‘বিশ্বাস’—সঠিক হোক কিংবা ভ্রান্ত, সে এক মহা শক্তি। বিশ্বাসের পারস্পরিক সংঘাতের ফলে সভ্যতার শুরু থেকে এ যাবৎ যে পরিমাণ রক্তবন্যা বয়ে গেছে, ভূমিদখল কিংবা শক্তির উন্মত্ত মহড়া প্রদর্শনে বয়নি তার সিকিভাগও। বিশ্বাস প্রধানত তিন প্রকার : (তাওহিদ ‘একত্ববাদ’, শিরক ‘বহুত্ববাদ’, লা-দিনিয়াত ‘নাস্তিক্যবাদ’) হলেও নাস্তিক্যবাদের স্বল্পতা-হেতু কার্যত দু-প্রকার : এক. তাওহিদ, দুই. কুফর। অামাদের ধর্ম ইসলাম ধারণ করেছে তাওহিদ; আর পৃথিবীর তাবৎ ধর্ম ও নাস্তিক্যবাদ গ্রহণ করেছে কুফর। তাই ইসলামের শুরু থেকেই চলে আসছে তাওহিদ ও কুফরের সংঘাত। ইসলামের অালোর যুগ ও ইউরোপের অন্ধকার যুগ তথা মধ্যযুগ থেকে নিয়ে আধুনিক যুগের সপ্তদশ শতাব্দী পর্যন্ত সে সংঘাত চলে আসছিল জাতিনির্মূল ও দেশদখলের আকারে; কিন্তু দেখা গেছে সংখ্যা ও জাগতিক শক্তির প্রাচুর্যের পরও তাওহিদের মোকাবিলায় কুফর বিজয়ী হতে পারেনি কখনো। তাই অষ্টাদশ শতাব্দীর প্রারম্ভ থেকেই কুফর তাওহিদের মোকাবিলায় গ্রহণ করেছে ভিন্ন পথ। সরাসরি সংঘাতের পথ এড়িয়ে চালিয়ে যাচ্ছে মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ। প্রগতি ও আধুনিকতার নামে ছড়িয়ে দিচ্ছে তাওহিদ- বিরোধী ভাইরাস। প্রতিটি আবিষ্কারকে বানাচ্ছে তাওহিদ-বিরোধী অস্ত্র। প্রমোট করে চলছে তাওহিদবাদীদের মধ্যকার ভ্রান্ত কিছু ফিরকার। মুক্ত প্রাণের হে সন্ধানী গ্রন্থে উঠে এসেছে সেই চিরন্তন সংঘাতের গভীরের আলোচনা।