহাকাব্যের মতো। সুলেখক ও ঔপন্যাসিক সাজাহান সাকিদার তার 'ঝড়' উপন্যাসে এমনই বিশাল পরিসরে ধরতে চেয়েছেন এই উপমহাদেশের স্মরণীয় ও গভীর ঐতিহাসিক বাঁকগুলো। বৃটিশবিরোধী স্বাধীনতা সংগ্রাম, সাম্প্রদায়িকতা, রক্তক্ষয়, দেশভাগ, ষড়যন্ত্র, ভাষা আন্দোলন, সামরিক শাসন, ৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, ৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ এখানে শুধু ইতিহাসের উপাদান হিসেবে আসেনি, এসেছে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ চরিত্রগুলোর বাহ্যিক ও মনস্তাত্ত্বিক বাস্তবতার সমন্বয় ও সংঘাতের দুর্গম শিল্পরূপ হিসেবে। প্রলয়ঙ্করী দুর্যোগ বা বিধ্বংসী দ্বৈরথে প্রকৃতি ও জীবন লণ্ডভণ্ড হতে পারে, কল্পিত মহাকাব্যও শেষ হতে পারে, তবে বাস্তবায়নের জীবন থেমে থাকে না-যদিও বা স্তিমিত হয়। এভাবে চলমান জীবন হয়তো নতুন কোনো দ্বৈরথের ক্ষেত্র প্রস্তুত হতে দেখে, অথবা সচেতনভাবে বা নিজের অজান্তে তাতে অংশ নেয়। এভাবে হয়তো তার শিল্পরূপ নতুন ও গাঢ় আঙ্গিকে স্থিত হয়। তার কষ্টার্জিত শস্য নতুন ইতিহাস, সদ্যস্বাধীন দেশ, নৈরাজ্য, দুর্ভিক্ষ, জাতির জনকের হত্যাকাণ্ড, অন্ধকারে যাত্রা, সামরিক
তিনি জন্মগ্রহণ করেন বগুড়ায়। বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকাল থেকেই লেখালেখি শুরু করেন। তবে শৈশব থেকেই বেড়ে উঠেছেন সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে। পেশা কলেজে শিক্ষকতা। তাঁর উল্লেখযোগ্য উপন্যাস : শ্মশানযাত্রীর নরক উল্লাস ৯১৯৯৫), বত্রিশ বিঘা ধানী জমি (২০০০); গল্পগ্রন্থ : পাতালে এক বর্গ (২০০৪), উল্টোরথ (২০০৫)।