তিনি গল্পের ফেরিওয়ালা। গল্প বলতেই স্বাচ্ছন্দবোধ করেন। বলার ধরনটিই যেন রূপ দেন তার লেখায়। তাই তিনি গল্প যতটা না লিখেন, বলেন যেন তারও বেশি। সঙ্গত কারণেই তার আছে গল্প বলার আলাদা ভঙ্গি। আছে পাঠককে গল্পের মাঝে ধরে রাখার অসাধারণ দক্ষতা। ‘যে গল্পের নাম নেই’- গ্রন্থভূক্ত গল্পগুলোতে আছে পিতৃপরিচয়হীন এক বালকের প্রতি হঠাৎ জেগে ওঠা এক অপরিসীম পিতৃত্ববোধ, আছে সৎ পিতার প্রতি সৎকণ্যার দৈহিক আকর্ষণ নিয়ে সন্দেহ, অবিবাহিত গৃহপরিচারিকার গর্ভে আসা অবৈধ শিশুর পিতৃপরিচয় রহস্য, আছে বিশ্ববিখ্যাত এক অসহায় মিথ্যুক, দেহকে রেখে বাদল মিয়ার আত্মার চলে যাওয়া, ডিভোর্সী মাকে বিয়ে দিতে মেয়ের উঠে পড়ে লাগা, ভুল আসামীর সাজাভোগ, আছে প্রফেসর স্বামীর লাশ ঘরে রেখেই নির্বিকার স্ত্রীর কফি পান আর আছে সমান্তরাল পৃথিবীর কল্পনায় মগ্ন এক নারী। সর্বোপরি পঙ্গু বোরহানের পশ্চাদ্দেশে পাওয়া বাতাসের কারণ উদঘাটিত হয়, দ্বিতীয় স্বামীকে নিয়ে সংসার করা স্বামীর সন্দেহ দূর হয় তার অন্তিম প্রয়াণে, মিথ্যাবাদি নিজের জালে ধরা পড়ে নিজেই, দেহের মায়ায় বাদল মিয়ার আত্মাটি আবার ফিরে আসে, সর্বোপরি মানুষের বিভৎসতা দেখে মানসিক অশান্তিতে ভুগতে থাকা তাসকিনা হক কল্পনা করে এমন এক সমান্তরাল পৃথিবীর, যেখানে মানুষের মাংস ঝুলিয়ে রাখা হয় দোকানে দোকানে, আর অন্য প্রাণিরা আনন্দচিত্তে মানুষের মাংস ভক্ষণ করে।