“দেবী" বইটির প্রথম দিকের কিছু কথাঃ মাঝরাতের দিকে রানুর ঘুম ভেঙে গেল। তার মনে হল ছাদে কে যেন হাঁটছে। সাধারণ মানুষের হাঁটা নয়, পা টেনেটেনে হাঁটা। সে ভয়ার্ত গলায় ডাকল, 'এই, এই।' আনিসের ঘুম ভাঙল না। বাইরে টিপটিপ করে বৃষ্টি পড়ছে। অল্প-অল্প বাতাস। বাতাসে জামগাছের পাতায় অদ্ভুত এক রকমের শব্দ উঠছে। রানু আবার ডাকল, এই, একটু ওঠ না। এই।। ‘কী হয়েছে? কে যেন ছাদে হাঁটছে। ‘কী যে বল! কে আবার ছাদে হাঁটবে? ঘুমাও তো। প্লীজ, একটু উঠে বস। আমার বড় ভয় লাগছে।' আনিস উঠে বসল। প্রবল বর্ষণ শুরু হল এই সময়। ঝমঝম করে বৃষ্টি। জানালার পর্দা বাতাসে পতপত করে উড়তে লাগল। রানু হঠাৎ দেখল, জানালার শিক ধরে খালি গায়ে একটি রোগামতো মানুষ দাঁড়িয়ে আছে। মানুষটির দু'টি হাতই অসম্ভব লম্বা। রানু ফিসফিস করে বলল, 'ওখানে কে? ‘কোথায় কে? ‘ঐ যে জানালায়। ‘আহ্, কী যে ঝামেলা কর! নারকেল গাছের ছায়া পড়েছে। ‘একটু বাতিটা জ্বালাও না। ‘রানু, তুমি ঘুমোও তো।' ‘হুই উইঘুরের হৃদয়ে’ বইটির শেষের কথাঃ - ঘটনাস্রোত আহমদ মুসাকে আবার নিয়ে এল হুই উইঘুরদের দেশে। মৈত্রী ও সমঝোতার অবস্থা ভেঙে পড়ায় উইঘুররা আবার সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছে। অবিশ্বাস ও হিংসার আগুন পোড়াচ্ছে সরকার ও উইঘুর দু’পক্ষকেই। হাইজ্যাক হওয়া একটা জাহাজে আহমদ মুসা এসে পৌছল চীন উপকূলের এক শহরে। ভয়ংকর সন্ত্রাসীরা বন্দী করল সান ইয়াত ঝুং ও ঝি ঝাও নামের চীনা দুই তরুণ-তরুণীকে। তাদের রক্ষা করতে গিয়ে আহমদ মুসাও বন্দী হলো। শীঘ্রই আহমদ মুসা জানল চীন জুড়ে ভয়ংকর শক্তিশালী সন্ত্রাসীরা চীনা এক রাজতন্ত্রের উত্তরসূরী এবং বাইরের সমর্থনপুষ্ট। আরও জানল চীনা সরকার ব্যবস্থা এবং হুই উইঘুর সকলেরই এরা শত্রু। এদের লক্ষ্য নৈরাজ্য সৃষ্টি করা। এরা একদিকে উইঘুরদের উস্কানী দিচ্ছে, অন্যদিকে সরকারকে উইঘুরদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করছে। আহমদ মুসা জড়িয়ে পড়ল ঘটনার সাথে। চীনা দুই তরুণ-তরুণীকে মৃত্যুর মুখ থেকে বাচিয়ে পালাল বন্দীখানা থেকে। এই তরুণটি চীনা কম্যুনিস্ট পার্টি ও দেশের প্রেসিডেন্টের ছেলে এবং তরুণীটি চীনা সেনাপ্রধানের মেয়ে। ...আহমদ মুসা প্রবেশ করল রাষ্ট্রীয় ঘটনা প্রবাহের মূল স্রোতে। শুরু হলো তার মিশন এই মিশনে লু ঝি ঝাও ও সান ইয়াত ঝুং প্রধান চরিত্র হয়ে দাড়াল কিভাবে? সন্ত্রাসী-ষড়যন্ত্রকারী কারা? বিদেশি শক্তিই বা কারা? কিভাবে হুই উইঘুরদের রক্ষার মিশন নিয়ে এগোচ্ছে আহমদ মুসা? কোন পরিণতির দিকে গড়াচ্ছে তার কঠিন মিশন? এসব প্রশ্নের জবাব নিয়ে এসেছে ‘সাইমুম ৬০ হুই উইঘুরের হৃদয়ে’। দ্য ভিঞ্চি কোড দু’হাজার বছরের পুরনো সত্যকে চিরতরে নির্মূল করার জন্যে একই দিনে চারজন বিশিষ্ট ব্যক্তিকে হত্যা করা হয়। সত্যটি জনাজানি হয়ে গেলে হাজার বছরের ইতিহাস লিখতে হবে নতুন ক’রে। সত্যটি লালন ক’রে আসছে