"স্বপনকুমার : ২০টি গোয়েন্দা উপন্যাস -৪" বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা: শ্রীস্বপনকুমারের কুড়িটি উপন্যাসের সংকলন যখন কয়েক বছর আগে আমরা প্রথম প্রকাশ করতে শুরু করি তখন একটা আশঙ্কা ছিল, এতদিন যিনি পাঠকের কাছে অনুপস্থিত তাঁর উপন্যাস পাঠককে আজ নতুন করে আকর্ষণ করবে কিনা। কিন্তু এই ধরনের তিন-তিনটি সংকলন প্রকাশিত হবার পর আমরা নিঃসন্দেহ যে তার গােয়েন্দা দীপক চ্যাটার্জি এবং সহকারী রতনলাল এখন আর আজকের পাঠকের কাছেও অপরিচিত নয়। বস্তুত এর আগের তিনটি সংকলন নিয়ে পাঠকদের মধ্যে যেরকম কাড়াকাড়ি পড়ে গিয়েছিল এবং পাঠকদের এই বই নিয়ে এত উৎসাহ আমরা লক্ষ করেছি যে এবার এই চতুর্থ খণ্ড প্রকাশ না করেও কোনাে উপায় নেই বলেই আমাদের মনে হয়েছে। আসলে সেরা গল্পলেখক যখন গােয়েন্দা কাহিনির ছক কষেন, অনেক চিন্তা করে সমস্যার জট তৈরি করেন এবং শেষে নিপুণ হাতে তা ছাড়ান, মুগ্ধ বিস্ময়ে সেই সঙ্গে এগিয়ে চলা ছাড়া পাঠকের আর গত্যন্তর থাকে । আরাে একটা কথা, উপন্যাসগুলি ছিল আকারে ছােট, তাই এক-একটি উপন্যাস পড়ে শেষ করতে সময়ও বেশি লাগে না। আজ এই ব্যস্ততার দিনে এরকম উপন্যাসই বেশি উপযােগী। লেখকের এই উপন্যাসগুলি দীর্ঘদিন আগে আমাদের প্রকাশনা থেকে নিয়মিত প্রকাশিত হত। সে সময়ে এর কী আকর্ষণ ছিল তার সাক্ষী আজও কিছু প্রবীণ পাঠক নিশ্চয়ই আছেন। আমরা নিঃসন্দেহ গল্প চয়নের সেই জাদু এবং পাঠককে সম্মােহিত করার মন্ত্র এখনও হারিয়ে যায়নি। নতুন কালের পাঠক পুরােনাে এই লেখককে আগের মতােই বরণ করে নেবেন। শ্রীস্বপনকুমার একদা বাংলা গােয়েন্দা কাহিনির পাঠকদের কাছে অত্যন্ত পরিচিত নাম হলেও মানুষটির পরিচয় অনেকটা অন্ধকারেই থেকে গিয়েছে। সম্ভবত তাঁর এই জনপ্রিয় নামটি ছদ্মনাম, অর্থাৎ প্রকৃত নাম নয়। প্রকৃত নাম কী, তার শিক্ষাজীবন ও কর্মজীবন কীরকম ছিল, তার জন্মস্থান ও নিবাস ইত্যাদি সম্বন্ধে খুব স্পষ্ট করে কোনাে কথা নিঃসংশয়ে বলা সম্ভব নয়। ছ’ ফুটের ওপর লম্বা দীর্ঘদেহী এই মানুষটির প্রকৃত নাম এস. এন. পাণ্ডে হতে পারে বলে অনুমান করা হয়। সম্ভবত তিনি ডাক্তারি বিদ্যার ছাত্র ছিলেন, তবে এই শিক্ষাক্রম সম্পূর্ণ করেছিলেন কিনা সে কথা নিশ্চিত করে বলা যায় না। শ্রীস্বপনকুমার বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পেশা গ্রহণ করলেও মূলত লেখালেখির দ্বারাই জীবিকা নির্বাহ করতেন। লেখার ব্যাপারে তিনি এতই স্বচ্ছন্দ ছিলেন যে এর জন্য বিশেষ কোনাে আয়ােজনও তার প্রয়ােজন ছিল না। পার্ক, রেস্তোরাঁ, মিষ্টির দোকান—বহু স্থানেই তাকে নিবিষ্ট মনে লিখতে দেখা গিয়েছে। বাজপাখি সিরিজ এবং ‘বিশ্বচক্র সিরিজ’ তার গােয়েন্দা। কাহিনির দুটি জনপ্রিয় সিরিজ। এগুলির মধ্যে প্রবালপুরী’, ‘হরতনের নওলা’, ‘সােনার হরিণ’, ‘ঘূর্ণি হাওয়া’, ‘নিশিমালঞ্চ’, ‘নীল পাথরের চোখ’, ‘বাজপাখির মারণ মহােৎসব’ ইত্যাদি উল্লেখযােগ্য।
দেব সাহিত্য কুটীর বাংলা সাহিত্যে অন্যতম প্রথম ও প্রধান প্রকাশনা সংস্থা৷ এই সংস্থার প্রতিষ্ঠা কাল ১৮৬০৷ দেব সাহিত্য কুটীর প্রকাশিত অভিধান এবং ধর্মগ্রন্থ প্রথম থেকেই সবজ্যিনপ্রিয়৷ এছাড়া শিশু ও কিশোর পাঠ্য নানা ধরনের বই, ইংরেজি ক্লাসিক্সের অনুবাদ এবং শারদীয়া বার্ষিকী প্রকাশে দেব সাহিত্য কুটীর অন্যতম প্রধান পথিকৃৎ৷ অধুনা রড়দের এবং ছোটদের জন্য নানা ধরনের গল্প সংকলন, উপন্যাস, প্রবন্ধ, ভ্রমণ কাহিনি এবং কমিকসও প্রকাশ করে চলেছে এই সংস্থা৷ এই সঙ্গে রয়েছে ছোটদের জন্য অসাধারণ একটি মাসিক পত্রিকা শুকতারা যা ৭০ রৎসরেও সগৌরবে এগিয়ে চলেছে৷ আর ৫৮ বছর ধরে রড়দের মনোরঞ্জন করে চলেছে মাসিক নবকল্লোল পত্রিকা৷ ণ্ডণে মানে বাংলা প্রকাশনা শিল্পে দেব সাহিত্য কুটীরইঁ এখনও এক এবং অদ্বিভীয়৷