প্রথম ফ্ল্যাপের লেখাঃ অভাব কবলিত ভারতীয় উপমহাদেশের এক অঞ্চলের মানুষ অন্য অঞ্চল কিংবা অন্য কোনো প্রদেশে যে সময় যাওয়ার কোনো বিধি নিষেধ ছিল না তখন পূর্ববঙ্গের দুটি পরিবার আসাম চলে গিয়েছিল সুখের সন্ধানে। যাওয়ার সময় দাদা দাদির কাছে রেখে যেতে বাধ্য হয়েছিল দুই বছরের অসুস্থ ছেলে মাহমুদকে। এরপর সাতচল্লিশে দেশ ভাগ হওয়ার ফলে আর যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি পরিবার দুটির। দুইদেশের বিভিন্ন আন্দোলন, দাঙ্গা, পাকিস্তানিদের বাঙালির মাতৃভাষা কেড়ে নেওয়ার ষড়যন্ত্র, অতঃপর দীর্ঘ নয়মাস যুদ্ধের পর বাংলাদেশের স্বাধীনতা। পঁয়তাল্লিশ সনে রেখে যাওয়া অসুস্থ সেই ছেলেটি বড় হয়ে একাত্তর সনে যুদ্ধের সময় মাকে খোঁজতে গিয়ে মায়ের আঁচলের নিচে থেকে ফিরে আসে মাকে না চেনার কারণে। দীর্ঘ চার বছর পর্যন্ত মাকে খুঁজে না পেয়ে দেশে ফিরে এসে দেখে দাদা-দাদি দুজনই পরপারে পাড়ি জমিয়েছেন। জীবন হতে চলে গেছে স্ত্রী। সব হারানো একজন মানুষ মাহমুদ ও তার জননীর দুঃখ কষ্টগুলো নির্বাক তাকিয়ে দেখেছে দেশমাতা। এসব দুঃখ কষ্ট যারাই অবলোকন করেছেন তারাই হয়েছেন যেমন অবাক তেমনি নির্বাক ছিল জননী জন্মভূমি। অপরিচিত মাহমুদ মায়ের আঁচল ছেড়ে ফিরে আসে আর জননী নির্বাক চেয়ে চেয়ে দেখে নাড়ি ছেড়া ধনের ফিরে যাওয়া অথচ কিছুই বলতে পারে না। আর এই নির্বাক জননীকে নিয়ে এবারের লেখা। আশাকরি লেখাটি সবার মনেই রেখাপাত করবে।