কয়েদী ৩৪৫,br গুয়ান্তানামোর ডায়েরি,br ১১ বছরের নির্মম বন্দী জীবন,br জাস্ট ফাইভ মিনিটসbr b“কয়েদী ৩৪৫ : গুয়ান্তানামোতে ছয় বছর” -বইয়ের কিছু কথা/b ২০০১ সাল। আফগানিস্তানে আমেরিকা জোট আক্রমন শুরু করেছে। স্বাভাবিক ভাবেই সাংবাদিকদের কাজ হলো এতো বড় ঘটনা বিশ্ববাসীকে জানিয়ে দেওয়া। সামি আলহায ছিলেন বহুল পরিচিত গণমাধ্যম আলজাজিরা মিডিয়া নেটওয়ার্কের ফটোজার্নালিস্ট। অফিস থেকে আফগানিস্তানের সংবাদ কভার করতে পাঠিয়ে দেওয়া হলো সামি আলহাযকে। কিন্তু পাক সীমান্তে আটকে গেলেন তিনি। নানা নাটকীয়তার পরে অবশেষে সামিকে তুলে (কিংবা বিক্রি করে) দেওয়া হলো মার্কিন বাহিনীর কাছে। অকথ্য নির্যাতনের মাধ্যমেই একজন সাংবাদিক সামি আলহাযকে স্বাগত জানালো মানবতাবাদী (!) মার্কিন সেনারা। এরপর একসময় পাঠিয়ে দেওয়া হলো কুখ্যাত গুয়ান্তানামো বে কারাগারে। অত্যাচারের স্টিম রোলার চালানো হলো। নূন্যতম মৌলিক অধিকারগুলো থেকে বঞ্চিত করা হলো। একে একে জীবন থেকে অন্যায়ভাবে কেড়ে নিলো ছয় ছয়টি বসন্ত। অতঃপর বলা হলো, “আমরা সত্যিই দুঃখিত, তোমার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ নেই” br সামি আলহায একজন অকুতোভয় কয়েদী। তাকে আমেরিকা বন্দি করেছিল ঠিকই কিন্তু তার মনকে বন্দী করার সক্ষমতা ছিল না কারো। সামিকে বন্দি করেছিল ঠিকই কিন্তু হার মানাতে পারেনি। “কয়েদী ৩৪৫” শুধু একটি বই নয় এটি একটি জীবন্ত ইতিহাস। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সযত্নে লুকিয়ে রাখা এক মিথ্যার মুখোশ উন্মোচন। সামির আইনজীবির ভাষায় গুয়ান্তানামো সম্পর্কে সবচেয়ে নিখাদ বর্ণনা এই বইটি। সামির সাহস পথ দেখাবে আগামী প্রজন্মকে। সামির লেখনি শক্তি যোগাবে লাখো সাংবাদিককে নির্ভীক হতে। bগুয়ান্তানামোর ডায়েরি বইয়ের কিছু কথা /bbr প্রকাশিত হলো আমেরিকার গুয়ান্তানামো কারাগারের অজানা অধ্যায়!!! গুয়ান্তানামো কারাগার! আমেরিকার ভয়ঙ্করতম এক জেলখানা! অসংখ্য মুসলিম বন্দীর নির্যাতনের রাজসাক্ষী এ জিন্দানখানা! br টুইন টাওয়ার ধ্বংসের পর প্রতিশোধ গ্রহণের উন্মত্ততায় আমেরিকা আফগান, পাকিস্তান, আরবসহ সারা বিশ্ব থেকে অসংখ্য মুসলিমকে শুধু সন্দেহের বশবর্তী হয়ে গ্রেফতার করে আনা হয় এই গুয়ান্তানামো কারাগারে। তথ্য আদায়ের নামে তাদের ওপর চালানো হয় ভয়াবহ নির্যাতন। বিনা বিচারে অন্ধকার প্রকোষ্ঠে বন্দী করে রাখা হয় দিনের পর দিন, বছরের পর বছর।