একটি গুপ্ত সংঘ-সেই গুপ্ত সংঘের সদস্য ছিলেন আইজ্যাক নিউটন, ভিক্টর হুগো, বত্তিচেল্লি আর লিওনার্দো দা ভিঞ্চির মতো ব্যক্তি। ওদিকে উগ্র ক্যাথলিক সংগঠন ওপাস দাই সেই সত্যকে চিরতরে নির্মূল করার আগেই গুপ্তসংঘের গ্র্যান্ডমাস্টার তার ঘনিষ্ঠ একজনের কাছে হস্তান্তর ক’রে দেয় আর ঘটনাচক্রে এরকম একটি মারাত্মক মিশনে জড়িয়ে পড়ে হারভার্ডের সিম্বোলজিস্টের এক প্রফেসর। পাঠকের মনোজগত নাড়িয়ে দেবার ক্ষমতা রাখে বইটি। থ্রি এ এম এক ঘন্টা।ষাট মিনিট। তিন হাজার ছয়শ সেকেন্ড। সাধারণের জন্য যা খুবই সামান্য হেনরি বিনসের জন্য তাইই মহার্ঘ্য। কেননা চব্বিশ ঘন্টার মাঝে এতটুকু সময়ই তার জন্য বরাদ্দ। রাত ৩টা থেকে ৪ টা। বাকি সময় বিরল মেডিক্যাল কন্ডিশনে ভোগা হেনরির সময় কাটে ঘুমে। এই হেনরিই ঘটনাচক্রে পরে যান এক খুনের ঘটনায়। খুনের সাসপেক্ট স্বয়ং আমেরিকার প্রেসিডেন্ট। যে খুনের পরোক্ষ স্বাক্ষী ছিল হেনরি সেই খুনেরই আসামি হিসেবে পুলিশ তাকেই সন্দেহ করে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত হেনরিই তার বরাদ্দকৃত ১ ঘন্টা সময় দিয়েই খুনের তদন্ত করে-পড়ামাত্রই যা মনে হয় অবিশ্বাস্য! অরিজিন" বইয়ের সংক্ষিপ্ত কথা: ‘বিজ্ঞানের চেহারা চিরদিনের জন্যে পাল্টে দেবে’--এমন এক যুগান্তকারি ঘোষণার সাক্ষি হতে সিম্বোলজিস্ট রবার্ট ল্যাংডন স্পেনের বিলবাওয়ের অত্যাধুনিক গুগেনহাইম জাদুঘরে উপস্থিত হয়েছে। আর এই ঘোষণা দিতে যাচ্ছে তারই এক পুরনো ছাত্র, একচল্লিশ বছর বয়সি ধনকুবের, ফিউচারিস্ট এবং প্রযুক্তি দুনিয়ার প্রবাদপ্রতীম ব্যক্তিত্ব এডমন্ড কিয়ার্শ। তার আবিষ্কার এবং কিছু বক্তব্য আগেও আলোড়ন তুলেছে গোটা দুনিয়া জুড়ে । এমন কিছু উন্মোচন করতে যাচ্ছে সে যা কিনা উত্তর দেবে মানব অস্তিত্ববাদের দুটো প্রধান প্রশ্নের। কিন্তু অনুষ্ঠান শুরু হতেই ল্যাংডন বুঝতে পারে ভীষণ বিতর্কের জন্ম দিতে যাচ্ছে এডমন্ডের আবিষ্কার। এসময় হঠাৎ করেই ঘোলাটে হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। আবিষ্কারের কথাটা মুখেই থেকে যায় কিয়ার্শের। জাদুঘরের পরিচালক অ্যাম্ব্রা ভিদালের সাথে বিলবাও থেকে পালাতে বাধ্য হয় ল্যাংডন। বার্সেলোনার উদ্দেশ্যে পাড়ি জমায় তারা একটি গোপন, সংরক্ষিত পাসওয়াডের্র খোঁজে, যেটা কিনা তাদের সাহায্য করবে কিয়ার্শের আবিষ্কার উন্মোচনে। ধর্মিয় ইতিহাসের পথে ল্যাংডন এবং ভিদালের এই অভিযানে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় ভীষণ শক্তিশালী এক প্রতিপক্ষ, স্পেনের রাজসভা পর্যন্ত যার ক্ষমতা বিস্তৃত। এডমন্ড কিয়ার্শের আবিষ্কারকে কোনভাবেই প্রকাশ হতে দেবে না তারা। আধুনিক চিত্রকলা এবং কিছু গুপ্ত সংকেতের সহায়তায় ল্যাংডন কি পারবে এই আবিষ্কার উন্মোচন করতে? চরম সত্যের মুখোমুখি হতে? পাঠক, প্রফেসর ল্যাংডনের সাথে ইতিহাসের গলি-ঘুপচিতে ছুটে বেড়াতে আপনি কি প্রস্তুত আছেন?
