"উলু পিশাচের আত্মা" বইয়ের পেছনের কভারে লেখা:শিলা ইজিচেয়ার থেকে ওঠার চেষ্টা করল। কিন্তু পারল না। তীব্র একটা বাতাসের ঝাপটা তাকে আবার ইজিচেয়ারের ওপর ফেলে দিলাে। আর তখনই তার চোখের সামনে ঘূণি বাতাসের মধ্যে ভেসে উঠল ভয়ংকর উলু পিশাচের আত্মার অবয়ব। শিলা কিছু বলা আগেই শূকরমুখী উলু পিশাচের আত্মা পৈশাচিক একটা হাসি দিয়ে বলল, “শিলা আমি তােকে চাই, এখন থেকে তুই আমার, শুধুই আমার, অন্য কারাে না। ‘শিলা প্রতিবাদ করলে উলু পিশাচ তার পৈশাচিক হাসিটা আরও বিস্তৃত করে বলল, “আমি একটা সন্তান চাই, বেঁচে থাকার জন্য আমার একটা সন্তান খুবই প্রয়ােজন। শিলা তুই অসাধারণ সুন্দরী, সন্তান জন্মদানের জন্য তােকে আমার পছন্দ হয়েছে। আমি চাই, তুই-ই হবি আমার সন্তানের মা। কথাটা শােনামাত্র ভয় আর আতঙ্কে শিলার সমস্ত শরীর ঠান্ডা হয়ে এলাে। নিজেকে রক্ষার জন্য শরীরের সমস্ত শক্তিতে সে চিল্কার করে উঠতে চাইল। কিন্তু পারল না, তার গলা দিয়ে কোনাে শব্দ বের হলাে না। এরই মধ্যে উলু পিশাচ ধীরে ধীরে তার শরীরে প্রবেশ করতে শুরু করেছে। অসহনীয় তীব্র যন্ত্রণায় শিলার চোখ দিয়ে গলগল করে পানি বেরিয়ে আসতে লাগল। শিলা আপ্রাণ চেষ্টা করছে নিজেকে ছাড়িয়ে নিতে । কিন্তু পেরে উঠছে না ভয়ংকর পিশাচটার সাথে। পিশাচটা ধীরে ধীরে যত নিষ্ঠুর হচ্ছে, শিলা শারীরিক আর মানসিকভাবে ততই দুর্বল হয়ে পড়েছে। এভাবেই ভয়ংকর উলু পিশাচের আত্মাটা ভর করতে শুরু করল শিলার শরীরে। শেষ পর্যন্ত কী ঘটেছিল শিলার জীবনে? শিলা কি পেরেছিল ভয়ংকর উলু পিশাচের আত্মার নজর থেকে নিজেকে রক্ষা করতে? ফিরে যেতে পেরেছিল তার সাজানাে-গােছানাে পূর্বের সুন্দর সুখময় ভালােবাসার সেই জীবনে।
লেখক মোশতাক আহমেদ এর জন্ম ১৯৭৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর, ফরিদপুর জেলায়। পেশায় একজন চাকুরিজীবী হওয়া সত্ত্বেও লেখালেখির প্রতি তাঁর আগ্রহ প্রচুর। এ পর্যন্ত সায়েন্স ফিকশন নিয়েই সবচেয়ে বেশি লিখেছেন। বাংলা সায়েন্স ফিকশন জগতে তার পোক্ত একটি অবস্থান সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়াও মোশতাক আহমেদ এর বই সমূহ ভৌতিক, প্যারাসাইকোলজি, মুক্তিযুদ্ধ, কিশোর ক্ল্যাসিক, ভ্রমণ ইত্যাদি জঁনরাতে বিভক্ত। যেকোনো একটি বিষয়ে সীমাবদ্ধ না থেকে তিনি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে লিখতেই পছন্দ করেন। মোশতাক আহমেদ এর বই সমগ্র সংখ্যায় পঞ্চাশ পেরিয়েছে। তাঁর প্রথম প্রকাশিত বই ছিল ‘জকি’। এটি একটি জীবনধর্মী উপন্যাস। ২০০৫ সালে এটি প্রকাশিত হয়। মোশতাক আহমেদ পড়াশোনা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। প্রথমে ফার্মেসি বিভাগে, পরে আইবিএতে। পরবর্তী সময়ে ইংল্যান্ডের লেস্টার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অপরাধবিজ্ঞান থেকে মাস্টার্স ডিগ্রী অর্জন করেন। পড়াশোনার খাতিরেই হোক বা কর্মজীবনের তাগিদেই হোক, ব্যক্তিগত জীবনে তিনি অনেক ভ্রমণ করেছেন। সেসব ভ্রমণকাহিনীর আশ্রয়ে তাই ক্রমেই সমৃদ্ধ হয়েছে তাঁর লেখা ভ্রমণকাহিনীগুলোও। তাঁর সৃজনশীল কর্মকাণ্ড শুধু লেখালেখিতেই গণ্ডিবদ্ধ নয়। ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ রাজারবাগের পুলিশ ও পাকিস্তানী হানাদারবাহিনীর মধ্যে একটি যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল। সে ঘটনার ওপর ভিত্তি করে মোশতাক আহমেদ ‘মুক্তিযুদ্ধের প্রথম প্রতিরোধ’ নামে একটি তথ্যচিত্র নির্মাণ করেন। এটি ২০১৩ সালের মার্চ মাসে মুক্তি পায়। তাঁর পুরস্কারের ঝুলিতে এ পর্যন্ত রয়েছে ২০১৩ সালের কালি ও কলম সাহিত্য পুরস্কার, ২০১৪ সালের ছোটদের মেলা সাহিত্য পুরস্কার, ২০১৪ সালের কৃষ্ণকলি সাহিত্য পুরস্কার, ২০১৫ সালের সিটি আনন্দ আলো পুরস্কার এবং সর্বশেষ সংযুক্তি হিসেবে সায়েন্স ফিকশন বিষয়ে বিশেষ অবদান রাখার জন্য বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার-২০১৭।