br এ গ্রন্থের লেখক হোসাইন আবদুল কাদির তেমনই এক হতভাগ্য নির্দোষ মুসলিম। শহিদ ড. আবদুল্লাহ আজজামের ভতিজা হওয়ায় বিনা দোষে এবং বিনা বিচারে তাঁকে গুয়ান্তানামো কারাগারে বন্দী করে রাখা হয় প্রায় আড়াই বছর। কারাগারে তাঁর ওপর চালানো হয় অকথ্য নির্যাতন। আড়াই বছর পর কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে পৃথিবীর মানুষকে জানান গুয়ান্তানামো কারাগারের ভয়ঙ্কর সব কাহিনি। এ গ্রন্থ সেই বন্দীর আত্মকথা। br ইতোমধ্যে বইটি আরববিশ্বে বিপুল সাড়া ফেলেছে। পশ্চিমা দুনিয়াতেও এ বই নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনার ঝড়। নাজমুস সাকিব অনূদিত বাংলাভাষী পাঠকের জন্য এই প্রথম নবপ্রকাশ কর্তৃক প্রকাশিত হলো গুয়ান্তানামো কারাগারের অজানা অধ্যায়। brbr b"১১ বছরের নির্মম বন্দী জীবন" বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা:br/b ২০০২ সালের গােধরা ট্রেনের মর্মান্তিক দুর্ঘটনা এবং তারপর সংঘটিত নির্বিচারে মুসলিম গণহত্যার পরিপ্রেক্ষিতে গুজরাটের মুসলমানদেরকে দ্বিমুখী নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। একদিকে মুসলমানদের কচুকাটা করা হয়েছে। তাদের ধন-সম্পদ লুণ্ঠন করা হয়েছে। তাদেরকে বাস্তুচ্যুত করা হয়েছে। অন্যদিকে তাদেরকেই ওই অন্যায়ের আসামী বানিয়ে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানাে হয়েছে।... এই দ্বিতীয় জুলুমের নেতৃত্ব দিয়েছে আহমেদাবাদ ক্রাইম বেঞ্চ ... ১৯৯৭ সালে শিক্ষা সমাপন করার পর থেকে আমি নিজেকে জাতির সেবায় সম্পৃক্ত রাখার চেষ্টা করেছি। এই জনসেবাই ছিল আমার অপরাধ। এ কারণেই ১৭ আগস্ট ২০০৩ সালে একটি সম্পূর্ণ মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে ক্রাইম বেঞ্চ প্রথমে আমাকে গুম করে। এরপর থেকে আমার ওপর শুরু হয় পাশবিক নির্যাতনের ভয়াবহ স্টিমরােলার। যার সংক্ষিপ্ত বিবরণ বক্ষ্যমান গ্রন্থে উঠে এসেছে। এ বইটি শুধু আমার কাহিনি বা আমার-ই আত্মজীবনী নয়; এর প্রতিটি শব্দ ও প্রতিটি ঘটনা প্রত্যেক ওই নিপীড়িত ও নির্যাতিত মানুষের রক্তস্নাত জীবনীর প্রতিবিম্ব-যারা বিভিন্ন মিথ্যা মামলায় বছরের পর বছর কারাগারের লৌহ কপাটের ওপাশে কেঁদে বেড়াচ্ছে। নিজের জুলুমের কাহিনি বর্ণনা করে জনগণের সহমর্মিতা হাসিল করতে আমি বইটি লিখিনি। পুলিশের প্রতি জনগণের আস্থা নষ্ট করা আমার উদ্দেশ্য নয়। আল্লাহর শপথ! কোনাে পুলিশের প্রতি আমার কোনাে ব্যক্তিগত বিদ্বেষ নেই। এ কারণেই আমি বইটিতে যেভাবে কয়েকজন দুর্নীতিপরায়ণ পুলিশ অফিসারের নির্মম অত্যাচারের কথা বর্ণনা করেছি, তদ্রপ সাচ্চা পুলিশ সদস্যদের প্রতি আমার আন্তরিক শ্রদ্ধার কথাও পেশ করেছি।... একজন মানুষও যদি আইনের অপপ্রয়ােগ ও আইন প্রয়ােগকারী সংস্থার কিছু সদস্যের জুলুমের হাত থেকে রক্ষা পান, তাহলে আমি আমার শ্রম স্বার্থক বলে মনে করব এবং এই বইটি যে আল্লাহর কাছে কবুল হয়েছে। তার আলামত হিসেবে ধরে নেব।