রক্ত মাংস অস্থি চর্ম এবং অনুভূতির যৌগে তৈরি মানব কাঠামাে অটুট থাকার পরও ভেতরে ভেতরে ভূমিকম্পের ধ্বংসযজ্ঞ চলতে পারে, চলে এবং ক্ষরণের উপত্যকায় দাঁড়িয়ে থেকে যে উপভােগও করা যায়, প্রথম উপভােগ করলেন পারভেজ আখতার। না, তিনি একা উপভােগ করছেন না-তার সঙ্গে পুরাে ধ্বংসতূপে দাঁড়িয়ে আছেন প্রায় শ'দেড়েক অতিথি। আছেন পারভেজ আখতারের ছােট মেয়ে তৃনাও। তৃনা কনে সেজেছে। মেয়েটির গায়ের রঙ উজ্জ্বল শ্যামলা। কনে সাজার পর নিজের মেয়েকে তিনি বিস্ময়ের সঙ্গে দেখছেন। অপূর্ব, অসাধারণ সৌন্দর্যের পূর্ব রেখা মেয়েটিকে বর্ণাঢ্য করে তুলেছে। আস্তে আস্তে কনের দিকে এগিয়ে আসছে বর- জাফর ইকবাল। জাফর ইকবালের পিছনে ওর বাবা ইকবাল হাসান, মা এবং আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব। বর এবং কনে মুখােমুখি।
তৃনা সবাইকে অভিবাদন জানিয়ে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে। মুখে মেঘ মেদুর হাসি-হাসিতে আনত লজ্জার সঙ্গে ভালােবাসর সৌরভ জড়ানাে ।' মেহমানেরা অপেক্ষা করছেন বরের অভিবাদনের জন্য। গাড়ি গেটের বাইরে প্রস্তুত, অপেক্ষমাণ। সামান্য আনুষ্ঠানিকতা শেষে বর-কনে গাড়িতে উঠবে। অথচ বর জাফর ইকবাল স্থির দাঁড়িয়ে, অবিশ্বাস্য কঠিন চোখে দেখছে তৃনাকে। হঠাৎ নান্দনিক উপভােগ্য আবহাওয়াটা থমকে দাঁড়িয়ে যায়, মনে। হচ্ছে বিরাট হলঘরের অক্সিজেন নিঃশেষ। প্রত্যেকটি মানুষ বিকল্প অক্সিজেন সাপ্লাইয়ের পথটা খুঁজছে। পারভেজ আখতার পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য এগিয়ে এলেন-জাফরহাত তুলে বাঁধা দিলেন জাফর ইকবাল-আমি কি আপনাকে, আপনারদেরকে অসংখ্যবার বলি নি-নতুন বৌকে কোনাে অলংকার পরাবেন না! একজন সাবেক এম.পি. রাজনৈতিক নেতা, ভালাে বক্তা এবং অধ্যাপক পারভেজ আখতার নতুন জামাতার সামনে তােতলাতে আরম্ভ করলেন, না মানে, হয়েছে। কি-আমি বােঝাবার চেষ্টা করেছি কিন্তু কেউ আমার কথাটা রাখলেন না-তৃনা,
জন্ম ১৯৬৮ সালে পহেলা মে [সার্টিফিকেট অনুসারে] বৃহত্তর বরিশালের পিরোজপুর জেলার ভানডারিয়া উপজেলার বোথলা গ্রামে, প্রমত্ত কচানদীর পারে। শৈশব থেকে লেখালেখির শুরু।