Title
২০১৮ সালের রকমারি বেস্ট সেলার রহস্য, গোয়েন্দা, ভৌতিক, থ্রিলার ও অ্যাডভেঞ্চার ৫টি বইয়ের কালেকশন
বাংলা সাহিত্যের এক কিংবদন্তী হুমায়ূন আহমেদ। বিংশ শতাব্দীর বাঙালি লেখকদের মধ্যে তিনি অন্যতম স্থান দখল করে আছেন। একাধারে ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার ও নাট্যকার এ মানুষটিকে বলা হয় বাংলা সায়েন্স ফিকশনের পথিকৃৎ। নাটক ও চলচ্চিত্র পরিচালক হিসেবেও তিনি বেশ সমাদৃত। বাদ যায়নি গীতিকার কিংবা চিত্রশিল্পীর পরিচয়ও। সৃজনশীলতার প্রতিটি শাখায় তাঁর সমান বিচরণ ছিল। অর্জন করেছেন সর্বোচ্চ সফলতা এবং তুমুল জনপ্রিয়তা। স্বাধীনতা পরবর্তী বাঙালি জাতিকে হুমায়ুন আহমেদ উপহার দিয়েছেন তাঁর অসামান্য বই, নাটক এবং চলচ্চিত্র। চলচ্চিত্রের বদৌলতে মানুষকে করেছেন হলমুখী, তৈরি করে গেছেন বিশাল পাঠকশ্রেণীও। তাঁর নির্মিত প্রথম চলচ্চিত্র ‘আগুনের পরশমনি’ দেখতে দর্শকের ঢল নামে। এছাড়া শ্যামল ছায়া, শ্রাবণ মেঘের দিন, দুই দুয়ারী, চন্দ্রকথা, ঘেটুপুত্র কমলা প্রভৃতি চলচ্চিত্র সুধীজনের প্রশংসা পেয়েছে। অনন্য কীর্তি হিসেবে আছে তাঁর নাটকগুলো। এইসব দিনরাত্র, বহুব্রীহি, আজ রবিবার, কোথাও কেউ নেই, অয়োময়ো আজও নিন্দিত দর্শকমনে। হিমু, মিসির আলি, শুভ্রর মতো চরিত্রের জনক তিনি। রচনা করেছেন নন্দিত নরকে, শঙ্খনীল কারাগার, জোছনা ও জননীর গল্পের মতো সব মাস্টারপিস। শিশুতোষ গ্রন্থ, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক রচনা, বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী মিলিয়ে হুমায়ূন আহমেদ এর বই সমূহ এর পাঠক সারাবিশ্বে ছড়িয়ে আছে। হুমায়ূন আহমেদ এর বই সমগ্র পৃথিবীর নানা ভাষায় অনূদিতও হয়েছে। সৃজনশীল কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে অর্জন করেছেন বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৮১), একুশে পদক (১৯৯৪), হুমায়ুন কাদির স্মৃতি পুরস্কার (১৯৯০), লেখক শিবির পুরস্কার (১৯৭৩), মাইকেল মধুসূধন দত্ত পুরস্কার (১৯৮৭), জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার (১৯৯৩ ও ১৯৯৪), বাচসাস পুরস্কার (১৯৮৮), শিশু একাডেমি পুরস্কার, জয়নুল আবেদীন স্বর্ণপদকসহ নানা সম্মাননা। হুমায়ূন আহমেদ এর বই, চলচ্চিত্র এবং অন্যান্য রচনা দেশের বাইরেও মূল্যায়িত হয়েছে৷ ১৯৪৮ সালের ১৩ই নভেম্বর, তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে, নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলায় কুতুবপুরে পীরবংশে জন্মগ্রহণ করেন হুমায়ূন আহমেদ। কোলন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘদিন চিকিৎসাধীন থাকার পর নিউ ইয়র্কের ম্যানহাটনের বেলভ্যু হাসপাতালে তিনি ইহলোক ত্যাগ করেন। গাজীপুরে তাঁর প্রিয় নুহাশ-পল্লীতে তাঁকে সমাহিত করা হয়।