"কিডনি ও চোখ সুরক্ষায় ভেষজ" বইটির ভূমিকা থেকে নেয়াঃ মানবদেহে অনেক অঙ্গপ্রত্যঙ্গ নিয়ে গঠিত। কিডনি ও চোখ অঙ্গপ্রত্যঙ্গগুলাের মধ্যে খুব গুরুত্বপূর্ণ। এ দুটি অঙ্গই বেঁচে থাকার জন্য খুব প্রয়ােজন। কারণ দুটি কিডনি অচল হলে মানুষ বেশি দিন বাঁচে না। আবার দুটি চোখে কোন সমস্যা হলে, ছানি পড়লে, রাতকানা রােগ হলে, অন্ধ হলে মানুষের জীবন অচল হয়ে পড়ে। কাজেই কিডনি ও চোখের রােগ, রােগের কারণ, রােগ হলে করণীয় বিষয়ে সকলেরই জানা প্রয়ােজন। কিডনি ও চোখ সম্পর্কে ধারণা দেওয়ার জন্যই কিডনি ও চোখ সুরক্ষায় ভেষজ বইটি লেখার অনুপ্রেরণা লাভ করি। মানবদেহে দুটি কিডনি আছে। দুটো কিডনি প্রতি মিনিটে ১.৩ লিটার পানি ছাঁকে ও বর্জ্য আকারে প্রস্রাবের সাথে বের করে দেয়। ডায়াবেটিস হলেও কিডনির অনেক সমস্যা হয়। এ জন্য ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। ধীরগতির কিডনি বিকল রােগ হল এক প্রকার নিরব ঘাতক। এ দেশের বেশির ভাগ রােগী অর্থের অভাবে কিডনির প্রয়ােজনীয় চিকিৎসা নিতে পারে। এ জন্য কিডনি রােগসহ মানবদেহের বিভিন্ন সমস্যা সম্পর্কে সচেতন হওয়ার পাশাপাশি ছােট বয়স হতেই সুষম খাবার খাওয়া একান্ত প্রয়ােজন। মানবদেহের স্পর্শকাতর অঙ্গ চোখ। এর মাধ্যমে মানুষ সকল বস্তু দেখে থাকে। চোখের যে কোন সমস্যাই দুর্গতি ও দুর্ভোগের কারণ। এ জন্য সুস্থ চোখ খুব বেশি প্রয়ােজন। এ কারণে মানবদেহের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ চোখের পরিচর্যা ও যত্ন নেওয়া দরকার। এ জন্য চোখের প্রতি খুব সচেতন হওয়া প্রয়ােজন। আশা করি এ বইটি পড়ে সব শ্রেণির পাঠক কিডনি ও চোখের রােগ সম্পর্কে সঠিক ধারণা লাভ করতে পারবে।
ডাঃ আলমগীর মতি ১৯৫১ সালের ১ জানুয়ারি শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া উপজেলাধীন কলুকাঠি গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতার নাম মরহুম মৌলভী গোলাম মোস্তফা এবং মাতার নাম রহিমা খাতুন। ডাঃ আলমগীর মতি’র শিক্ষা জীবনের হাতেখড়ি হয় তাঁর নিজ গ্রামে অবস্থিত কলুকাঠি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। শৈশব থেকেই তিনি ছিলেন অভাবনীয় মেধার অধিকারী এবং কঠোর অধ্যবসায়ী। অত্যন্ত কৃতিত্বের সাথে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর তিনি ১৯৭৯ সালে বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ থেকে “ডিপ্লোমা ইন হোমিওপ্যাথিক মেডিসিন এন্ড সার্জারি” ডিগ্রী এবং ১৯৯৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে ব্যাচেলর অব হোমিওপ্যাথিক মেডিসিন এন্ড সার্জারি” ডিগ্রী লাভ করেন। এরপর ১৯৯৪ সালে ইন্ডিয়ান বোর্ড অব অলটারনেটিভ মেডিসিন থেকে “এম.ডি” ডিগ্রী অর্জন করেন। তিনি ১৯৯৫ সালে চায়না থেকে “নিউরো” ডিগ্রী অর্জন করেন। ২০০৬ সালের ১ এপ্রিল তিনি সোসাইটি অফ কম্পিমেন্টারি মেডিসিন এন্ড ফ্যামিলি ওয়েল ফেয়ার, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত কর্তৃক সম্মানসূচক ডক্টর অফ ফিলোসোফী (ডি.ফিল) ডিগ্রী লাভ করেন। তিনি আমেরিকান বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটিতে হারবাল বিষয়ের উপর “এম ফিল” করেন। তিনি ১৯৭৭-৭৮ সালে বাংলাদেশের ১৮টি হোমিও কলেজ ছাত্র সংসদের সমন্বয়ে গঠিত জাতীয় পর্যায়ে হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল কলেজ ছাত্র সংসদের সভাপতি নির্বাচিত হন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে হোমিওপ্যাথিক ডিগ্রী কলেজ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে তিনি একজন অন্যতম পুরোধা। ডাঃ আলমগীর মতি শুধু একজন চিকিৎসক ও গবেষকই নন, তিনি একজন সফল লেখকও বটে। পেশাগত জীবনে এসে তাঁর চিন্তা ও গবেষণার মাধ্যমে রচনা করেন চিকিৎসা শাস্ত্রের উপর বেশ কয়েকটি অমূল্য গ্রন্থ। তাঁর রচিত অন্যান্য গ্রন্থসমূহের মধ্যে বিশ্বনবী (সাঃ) এর চিকিৎসা বিধান, নিরোগ থাকার উপায়, সুস্থ থাকার সোনালী উপায়, হারবাল পদ্ধতিতে শতায়ু লাভের উপায় অন্যতম। তিনি তার কর্মদক্ষতা ও কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ ওয়ার্ল্ড কোয়ালিটি কমিটমেন্ট এ্যাওয়ার্ড-২০০৬, দি ইন্টারন্যাশনাল এ্যাওয়ার্ড ফর এক্সিলেন্স ইন প্রোডাক্টস এন্ড সার্ভিস-২০০৭, দি ডায়মন্ড আই এ্যাওয়ার্ড ফর কোয়ালিটি কমিটমেন্ট এন্ড এক্সিলেন্স-২০০৭ সহ ১৫টি আন্তর্জাতিক সম্মাননা পুরষ্কার এবং অসংখ্য জাতীয় পুরষ্কারে ভূষিত হন। এই নশ্বর পৃথিবীতে তাঁর মতো মানুষ বার বার ফিরে আসুক এ প্রত্যাশা আমাদের সবার।