বিখ্যাত ১৪ জন ব্যক্তিদের জীবনীগ্রন্থের কালেকশন ( ১০ টি বইয়ের রকমারি কালেকশন ) (হার্ডকভার)
আইজ্যাক নিউটন, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক, আলবার্ট আইনস্টাইন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম, বেগম রোকেয়া, জসীম উদ্দীন, মুহম্মদ শহীদুল্লাহ, পাঁচজন ভাষা শহিদের কথা
"জীবনী গ্রন্থ জ্ঞানতাপস ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহ" কবইয়ের সংক্ষিপ্ত কথা: ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ ছিলেন উপমহাদেশের সর্বশ্রেষ্ঠ ভাষাবিদ, ভাষাবিজ্ঞানী, গবেষক ও শিক্ষাবিদ। ভাষা ও ভাষাতত্তে ছিল তাঁর অগাধ পাণ্ডিত্য। ১৮৮৫ সালের ১০ জুলাই পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগণা জেলার বশিরহাট মহকুমার পেয়ারা গ্রামের তাঁর জন্ম। পিতার নাম মফিজউদ্দিন আহমদ। মাতার নাম হুরুন্নেসা। শহীদুল্লাহ নামটি তাঁর মা পছন্দ করে রেখেছিলেন। গ্রামের পাঠশালাতেই মুহম্মদ শহীদুল্লাহর শিক্ষাজীবন শুরু হয়। পাঠশালার পড়া শেষ করে তিনি হাওড়া জেলা স্কুলে ভর্তি হন। বাল্যকাল থেকেই তাঁর ভাষা শেখার আগ্রহ জন্মে। স্কুল জীবনেই তিনি আরবি, ফার্সি, উর্দু, হিন্দি এবং উড়িয়া ভাষা পড়তে শিখেছিলেন। হাওড়া জেলা স্কুলের শিক্ষক আচার্য হরিনাথ দে ছিলেন একজন খ্যাতনামা ভাষাবিদ। তাঁর সংস্পর্শে এসেই শহীদুল্লাহ ভাষা শেখায় অনুপ্রাণিত হন। হাওড়া জেলা স্কুল থেকে ১৯০৪ সনে তিনি কৃতিত্বের সাথে সংস্কৃতসহ এন্ট্রান্স পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। এরপর কলকাতায় এসে ভর্তি হন প্রেসিডেন্সী কলেজে এবং ১৯০৬ সালে এখান থেকে এফএ পাস করেন। ১৯০৮-০৯ সালে তিনি যশোর জিলা স্কুলে শিক্ষকতা করেন। পরে মুহম্মদ শহীদুল্লাহ কলকাতা সিটি কলেজ থেকে সংস্কৃতি বিষয়ে অনার্স নিয়ে বিএ পাস করেন। বাঙালি মুসলিম ছেলেদের মধ্যে তিনিই প্রথম সংস্কৃতি নিয়ে অনার্স পাসের কৃতিত্ব অর্জন করেন। এরপর তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য স্যার আশুতোষ মুখার্জীর অনুরোধে মুহম্মদ শহীদুল্লাহ তুলনামূলক ভাষাতত্ত¡ নিয়ে পড়াশোনা করেন এবং এম এ ডিগ্রি লাভ করেন (১৯১২)। এ সময় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম ভাষাতত্ত¡ বিভাগ খোলা হয়। বাঙলা কলেজ প্রতিষ্ঠায় তার অবদান উলেখযোদ্য। তিনি মোট একুশটি ভাষা জানতেন। ১৯৬৯ সালের ১৩ জুলাই ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ ঢাকায় পরলোক গমন করেন।
"জীবনীগ্রন্থ পল্লীকবি জসীম উদ্দীন" বইয়ের সংক্ষিপ্ত কথা: ১৯০৩ সালের ১ জানুয়ারি জসীম উদ্দীনের জন্ম নানাবাড়িতে, ফরিদপুর জেলার তাম্বুলখানা গ্রামে। তাঁর পৈতৃক ভিটা তাম্বুলখানার পাশের গ্রাম গোবিন্দপুর। এই গোবিন্দপুরেই কবির বাল্যকাল ও কৈশোর অতিবাহিত হয়েছে। কুমার নদীর তীরে এই গোবিন্দপুর গ্রাম। এই কুমার নদ বা নদী কবির ভাষায় মরা গাঙ। এই মরা গাঙে তিনি অতিবাহিত করেছেন তাঁর ছেলেবেলার অনেকটা সময়। এই গোবিন্দপুরেই কবি জসীম উদ্দীনের তিন পুরুষের ভিটা। জানা যায় কবির পিতা, পিতামহ ওই অঞ্চলের প্রভাবশালী লোক ছিলেন। গ্রামীণ সমাজের রাজনীতি ও ধর্মীয় ব্যাপারে এলাকায় তাঁদের পরিবার দীর্ঘকাল আধিপত্য করেছে। ফরিদপুর জেলা শহর থেকে একটু দূরে তাম্বুলখানা গ্রাম। সেই তাম্বুলখানায় বর্তমানে আর কবির মামাদের কোনো উত্তরাধিকার নেই। এই গ্রামে কবি জসীম উদ্দীনের নামে সমপ্রতি একটি স্কুল প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। কবির পিতার নাম আনসার উদ্দিন মোল্লা। তিনি ছিলেন স্কুল শিক্ষক। মৌলবী আনসার উদ্দিন নামেও তিনি পরিচিত ছিলেন। কবির মায়ের নাম আমিনা খাতুন ওরফে রাঙাছুট। কবির প্রকৃত নাম মোহাম্মদ জসীম উদ্দীন মোল্লা। কিন্তু বংশীয় পদবী মোল্লা তিনি তাঁর নামের সাথে লেখেন নি। তাঁর নামের বানানেও ব্যতিক্রম আছে, তিনি উদ্দিন না লিখে লিখেছেন উদ্দীন। ১৯৪৩ সালে মহসীন উদ্দীনের মেয়ে দশম শ্রেণির ছাত্রী মমতাজ-এর সাথে বিয়ে সম্পন্ন হয় কবির। তিনি ১৩ মার্চ ১৯৭৬ সনের ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর শেষ ইচ্চা অনুসারে তাঁকে ফরিদপুর জেলার গোবিন্দপুর গ্রামে তাঁর দাদীর কবরের পাশে দাফন করা হয়।
"জীবনীগ্রন্থ জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম" বইয়ের সংক্ষিপ্ত কথা: ১৮৯৯ সালের ২৪ মে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার আসানসোল মহকুমার চুরুলিয়া গ্রামের জন্মগ্রহণ করেন কাজী নজরুল ইসলাম। পিতামহ কাজী আমিন উল্লাহর পুত্র কাজী ফকির আহমদের দ্বিতীয় স্ত্রী জাহেদা খাতুনের ষষ্ঠ সন্তান তিনি। তাঁর বাবা ফকির আহমদ ছিলেন স্থানীয় মসজিদের ইমাম এবং মাযারের খাদেম। নজরুলের তিন ভাইয়ের মধ্যে কনিষ্ঠ কাজী আলী হোসেন এবং দুই বোনের মধ্যে সবার বড় কাজী সাহেবজান ও কনিষ্ঠ উম্মে কুলসুম। কাজী নজরুল ইসলামের ডাক নাম ছিল ‘দুখু মিয়া’। নজরুল গ্রামের স্থানীয় মসজিদের মুয়াজ্জিনের কাজ করতেন। মক্তবে কুরআন, ইসলাম ধর্ম, দর্শন এবং ইসলামী ধর্মতত্ত অধ্যয়ন শুরু করেন। ১৯০৮ সালে তাঁর পিতার মৃত্যু হয়, তখন তার বয়স মাত্র নয় বছর। পিতার মৃত্যুর পর পারিবারিক অভাব-অনাটনের কারণে তাঁর শিক্ষাজীন বাধাগ্রস্ত হয় এবং মাত্র দশ বছর বয়সে জীবিকা অর্জনের জন্য কাজে নামতে হয় তাঁকে। এ সময় নজরুল মক্তব থেকে নিম্ন মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে উক্ত মক্তবেই শিক্ষকতা শুরু করেন। একই সাথে হাজি পালোয়ানের কবরের সেবক এবং মসজিদের মুয়াযযিন হিসেবে কাজ শুরু করেন। সিব কাজের মাধ্যমে তিনি অল্প বয়সেই ইসলামের মৌলিক আচার-অনুষ্ঠানের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে পরিচিত হবার সুযোগ পান যা পরবর্তীকালে তার সাহিত্যকর্মে বিপুলভাবে প্রভাব পড়ে। তিনিই বাংলা সাহিত্যে ইসলামী চেতনার চর্চা শুরু করেন। মধ্যবয়সের তিনি পিক্স ডিজিজে আক্রান্ত হন। এর ফলে মধ্য বয়সের তাঁকে সাহিত্যকর্ম থেকে বিচ্ছিন্ন থাকতে হয়। একই সাথে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন। বাংলাদেশ সরকারের আমন্ত্রণে ১৯৭২ সালে তিনি সপরিবারে ঢাকায় চলে আসেন। এ সময় তাঁকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব প্রদান করা হয়। এখানেই তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
"জীবনীগ্রন্থ বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর" বইয়ের সংক্ষিপ্ত কথা: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তাঁর পিতা ছিলেন ব্রাহ্ম ধর্মশুরু দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৮১৭-১৯০৫) এবং মাতা ছিলেন সারদাসুন্দরী দেবী (১৮২৬-১৮৭৫)। রবীন্দ্রনাথ ছিলেন পিতামাতার চতুর্দশ সন্তান। জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবার ছিল ব্রাহ্ম আদিধর্ম মতবাদের প্রবক্তা। রবীন্দ্রনাথের পূর্বপুরুষেরা খুলনা জেলার রূপসা উপজেলা পিটাভোগে বাস করতেন। ১৮৭৫ সালে মাত্র চৌদ্দ বছর বয়সে রবীন্দ্রনাথের মাতৃবিয়োগ ঘটে। পিতা দেবেন্দ্রনাথ দেশভ্রমণের নেশায় বছরের অধিকাংশ সময় কলকাতার বাইরে অতিবাহিত করতেন। তাই ধনাঢ্য পরিবারের সন্তান হয়েও রবীন্দ্রনাথের ছেলেবেলা কেটেছিল ভৃত্যদের অনুশাসনে। ১৯১৩ সালে ‘গীতাঞ্জলি’ কাব্যগ্রন্থের ইংরেজি অনুবাদের জন্য তিনি সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। ১৮৭৪ সালে ‘তত্তএবাধিনী’ পত্রিকায় তাঁর প্রথম রচনা “অভিলাষ” কবিতটি প্রকাশিত হয়। ১৮৭৮ সালে মাত্র সতেরো বছর বয়সে রবীন্দ্রনাথ প্রথমবার ইংল্যান্ডে যান। ১৮৮৩ সালে মৃণালিনী দেবীর সঙ্গে তাঁর বিবাহ হয়। ১৮৯০ সাল থেকে রবীন্দ্রনাথ পূর্ববঙ্গের শিলাইদহের জমিদারি এস্টেটে বসবাস শুরু করেন। ১৯০১ সালে তিনি পশ্চিমবঙ্গের শান্তিনিকেতনে ব্রাহ্মচার্যশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন ক্ষং সেখানেই পাকাপাকিভাবে বসবাস শুরু করেন। ১৯০৫ সালে তিনি বঙ্গভঙ্গ-বিরোধী আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন। ১৯১৫ সালে ব্রিটিশ সরকার তাঁকে ‘নাইট’ উপাধিতে ভূীষত করেন। কিন্তু ১৯১৯ সালে জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে তিনি সেই উপাধি ত্যাগ করেন। ১৯২১ সালে গ্রামোন্নয়নের জন্য তিনি শ্রীনিকেতন নামে একটি সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯২৩ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্বভারতী প্রতিষ্ঠিত হয়। দীর্ঘজীবনের তিনি বহুবার বিদেশ ভ্রমণ করেন এবং সমগ্র বিশ্ব বিশ্বভ্রাতৃত্বের বাণী প্রচার করেন। ১৯৪১ সালে দীর্ঘ রোগভোগের পর কলকাতার পৈতৃক বাসভবনেই তাঁর মৃত্যু হয়।
"ভাষা আন্দোলনের পাঁচজন শহিদের জীবনকথা" বইয়ের সংক্ষিপ্ত কথা: ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের মর্মন্তুদ ও গৌরবোজ্জ্বল স্মৃতিবিজড়িত একটি দিন ২১ ফেব্রুয়ারী। এটি শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসাবেও পরিচিতি লাভ করেছে। ১৯৫২ সালের এই দিনে (৮ ফাল্গুন, ১৩৫৮) বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা সরার দাবিতে আন্দোলনরত ছাত্রদের ওপর পুলিশের গুলিবর্ষণে কয়েকজব তরুণ শহিদ হন। তাই এ দিনটি শহিদ দিবস হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে। উলেখযোগ্য শহিদরা হলেন, (১) আবদুল জব্বা, (২) আবদুস সালাম, (৩) আবুল বরকত, (৪) রফিকউদ্দিন আহমদ ও (৫) শহিদ শফিউর রহমান। বীর শহিদদের আত্মজীবনী সংক্ষিপ্ত আকারে বর্ণনা করা হয়েছে। অজানা কিছু তথ্য এ জীবনী সঙ্কলনে সংযোগ করা হয়েছে। এই শহিদ যোদ্ধারা মিশে আছেন বাংলার মাটিতে, মিশে আছেন বাংলা ভাষার প্রতিটি বর্ণে।
Title
বিখ্যাত ১৪ জন ব্যক্তিদের জীবনীগ্রন্থের কালেকশন ( ১০ টি বইয়ের রকমারি কালেকশন )